ধর্ষিতা হয়েও ধর্ষকের সাথেই মারধোর খেয়ে গোটা গ্রামে ঘুরলেন নাবালিকা, অভিযোগের আঙুল গ্রামের মুরুব্বিদের দিকে
HnExpress নিজস্ব প্রতিনিধি, মধ্যপ্রদেশ ঃ একজনের ১৬ আরেক জনের ২১ বছর বয়স। আইনের ধারা অনুযায়ী ১৮ বছরের আগে প্রাপ্তবয়স্ক হয় না অর্থাৎ শরীরের সাথে বুদ্ধির বিকাশ পরিপূর্ণ হয় না। ফলতঃ ব্যাক্তির ঠিক বেঠিকের জ্ঞান অনেকটাই কম থাকে। মধ্যপ্রদেশের ভোপালের এক আদিবাসী গ্রামে ২১ বছরের ধর্ষকের সঙ্গে ১৬ বছরের ধর্ষিতা কিশোরীকে একই দড়িতে বেঁধে গোটা গ্রামে ঘোরানো হলো। গোটা ঘটনাটির ভিডিও হয় এবং তা ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়াতে।
গ্রামটি আদিবাসীদের হলেও শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত নয়, কারন তারাও স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে। এছাড়াও তারা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতেও বেশ উপযুক্ত। সেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই ভিডিওটি ভাইরাল হয়। বর্তমান যুগে সোশ্যাল মিডিয়াতে ঝড়ের গতিতে সব রকমের প্রচার হয় যেমন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি, নাবালিকার বিবাহ, সিনেমা, ধর্ষণের খবর প্রভৃতি। অর্থাৎ আদিবাসী গ্রামটির আদিবাসী মুরুব্বিরা সম্পূর্ণ অশিক্ষিত তা কিন্তু বলা যায় না।
গ্রামের মুরুব্বিগন এটা ভালো ভাবে জানতো যে নাবালিকার সাথে ওই রকম ব্যাবহার আইনের চোখে নিতান্তই ঘৃণ্য অপরাধ। এটা খারাপ কাজ জানা সত্তেও ধর্ষকের সঙ্গে সেই ১৬ বছরের ধর্ষিতা নাবালিকা কিশোরীকে একই দড়িতে বেঁধে গোটা গ্রাম ঘোরায় তাঁরা। পরে অবশ্য পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে নির্যাতিতাকে উদ্ধার করে এবং ঘটনায় ধর্ষক সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। সূত্রের খবরে জানা গেছে যে, কিশোরী আগেই ধর্ষণের শিকার হয় এবং এর সাথে নির্যাতিতার নিজস্ব পরিবারও জড়িত।
অভিযোগ, ধর্ষণের শিকার হওয়া সত্তেও সেই ধর্ষকের সাথে ১৬ বছরের ধর্ষিতা নাবালিকাকে মারধোরও করে গ্রামবাসী। ভারতীয় সমাজ ব্যাবস্থাতে পুরুষের থেকেও বেশী আঙুল তোলা হয় মেয়েদের দিকে। একটি ধর্ষক পুরুষের থেকে বেশী আঙুল ওঠে সেই ধর্ষিতার দিকে। কিংবা একটি বিবাহ বিছিন্ন পুরুষের থেকে বিবাহ বিচ্ছিন্ন নারীকে পুনরায় বিবাহের পিড়িতে বসতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়, কারন তারা নারী। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায় আশেপাশে থাকা কয়েকজন ‘ভারত মাতা কী জয়’ স্লোগানও দিচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে পুলিশ আধিকারিক দিলীপ সিং বিলওয়াল জানিয়েছেন, ঘটনায় দুটি পৃথক মামলা রুজু করা হয়েছে। তার মধ্যে একটি ২১ বছর বয়সি ধর্ষকের বিরুদ্ধে, অন্যটি কিশোরীর পরিবারের অভিযুক্ত ব্যক্তি ও যে সব গ্রামবাসী বা মুরব্বিদের গ্রাম ঘোরাতে দেখা গিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। ধর্ষক যুবকের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।