কুলতলিতে বাঘের উপদ্রব, তিনদিনেও খাঁচা বন্দী হলো না বনবিবি
বিগত কয়েক দিন ধরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি এলাকায়ে ছড়িয়েছে বনবিবির আতঙ্ক।
HnExpress নিজস্ব প্রতিনিধি, কুলতলি ঃ গত তিনদিন ধরে বাঘের উপদ্রব বেড়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার কুলতলি এলাকায়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, একটি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার তিনদিন ধরে জঙ্গল ছুট হয়ে লোকালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। জানা গেছে, শুক্রবার এক মৎস্যজীবী কাঁকড়া ধরতে গিয়ে দেখতে পায় সেই জঙ্গল ছুট বনবিবির। এরপর শনিবারও গ্রামবাসীরা প্রথমে বাঘের পায়ের ছাপ লক্ষ্য করে পিয়ালী নদীর পাশে। তারপরে বাঘের গর্জন শোনা যায় কেল্লার জঙ্গল থেকেও। যেখানকার পিকনিক স্পটে তখন একদল পিকনিক পার্টি উপস্থিত ছিল। যদিও পরে বাঘের গর্জন শোনার পর পুলিশ তাদের নিরাপদ স্থানে সড়িয়ে দেয়।
বনদফতর সুত্রের খবর, হঠাৎ করেই জঙ্গল ছুট এই বাঘটিকে বন্দি করতে সর্বোতভাবে চেষ্টা চালিয়েও বার বার ফস্কে যাচ্ছেন তাঁরা। বিভিন্ন জায়গায় জাল দিয়ে ঘিরে বা খাঁচাও পাতা হয়েছে ছাগলের টোপ দিয়ে। বনদফতর-এর কর্মীরা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় বাঘটিকে ধরতে গিয়ে রীতিমতো হিমসিম খেয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁরা বাঘটিকে খাঁচায় বন্দী করতে পারেননি। জানা গেছে, রবিবার সকালে গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা মিলে একটি দল তৈরি করে বাঘের খোঁজে কুলতলির জঙ্গলে যায়। সেই দলেই ছিলেন মোতালেব মোল্লা নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা। জানা গেছে এটি একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ রয়াল বেঙ্গল টাইগার।
জঙ্গলে খোঁজার সময় বাঘটি মানুষের উপস্থিততে ভয় পেয়ে আচমকাই গর্জন করে ওঠে। ফলে বাঘের আক্রমণ এর ভয় যে যেদিকে পারে দৌড় দেয়, সেই সময় দৌড়াতে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে যায় মোতালেব। আর ঠিক সেই সময় তাঁর পাশ দিয়েই বাঘটিকে লাফ দিয়ে চলে যেতে দেখেন তিনি। ঘটনার প্রসঙ্গে মোতালেব মোল্লা জানিয়েছেন, তিনি হাঁটু মুড়ে পড়ে যাওয়ার পরেই বাঘটি তাঁর পাশ দিয়ে আচমকা লাফ দিয়ে চলে যায়। কিন্তু বনবিবি তাঁকে কিছুই করেনি বলেই তার স্বীকারোক্তি, তবে পড়ে যাওয়ার দরুন তিনি হাঁটুতে বড়সড় চোট পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি আহত অবস্থায় কুলতলির হাসপাতালে চিকিৎসারত।
অন্যদিকে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, ”বাঘটি বর্তমানে কেল্লার জঙ্গলের কাছে একটি মাঠে রয়েছে। যাতে সে গ্রামবাসীর কোনো ক্ষতি করতে না পারে তাই গ্রামের বেশিরভাগ অংশই জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। এবং পুলিশ প্রশাসন দ্বারা বার বার মাইকিং করে গ্রামের মানুষকে সতর্ক করা হচ্ছে, যাতে তাঁরা অযথা বাড়ির বাইরে না বের হন, বিকেলের মধ্যেই রান্নাবান্নার কাজ সেরে ঘরে ঢুকে যান।” বনকর্মীরা জানিয়েছেন, বাঘটি বারে বারে নিজের অবস্থান বদলাচ্ছে। সেই কারণে ছাগলের টোপ দিয়ে জাল পেতেও কিছুতেই বাঘটিকে খাঁচা বন্দি করা যাচ্ছে না। তবে বাঘ ধরার সমস্ত রকম ভাবে চেষ্টা চলছে বলেই তাঁদের দাবী।