বিশ্ব সম্প্রীতি আলোক সম্মান ২০১৯ এর অনন্য আনন্দসন্ধ্যা
HnExpress অশোক সেনগুপ্ত, মধ্যমগ্রাম ঃ বিশ্ব সম্প্রীতি আলোক সম্মান ২০১৯ — এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান উপহার দিল এক অনন্য আনন্দসন্ধ্যা। ১৫ই নভেম্বর মধ্যমগ্রামের নজরুল শতবার্ষিকী মঞ্চে অনুষ্ঠিত হল এইচ এন এক্সপ্রেস এর এই অনুষ্ঠানটি।
উত্তর ২৪ পরগণা জেলার অন্তর্গত বারাসাত -মধ্যমগ্রামের কালীপুজোর খ্যাতি দেশব্যাপী। ওই অঞ্চলের ২২টি নির্বাচিত পুজোর মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেরাদের স্বীকৃতি জানাতেই শুক্রবার এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। গত ২৮শে অক্টোবরের দীপাবলি উপলক্ষে পুজো পরিক্রমার তিন বিচারককেও এদিন উদ্যোক্তারা সম্মানিত করেন “শক্তি সম্মাননা”র মাধ্যমে। অধম এই সাংবাদিক ছাড়াও আরও বাকি দু’জন হলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অ্যাথলিট প্রবীর সরকার এবং ফ্যাশন ডিজাইনার প্রমিত মুখার্জি। শক্তি সম্মাননা অর্পণ করে সম্মানিত করা হয় বারাসাত প্রেসক্লাবের সভাপতি বিপ্রতীপ দে মহাশয়কে।
এদিনের অনুষ্ঠানে সর্বপ্রথম ‘গৌরবরত্ন সম্মাননা’ জ্ঞাপন করা হয় চ্যানেলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চ্যানেল হেড ইন্দ্রাণীর মা সুমিতা সেনগুপ্তকে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মধ্যমগ্রাম পুরসভার পুর প্রধান পারিষদ অরবিন্দ মিত্র, তাঁকেও “গৌরব রত্ন সম্মান” জ্ঞাপন করা হয়। তিনি উদ্যোক্তাদের এই পরিক্রমাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ভবিষ্যতেও প্রয়োজনে তাঁদের সব রকম পুর-সহযোগিতা করা হবে। তাঁকে সম্বর্ধনা জানালেন উদ্যোক্তা চ্যানেলের কর্ণধার ও এডিটর ইন্দ্রানী সেনগুপ্ত।
এদিন অনুষ্ঠানের শুরুতেই ভাবগম্ভীর পরিবেশে প্রার্থনা সহযোগে প্রভু যীশুর প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও খ্রিষ্টীয়সঙ্গীত পরিবেশন করেন ইন্দ্রানী ও তাঁর মা চ্যানেলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুমিতা সেনগুপ্ত ও অন্যান্যরা। অন্যদিকে দক্ষ সংযোজকের ভূমিকার জয় সরকার ও মমতা ধর সরকার উপস্থিত সমবেতদের জানান, পুজো পরিক্রমার দিন ছিল ভগিনী নিবেদিতার জন্মদিন। আর আজও একটা শুভ দিন।
১৯১৩ সালের আজকের দিনেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সেই নোবেল জয়ের খবর পাওয়া গিয়ে ছিল। ঐতিহাসিক ওই ঘটনাকে স্মরণে রেখে এদিন শিল্পী মনীন্দ্র বিশ্বাস পরিবেশন করেন ‘তুমি সন্ধ্যার মেঘমালা’। এর আগে সমবেত কন্ঠে পরিবেশিত হয় ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে‘ এবং ‘আহা কী আনন্দ আকাশে বাতাসে‘।
সুমাল্য মৈত্র ও সোমা মুখোপাধ্যায়ের স্বরচিত কবিতা, অষ্টম শ্রেণীর রাজন্য সাহার অসাধারণ নৃত্য পরিবেশন, এককালের শিক্ষিকা ঝর্ণা মন্ডল এবং ডায়াটিসিয়ান মানসী চ্যাটার্জীকেও মঞ্চে “শক্তি সম্মাননা”র দ্বারা শ্রদ্ধাজ্ঞাপন— প্রভৃতির মাধ্যমে সার্থক হয়ে উঠেছিল আনন্দসন্ধ্যা। সঙ্গীত শিল্পী সুদীপ্তা নন্দী আর প্রযত্না করের পরিবেশনার নৈপুন্য ছিল বেশ নজরকাড়া।
এছাড়াও মিডিয়া পার্টনার বিবিপি নিউজ পোর্টালের এডিটর মাসুদুর রহমান এবং এসোসিয়েট পার্টনার ইভেন্ট ক্রাফটের কর্ণধার দেবরাজ দাস, শ্রীকে্র কর্ণধার কুমারেশ রায়, সিএমটির কর্ণধার নূপুর সাহা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মাসের সম্পাদক অনির্বাণ চৌধুরী — এই পাঁচজন ভিন্ন ভিন্ন কর্মসুত্রে লব্ধ কৃতিদেরকেও মঞ্চে “শক্তি সম্মাননা” দিয়ে সম্বর্ধনা জানানো হয়। ব্যাজ উত্তোরীয় পরিয়ে বরণ করে নেওয়া হয় চ্যানেলের নিউজ এডিটর দেবনাথ চক্রবর্তী, এডভাইজার কাম নিউজ রাইটার অমৃতা শিকদার (এডভোকেট), বিশিষ্ট শিক্ষক ও ফ্রিল্যান্স রিপোর্টার সাবির হোসেন হালদার প্রমুখ ব্যাক্তিবর্গকে।
এর মধ্যেই মঞ্চে পরিবেশিত একটি গানের খেই ধরে জয় মুন্সিয়ানার সঙ্গে আমাদের স্মরণ করিয়ে দেন বিশ্বখ্যাত গণিতবিদ বশিষ্ট নারায়ণ সিং, যাঁর কথা উঠলে চলে আসে আইনস্টাইন প্রসঙ্গ, যিনি মারা গেলেন। এবং শেষ মুহূর্তে অ্যাম্বুলেন্সও পাননি। তবে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার এক্ষেত্রে একটু ইতিবাচক ভূমিকা নিয়েছেন।
শেষে জানাই, বিশ্ব সম্প্রীতি আলোক সম্মান ২০১৯ —এ এবার স্বীকৃতিপ্রাপ্তদের মধ্যে ছিলেন ১) কে.এন.সি রেজিমেন্ট > সেরার সেরা বারাসাত, ২) শতদল > শ্রেষ্ঠ আলোকসজ্জা, যুগ্ম ৩) পুর্বাসা যুব পরিষদ > সেরার সেরা মধ্যমগ্রাম, ৪) নবোদয় সংঘ > শ্রেষ্ঠ প্রতিমা সৃজন, ৫) গঙ্গানগর রামকৃষ্ণ সংঘ > শ্রেষ্ঠ মন্ডপ সজ্জা, ৬) রামকৃষ্ণ পল্লী নেতাজী স্পোর্টিং ক্লাব > শ্রেষ্ঠ পরিবেশ পরিকল্পনা, ৭) পাল পাড়া উজ্জ্বল সংঘ > শ্রেষ্ঠ ভাবনা ও উপস্থাপনা, ৮) গঙ্গানগর যুবক সংঘ > শ্রেষ্ঠ সমাজ সচেতনতা, ৯) সন্ধানী > শ্রেষ্ঠ আলোকসজ্জা।
সমগ্র অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন জয় সরকার ও মমতা ধর সরকার।