মধ্যমগ্রাম স্টেশন থেকে উদ্ধার প্রাক্তন সেনাকর্মীর মৃতদেহ, চাঞ্চল্য এলাকা জুড়ে
মধ্যমগ্রাম স্টেশনের কাছে চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হলেন এক প্রাক্তন সেনাকর্মী। রেললাইন পারের থেকে উদ্ধার তাঁর মৃতদেহ। অন্যদিকে, সেনাকর্মীর ফ্ল্যাটে পাওয়া গেলো স্ত্রী ও কন্যার গলা কাটা দেহ।
HnExpress ইন্দ্রানী সেনগুপ্ত, দমদম : শুক্রুবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ এক মর্মান্তিক দৃশ্যের সাক্ষী হলো উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) এলাকাবাসী। এদিন মধ্যমগ্রামের স্টেশনের কাছে রেললাইন থেকে উদ্ধার করা হলো এক প্রাক্তন সেনাকর্মীর চিন্নভিন্ন মৃতদেহ। জানা গেছে, দমদম পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বহুতলার ফার্স্ট ফ্লোরের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। হটাৎই নিজের মেয়ে-বৌকে খুন করে আত্মঘাতী হলেন তিনি।
কিন্তু কেন? স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, বহুদিন ধরেই বাড়িতে স্ত্রীর সাথে ঝামেলা চলছে। প্রায়ই চলত তুমুল ঝগড়াও। তবে কি হতাশায় এমনতর সিদ্ধান্ত, নাকি এর পিছনে লুকিয়ে আছে অন্য কোনো কারণ? প্রাক্তন সেনাকর্মী গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় (৪৮) শুক্রুবার সকালে মধ্যমগ্রাম স্টেশনের (Madhyamgram Station) কাছে চলন্ত ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন।
তদন্তে নেমে মধ্যমগ্রাম থানার পুলিশ প্রসাশন প্রথমেই সেনাকর্মীর পরিবারের সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনো ভাবেই যোগাযোগ না হওয়ায় তাঁরা বাধ্য হয়ে দমদম থানায় (Dumdum Police Station) বিষয়টি জানায়। থানা থেকে তড়িঘড়ি খোঁজ খবর চালিয়ে পৌঁছে যায় দমদম পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের সেই বহুতল ফ্ল্যাটের ফার্স্ট ফ্লোরে।
কিন্তু সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখেন, গলার নলি কাটা অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছেন গৌতম বাবুর স্ত্রী দেবিকা বন্দ্যোপাধ্যায় (৪৪) ও কন্যা দিশা বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯)। রক্তে ভেসে যাচ্ছে ঘর। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মানসিক অবসাদের জেরেই গৌতম বাবু স্ত্রী-কন্যাকে ধারালো কোনো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে নিজেও আত্মহত্যা (suicide) করেন।
এলাকার বাসিন্দারা জানান প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে চলত তুমুল ঝগড়া, অশান্তি। মৃত্যুর আগেও নিজেদের মধ্যে কথাকাটি হয় বলে জানান তাঁরা। তাঁরা আরও বলেন, বেশকিছু দিন ধরেই মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন প্রাক্তন সেনাকর্মী। অথচ আশ্চর্যের কথা এমন এক নৃশংস খুনের সময় সামান্য কোনো আওয়াজ বা চিৎকারও শুনতে পায়নি আশেপাশের ফ্ল্যাটের কোনো বাসিন্দাই।
রেললাইনের ধারে চিন্নভিন্ন অবস্থায় পাওয়া যায় গৌতম বাবুর দেহ। পরে ৩টি মরদেহই উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। আর অন্যদিকে, যোগাযোগের চেষ্টা চলছে মৃতদের পরিবার-পরিজনের সাথে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে দমদম থানা। চলছে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ। এই খুনের (Murdered) ঘটনার পিছনে অন্য কোনো কারণ লুকিয়ে আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।