September 8, 2024

আজও “বুট”পুজোর রেওয়াজ রয়েছে মৌড়ির কুন্ডুবাড়িতে

0
Advertisements


HnExpress সৌম্যজিৎ চক্রবর্তী, হাওড়া ঃ এ বাড়িতে বছরে দু’বার দুর্গাপুজো হয়ে থাকে। বসন্তে বাসন্তীর আরাধনা, আর শরতে অকালবোধন। কিন্তু কুন্ডুচৌধুরী বাড়িতে বাসন্তী পুজো আগে থেকে হলেও শরতের এ-ই ল অকালবোধনের প্রথা পরে শুরু হয়েছে। তবে দেখতে দেখতে সেটাও হয়ে গেল প্রায় ৩ শতকের কাছাকাছি।

জানা যায় যে, সে সময় কুন্ডু চৌধুরীদের জমিদারি ছিল হাওড়া জেলা সহ হুগলি, মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, বর্ধমান ও দুই ২৪ পরগনায়। প্রাচীনকালে জলপথে বাণিজ্য করতে যেতেন পরিবারের সদস্যরা। দুর্গম, বিপদসঙ্কুল নদীপথে নানা বিপদের আশঙ্কা রয়েই যেত। বাণিজ্যে যাওয়া পরিবারের সদস্যদের এর নৌকাগুলোকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করতেই কুন্ডুচৌধুরী বাড়িতে শরতে শুরু হয় এই দুর্গাপুজো।



আর আজও সেই পুজোতে নিয়ম মেনে দশমীতে হয় বোট পুজো। একে নৌকা উপযোগ অনুষ্ঠানও বলা হয়ে থাকে। আবার কেউ কেউ এটাকে “বুট” পুজোও বলে। নদীপথে বাণিজ্য কবেই বিলুপ্ত হয়েছে। কিন্তু সেই বোট পুজো বা বুট পুজোর রেওয়াজ রয়ে গেছে আজও। এমনিতে এই বাড়িতে সারাবছর ধরেই বিভিন্ন পুজো অর্চনা হয়।

সেসব পালনের জন্য প্রাচীনকাল থেকেই পরিবারের সদস্যদের দ্বারা রচিত ‘অর্পণ নামা’য় পুজোর বিভিন্ন নিয়মবিধি লেখা আছে। এই পরিবারের আরাধ্য দেবী কিন্তু মহিষাসুরমর্দিনী নয়, তিনি শান্তিদায়িনী হরগৌরী। দেবী দুর্গার সঙ্গে থাকে সরস্বতী, লক্ষ্মী, গনেশ, কার্তিক। ষাঁড়ের উপর শিব, শিবের কোলে মা দুর্গা। কিন্তু নেই মহিষাসুর ও সিংহ।


যে সমস্ত ক্লাব সংগঠন বা পুজো কমিটি গুলি অংশগ্রহণে ইচ্ছুক তাঁরা অতিসত্ত্বর যোগাযোগ করুন আমাদের সাথে ঃ ৬২৮৯২৩৫০৭৬


উল্টোরথের দিনই পুজো প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়ে যায় এ বাড়িতে। নিয়ম মেনে সেদিনই প্রতিমার কাঠামো তৈরির বাঁশ কাটা হয়। আর মহালয়ের পরদিন প্রতিপদ থেকে প্রতিদিন নিয়ম করে হয় চণ্ডীপাঠ। বাড়ির একতলার ঠাকুরঘর লক্ষ্মী জনার্দনের কাছে পঞ্চমী পর্যন্ত হয় পঞ্চমী পুজো, ষষ্ঠীতে বেলতলা পুজো আর বোধন। সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত চার দিন নিয়ম অনুযায়ী কুমারী পুজো হয়।

বৈষ্ণব মতে পুজো হয় মা দুর্গার, তাই কোনরকম পশু বলির রীতি নেই। তবে প্রথা অনুযায়ী বাতাবি লেবু বলি হয়। কিন্তু তা প্রকাশ্যে নয়। পুজোর একদিন হরিনাম সংকীর্তন বসে এই বাড়িতে। অষ্টমীতে পরিবারের বিবাহিত মহিলারা ধুনো পোড়ান। নবমীর সন্ধ্যা থেকে শুধুমাত্র পরিবারের বিবাহিত মহিলারাই কাঠের একটি প্রতীকী নৌকাকে কয়েন, কড়ি, সিঁদুর, নতুন গামছা দিয়ে সাজিয়ে বিশেষ স্থানে রেখে দেয়।



দশমীর দিন সেটি পুজোর পর পুনরায় ঠাকুর ঘরের নির্দিষ্ট স্থানে রেখে দেওয়া হয়। আবার মাস ছয়েক বাদে বাসন্তী পুজোর নবমীর দিন বের করে সাজানো হয় সেই প্রতীকী নৌকোটি।

Advertisements

Leave a Reply