অবিভাবক রূপে এক অনাথ যুবতীর বিয়ে দিয়ে নজীর গড়লো পুলিশ

0


HnExpress বিশ্বজিৎ মন্ডল, মালদা এক অনাথ যুবতীর বিয়ে দিয়ে বাবা-মায়ের ভূমিকা পালন করল পুলিশ আধিকারিকরা। বাবা-মা হীন প্রেমিকার সঙ্গে এলাকার এক যুবকের দীর্ঘদিন ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। সহবাস হয়েছে একাধিকবার। কিন্তু প্রেমিকা এবার বিয়ের জন্য চাপ দিতেই বেঁকে বসে প্রেমিক যুবক। প্রেমিকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ জানায় প্রেমিকা।

তারপরই পুলিশের প্রচেষ্টায় রীতিমতো ডিজে বাজিয়ে ওই পিতা-মাতা হীন যুবতীর সাথে বিয়ে দেওয়া হয় অভিযুক্ত যুবকের। সামনেই ভ্যালেন্টাইন্স ডে, মানে ভালোবাসা দিবস তার আগে এমনই এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার কুমেদপুর গ্রামে। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ এর উদ্যোগে রীতিমতো ডিজে বাজিয়ে কুমেদপুর পুলিশ আউটপোস্ট প্রাঙ্গণে অনাথ যুবতীর সাথে ওই যুবকের বিয়ে দিল পুলিশ কর্তারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোনা দেবী সিং এর (২৩) বাড়ি কাঠিয়া জেলায়। অন্যদিকে শঙ্কর সাহানী (২৫) নামে অভিযুক্ত যুবকের বাড়ি দ্বারভাঙ্গা জেলাতে। দুজনে কুমেদপুর এলাকার মাখনার একটি ফড়িতে কাজ করতো। সোনা দেবী সিং নামে যুবতীটি দীর্ঘদিন আগে তাঁর বাবা মাকে হারিয়েছে। ওই মাখনার ফড়িতে কাজ করতে করতেই ওই যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সুযোগে ওই যুবক তরুণীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বেশ কয়েকবার সহবাস করে বলে অভিযোগ।

কিন্তু ওই যুবতী শঙ্কর সাহানীকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকলে অভিযুক্ত যুবক সোনা দেবীকে বিয়ে করতে অস্বীকার করে। আর এরপরই সোনা দেবী সিং কুমেদপুর ফাড়িতে পুলিশ আধিকারিকদের দ্বারস্থ হয়। সেখানে যুবতীর অভিযোগের ভিত্তিতে ওই যুবককে থানায় ধরে নিয়ে আসা হয়। তারপরই হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয় কুমার দাস ও অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকদের উদ্যোগে থানা প্রাঙ্গণে গড়ে তোলা হয় বিয়ের মন্ডপ।

আনা হয় ডিজে ব্যান্ড পার্টিও। তারপরে রীতিমতো মালাবদল করে থানা প্রাঙ্গণে আধিকারিকদের সহায়তায় ওই অনাথ যুবতীর বিয়ে দেওয়া হয় অভিযুক্ত যুবকের সঙ্গে। এরপরে স্থানীয় একটি মন্দিরে নিয়ে গিয়ে হিন্দু মতে ভগবানকে সাক্ষী করে বিয়ে দেওয়া হয়। আর এই।নজিরবিহীন ঘটনার ফলে পুলিশের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।



হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয় কুমার দাস জানান, যুবতী থানায় এসেছিল কাঁদতে কাঁদতে। যুবতীটির বাবা-মা কেউ নেই, পুরো ঘটনা শোনার পর যুবককে উঠিয়ে নিয়ে আসা হয় থানায়। এই পুরো ঘটনার কথা স্বীকারও করে নেয় অভিযুক্ত যুবক শঙ্কর সাহানী। তারপরেই থানার উদ্যোগে অনাথ যুবতীর বিয়ের ব্যবস্থা করা হয় পুলিশের তরফে।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল মতিন বলেন যে, ছেলেটি এবং মেয়েটি একসাথেই থাকত। তাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। কিন্তু আগে বিয়ে করতে রাজি হলেও পরে ছেলেটি বিয়ে করছিল না। মেয়েটির মা, বাবা নেই। পুলিশ যেভাবে সমস্যার সমাধান করল তা এক কথায় প্রশংসনীয়। স্থানীয় বাসিন্দা সামিউল আক্তার বলেন, “ছেলেটি মেয়েটির সঙ্গে প্রেম করতো। কিন্তু ছেলেটি বিয়ে করতে চাইছিল না।

তাই মেয়েটি পুলিশকে গিয়ে সবটা জানায়। পুলিশ সব ঘটনার তদন্ত করে তাদের বিয়ে দেয়। আইনের রক্ষক পুলিশকে সাধারণত সবাই ভয় করেই চলে। কিন্তু এক্ষেত্রে দেখা গেল পুলিশকে এক অন্য ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে। অভিভাবক রূপ পুলিশের। একটি সম্পর্ককে পরিণত রূপ দিল পুলিশ নিজে দাঁড়িয়ে। স্বভাবত তাই খুশি এলাকাবাসী।

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply