ভক্তদের রশির টানে কয়েক শতাব্দীর প্রাচীন মৌড়ির রথ পাড়ি দেয় ৫০০ মিটার পথ
HnExpress সৌম্যজিৎ চক্রবর্তী, হাওড়া : বেশ কিছুদিন আগে থেকেই চলে ধোয়া-মোছা, রঙের পোঁচ। চরকায় তেল দেওয়া সম্পূর্ণ হলেই শুধু গড়ানোর অপেক্ষামাত্র। রথযাত্রায় বিকেলের মাহেন্দ্রক্ষণে রশিতে টান পড়ে মৌড়ির শতাব্দী প্রাচীন রথে। মহীয়াড়ির তৎকালীন জমিদার রমাকান্ত কুন্ডুচৌধুরীর বংশধররা একসময়ে পারিবারিক যে রথযাত্রার প্রচলন করেছিলেন আজ তা কিন্তু সর্বজনীন।
রথেরমেলা চলে সপ্তাহব্যাপী। মেলায় এলাকার আবালবৃদ্ধবনিতা ছাড়াও আসেন আশপাশের গ্রামবাসীরাও। জিলিপি-পাঁপড়ের পাশাপাশি হরেক কিসিমের পসরা সাজিয়ে বসে নানা দোকানী। বিভিন্ন প্রজাতির গাছ, রঙিন মাছ এই মেলার আরেকটি বিশেষ আকর্ষণ। মৌড়ির রথযাত্রায় জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার সঙ্গে কুন্ডুচৌধুরীদের কূলদেবতা লক্ষ্মী-জনার্দনও থাকেন রথে।
ধাতুর তৈরি ১২ ফুটের রথটি নির্দিষ্ট জগন্নাথদেবের জন্য, আর ধাতুরই গড়া আরেকটি ১৮ ফুটের রথে থাকেন কূলদেবতা লক্ষ্মী-জনার্দন। এলাকার প্রবীণরা জানান, আগে দুটি রথই কাঠের ছিল। ১৯৯২ সালে তা ধাতু নির্মিত হয়। জানা যায়, রথযাত্রার দিন সকালে মন্দির থেকে বিগ্রহ এনে ৯ বার প্রদক্ষিণ করা হয় রথে বিগ্রহ স্থাপনের আগে।
আর বিকেলে রথের রশিতে টান দেন মৌড়ির আপামর এলাকাবাসী। আগে দুটি রথেরই যাত্রাপথ ছিল হাওড়ার মৌড়ি রথতলা থেকে খটির বাজার পর্যন্ত প্রায় ৫০০ মিটার পথ। তবে পরবর্তীকালে তার একটির যাত্রাপথ কমে হয় মৌড়ি তালপুকুরধার পর্যন্ত।
রথের ধর্মানুষ্ঠান শেষে বিগ্রহ নিয়ে আসা হয় মন্দিরেই। সপ্তাহ ঘুরলেই উল্টোরথের দিন দুটি রথই আবার ফিরে আসে মৌড়ি রথতলায়। বছরের বাকি সময়টা তা রাখা থাকে এখানেই। তারপর শুরু হয় আবারও এক বছরের কাউন্টডাউন।