দত্তপুকুর বিস্ফোরণ কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা, দোষীদের কাউকেই রেয়াত করা হবে না—
HnExpress ২৮/০৮/২৩ ইন্দ্রানী সেনগুপ্ত, উত্তর ২৪ পরগণা : রবিবার সাতসকালে দত্তপুকুর এলাকার বে-আইনি বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে (Duttapukur Blust) বিধ্বস্ত ও আতঙ্কিত গোটা এলাকা। দ্রুত ঘটনার তদন্ত করতে হাজির হন উত্তর ২৪ পরগনা (North 24 Parganas) জেলার জেলাশাসক শরৎকুমার দ্বিবেদী এবং বারাসাত জেলা পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়।
মৃতের সংখ্যা নিয়ে এখনো দ্বন্দ্বে রয়েছে পুলিশ প্রশাসন (Administration)। ঘটনাস্থল এবং বিভিন্ন হাসপাতাল ও বেসরকারি নার্সিংহোমে খোজ খবর নিয়েই মৃত ও আহতদের সঠিক সংখ্যা জানাতে পারবেন বলে জানান জেলাশাসক (District Magistrate)। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে পৌঁছে যায় রাজ্য পুলিশের আইজি দক্ষিণবঙ্গ।
রবিবার বিস্ফোরণের খবর প্রকাশ্যে আসতেই মুখ্যমন্ত্রী কড়া বার্তা দেন যে, “দোষীদের কাউকেই রেয়াত করা হবে না।” এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পরই সেখানে যায় সিআইডির (CID) টিম। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে যে, কারখানায় বেআইনি বিস্ফোরক মজুত ছিল, ঘটনাস্থলে তার প্রমাণও মিলেছে তদন্তকারী দলের হাতে।
এলাকায় এরকম আরো অনেক গুলো বেআইনি বাজির স্বয়ংক্রিয় কারখানার হদিশ পায় সিআইডি (CID)। অন্যদিকে, গ্রামবাসীদের অভিযোগ যে, এই কারখানাগুলোর মালিক শাসকদলের স্থানীয় সব প্রভাবশালী ব্যাক্তিরাই। বারাসাত হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কাল পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ছিল প্রায় ৭ জন। এদের মধ্যে শিশু রয়েছে একটি।
সোমবার আরও এক মরদেহ উদ্ধার হল। এখনও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে বহু দেহাংশ। বিস্ফোরণের (Blast) তীব্রতায় গোটা এলাকা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সোমবার সেই মৃতের সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ৯ জন, গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১০ জন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা যে কত গিয়ে দাঁড়াবে, তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত নয় প্রশাসন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল ছড়িয়েছে গোটা রাজ্যে। একের পর এক জেলায় পরপর বেআইনি (illegal) বাজি কারখানার হদিশ মিলছে, যা নিয়ে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়ছে রাজ্য সরকার। তাঁদের দাবি, প্রশাসনের মদতেই এই কারখানাগুলি বহুদিন ধরে চলছে। ইতিমধ্যে বিজেপির তরফে এনআইএ (NIA) তদন্তের দাবিও তোলা হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস দাবি করেন, “এটা শুধুই একটা দুর্ঘটনা নয়, অনেক বড় একটা ঘটনা।
পুলিশ এর ব্যবস্থা নেবে।” রাজ্যপাল আসার আগেই ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন মন্ত্রী রথীন ঘোষ, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার সহ তৃণমূলের একাধিক নেতৃত্ব। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, পঞ্চায়েত ভোটের আগে মে মাসে মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে তিনবার রাজ্যের তিন জেলায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের (Blast) ঘটনা ঘটেছে। সেইসময় মুখ্যমন্ত্রী বেআইনি বাজি কারখানা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রশাসনকে।
http://hnexpress.co.in/ph-salons-first-outlet-opened-at-barasat-suncity-mall/
কিন্তু সেই নির্দেশ যে একেবারেই মানা হয়নি, রবিবার দত্তপুকুরের (Duttapukur Blast) ঘটনা তা রীতিমতো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। যা দেখে বিরোধীরা বলছেন, ‘পুলিশ-প্রশাসন তো মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রীর কথাই মানছে না। তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা আজ কোথায়? এমনই নানা প্রশ্নের মুখে আজ জর্জড়িত রাজ্য সরকার থেকে পুলিশ প্রসাশন!