পরকীয়া সন্দেহে তিন সন্তানের জননীকে খুন করলো স্বামী

0


HnExpress নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়িতে : শিলিগুড়িতে ভয়াবহ খুনের ঘটনায় হতবাক নেটিজেনরা। স্ত্রীর পরকীয়া আছে এমন সন্দেহের বশে তাঁকে নৃশংসভাবে খুন করার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। আবার খুনের পর মৃত স্ত্রীকে টোটোয় করে হাসপাতালেও নিয়ে যায় স্বামী। এই ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়ির এনজেপি থানা এলাকার ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভক্তিনগর অঞ্চলে।

ঘটনার নৃশংসতায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় অভিযুক্ত সন্দীপ বৈশ্য দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর স্ত্রী সুপ্রিয়া বৈশ্যকে পরকীয়ায় মেতেছে সন্দেহ করছিল। এরই মধ্যে সুপ্রিয়া শাঁখা-সিঁদূর পরা বন্ধ করে দেওয়ায় সন্দেহ আরও জোরাল হয়। এমনকী স্ত্রী’র হাফপ্যান্ট পরে যখন তখন বাইরে বেরিয়ে যাওয়া নিয়েও স্বামীর ঘোরতর আপত্তি ছিল বলে জানা গেছে।

দীর্ঘদিন ধরে এই বিবাদ চলতে থাকে, অবশেষে পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ায় স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন করল যুবক, এমনটাই অভিযোগ। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালে পালিয়ে বিয়ে করেছিল সন্দীপ ও সুপ্রিয়া। এই দম্পতি আগে কোচবিহারের সিতাইতে থাকত।



কয়েক বছর আগে তাঁরা তিন সন্তানকে সহ ঘর ভাড়া নিয়ে পাকাপাকিভাবে শিলিগুড়িতে চলে আসে। সুপ্রিয়ার পরিবারের দাবি, বিয়ের কয়েক বছর পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেয়ের উপর অত্যাচার করত। এমনকী তাঁকে মারধর ও শারীরিক নিগ্রহও করা হত বলে দাবি তাঁদের। মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে আরও অভিযোগ করা হয়েছে যে, কোচবিহার থেকে শিলিগুড়ি চলে আসার পরেও সুপ্রিয়াকে মারধর করত তাঁর স্বামী।

এমনকী রাতে ঘুমনোর সময় বিছানায় ছুরি নিয়ে ঘুমতো সন্দীপ। সম্প্রতি সন্তানদের নিয়ে ভক্তিনগর এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে একাই থাকতে শুরু করেন মহিলা৷ স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মাঝে মধ্যেই তাঁর স্বামী সেখানে এসেও বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে স্ত্রীর সাথে বচসায় লিপ্ত হত। মৃতার পরিবারের দাবি, রবিবার ঘটনার দিন বিকেলেও সুপ্রিয়ার বাড়িতে যায় সন্দীপ।

সেখানেই তাঁকে কুপিয়ে খুন করা হয়। খুনের পর স্ত্রীয়ের রক্তাক্ত দেহ একটি টোটোতে উঠিয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায় অভিযুক্ত৷ ঘটনার খবর পেয়েই এলাকায় যায় এনজেপি থানার পুলিশ৷ অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷ তাঁকে সোমবার জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হবে বলে জানা গিয়েছে।

এই প্রসঙ্গে মৃতের দিদি সুজাতা সিংহ জানান, “বিয়ের পর থেকেই বোনকে মারধর করা হত। তাঁর স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রতিদিনই তাঁকে নিগ্রহ ও হেনস্থা করত৷ আমার বোনের কোথাও অন্য কোনও সম্পর্ক ছিল না৷ সম্ভবত অনেক দিন ধরেই খুনের পরিকল্পনা করছিল সন্দীপ৷ সে বিছানায় ছুরি নিয়েও ঘুমোতো৷ কিন্তু এইভাবে সত্যিই খুন করে ফেলবে ভাবতেও পারছি না৷

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply