November 5, 2024

জন্মাষ্টমীতে কাঠামোয় মাটি দিয়ে ঢাকে কাঠি পড়ে মাকড়দহের নতুন বাড়ির পুজোয়

0
Advertisements


HnExpress সৌম্যজিৎ চক্রবর্তী, হাওড়া ঃ জন্মাষ্টমীতে মাটি পড়ে মাকড়দহের ঐতিহ্যবাহী ব্যানার্জি বাড়ির (নতুন বাড়ি) দেবীর কাঠামোয়। আর তার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু যায় এই পরিবারের ঐতিহ্যবাহী দূর্গাপুজোর তৎপরতা। জানা যায় যে, মাকড়দহের এই ব্যানার্জি পরিবারের দুর্গাপুজো প্রথমে হতো হুগলির বাগান্ডায়।

কিন্তু সেখানে এই পরিবারের থাকার অসুবিধা হওয়ায় বহু বছর আগে পূর্বদিকে গঙ্গা পাড়ে জায়গার খোঁজ করতে করতে সরস্বতী নদীর ধারে এসে উপস্থিত হন এই পরিবারের পূর্বপুরুষরা। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দারা এই ব্রাহ্মণ পরিবারকে তাঁদের গ্রামে থাকার অনুরোধ করেন। ব্রাহ্মণকে তীর ধনুক ছুঁড়তে অনুরোধ করেন গ্রামবাসীরা।



তীর যতদূর গিয়ে পড়ে ততটা জমি এই ব্রাহ্মণ পরিবারকে করবিহীনভাবে দেওয়া হয়। সেই সময় এই অঞ্চলের নাম ছিল নোয়া পাড়া বা ন পাড়া। পাড়াটি পূর্ব মুখে অবস্থানের জন্য পরবর্তীকালে তার নাম হয় পূর্বান্নপাড়া। এখানেই আজ মাকড়দহের ব্যানার্জি পরিবারের বাস। এই পরিবারের পূর্বপুরুষ জগদীশ বাচষ্পতির তিন সন্তানের পরিবারের তিন দুর্গা পুজোই শতাব্দী প্রাচীন।

বড় বাড়ি, মনসাতলা এবং নতুন বাড়ি। নতুন বাড়ির পুজো চালু করেন রামকৃষ্ণ বন্দোপাধ্যায়। আজও শতাব্দী প্রাচীন এই নতুন বাড়ির পুজোয় একই রীতি মেনে পুজো হয়ে চলেছে। এই পরিবারেরই কৃতী বংশধর উমেশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নতুন বাড়ির পুজোর বেশ কিছু বিশেষত্ব আছে বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্য বাংলা ব্যান্ড তেপান্তরের কর্ণধার অভিষেক (বাবি) ব্যানার্জি।



এই প্রতিমা ঠাকুর দালানেই তৈরি করা হয় এবং প্রতি বছর একই প্রতিমা হয়ে আসছে। এই বংশের কুলদেবতা হলেন অনন্তদেব (নারায়ণ শিলা), আর এই অনন্তদেব এতই প্রাচীন যে, এই “অনন্ত দেব”-এর প্রাচীনত্ব আজ অবধি কেউ বলতে পারেন নি। আগে সন্ধি পুজোর আগে কামান ফাটানো হতো।

এমনকি সন্ধি পুজোর পাঁঠা বলির (এখন সেটা বন্ধ করে নবমীর দিনে ফল বলি হয়) আগেও মোট দুবার কামান দাগা হতো। পুজোয় মাকে চার রকমের ভোগ দেওয়া হয়। সাদা ভোগ, খেচরান্ন, লুচি ভোগ ও ঘি ভাত। ১৬ উপাচারে দেবীর পুজো হয়ে আসছে। প্রতিপদ থেকে নবমী প্রতিদিন একরূপ চন্ডিপাঠ করা হয়।

মহাঅষ্টমীর প্রীতি, শুভেচ্ছা ও আন্তরিক অভিনন্দন।

শাক্তমতে দেবী আরাধনা করা হয় এখানে। নবমীর দিন পূজা, চন্ডীপাঠ, ফল বলিদান ও মনসা পুজোর শেষে হোম-যজ্ঞের আয়োজন করা হয়। কথিত আছে, “দেবী মনসার স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী এই ব্যানার্জি পরিবারের কারও কোনওদিন সর্প দংশনে মৃত্যু হবেনা।”

গ্রামের রীতি অনুযায়ী শোভাযাত্রা সহকারে দেবীকে ভাসান দেওয়া হয় দশমীর সন্ধ্যায় সরস্বতী নদীতে। এবং একাদশীর বিকেলে গ্রাম্য প্রথা অনুযায়ী যুগ যুগ ধরে গ্রামের সব দুর্গাপুজোর আয়োজক ও উদ্যোক্তারা সকলে মিলে পুজো দেন গ্রামের আরাধ্য দেবী মাকড়চন্ডীর মন্দিরে। সেখানেও ১৬ উপাচারে পুজোও করা হয়।

Advertisements

Leave a Reply