বিনামূল্যে রেশন দানে মেয়াদ বৃদ্ধিতে কেন্দ্রকে টেক্কা রাজ‍্যের

0

HnExpress ১লা জুলাই, ঝুম্পা দেবনাথ, কলকাতা ঃ বাংলায় আনলক-২ পর্ব চললেও করোনার দরুন অর্থসংকটের মধ্যে রয়েছেন বাংলার বেশিরভাগ মানুষ‌ই। এই পরিস্থিতিতে অর্থসংকটের কথা ভেবেই এদিন ‘প্রধানমন্ত্রী গরিবকল‍্যান অন্ন যোজনা’র মেয়াদ বাড়িয়ে‌ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বললেন, উৎসবের সময় মানুষের খরচ বেশি হয়। তাই এই প্রকল্পের মেয়াদ দীপাবলি-ছটপূজো পর্যন্ত অর্থাৎ টানা নভেম্বর মাস পর্যন্ত বাড়ানো হল। অন্যদিকে, বিনামূল্যে রেশন দানে মেয়াদ বৃদ্ধিতে কেন্দ্রকে টেক্কা রাজ‍্যের।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর এই প্রকল্প ঘোষণার ঘন্টা খানেকের মধ্যেই মুখ‍্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে আগামী ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত টানা বাংলার মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার কথা বলেন। তিনি জানান, রাজ‍্যে রেশনে দেওয়া চালের মান কেন্দ্রের তুলনায় অনেক ভালো। রাজ‍্যে রেশনের চাল বাংলার চাষিদের থেকে সংগ্রহ করা হয়, কিন্তু কেন্দ্র এফসিআই এর থেকে সংগ্রহ করেন বলেন জানান মুখ‍্যমন্ত্রী। তিনি আরও জানান, তিন মাস ৫ কিলো করে চাল দেওয়া হয়েছে এবং পরের তিন মাস চালের সাথে আটাও দেওয়া হবে।

এদিকে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই প্রকল্পে প্রতি মাসে বিনামূল্যে দেশের ৮০ কোটি মানুষ ৫ কেজি করে চাল ও ৫ কেজি করে গম পাবে। এরই পাশাপাশি পরিবার পিছু এক কেজি ছোলা (ডাল কি না স্পষ্ট করেননি) দেওয়ার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যদিকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রের তহবিল থেকে খরচ হবে প্রায় দেড় লক্ষ কোটি টাকা। এছাড়াও তিনি বলেন, কেন্দ্র থেকে দেওয়া বিনামূল্যে রেশন রাজ‍্যের ৬০% মানুষ পায় আর ৪০% মানুষ পান না।

তিনি বলেন, কেন ৪০% মানুষ কেন্দ্রের এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে? এদিন এরকমই নানা প্রশ্ন তুলেছেন মুখ‍্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিরোধী মহলের একাংশ উপহাসের সুরে বলছেন, বাংলার মুখ‍্যমন্ত্রী বিনামূল্যে রেশন দানকে ঘিরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাথে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন এবং বাংলার মানুষকে এই প্রতিযোগিতার এক অস্ত্র হিসাবে ব‍্যবহার করছেন। আবার অনেকেই বলছেন, মুখ‍্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার অসহায় মানুষের কথা ভাবলেও তৃণমূল দলের বিভিন্ন পঞ্চায়েত এর প্রধান সহ সদস‍্যমন্ডলীরা মানুষের কথা ভাবছেন না।

তাই ক্ষতিপূরণের টাকা গরিব, অসহায়দের না দিয়ে নিজেরাই আত্মর্সাৎ করছেন। মুখ‍্যমন্ত্রী ওই টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিলে, এক খসরা পত্রে সেই সমস্ত অপরাধমনস্ক ব‍্যক্তি “ভুল করে টাকাটা নিয়েছি” বলে কথাটি উল্লেখ করছেন। যা অত্যন্ত হাস‍্যকর একটি ব্যাপার বলেই মনে করছেন বিরোধীপক্ষ। আবার মোদির এ দিনের ভাষণে ‘ছটপূজো’র উল্লেখকে ঘিরে অনেকেই বলছেন, নভেম্বরে বিহারে বিধানসভার নির্বাচন। তাই তিনি যোজনায় মেয়াদবৃদ্ধি করে বিহারে ছোঁয়া রেখে দিলেন বলেই মনে করছেন সমালোচকদের একাংশ।

আবার অনেকেই বলছেন, করোনার সময় রেশনের চাল অসহায় মানুষের কাছে না পৌঁছে দিয়ে তৃণমূল দলের অনেক সদস্যই তাদের নিজেদের কাছে রেখে তা মানুষের কাছে ত্রাণবিলির নামে ভোটের প্রচার করে গেছেন। তাহলে কি রেশন দানের মেয়াদ বাড়িয়ে তৃণমূল দল সেই পথেই আবার হাঁটতে চলেছে? প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীম‍হল। এদিন এক ফেরিওয়ালা জানান, তিনি এই সমস্ত রাজনৈতিক কারসাজি বোঝেন না। তিনি বলেন, তিনি খুব সাধারণ মানুষ, লকডাউনের জেরে তার রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। তাই তিনি সরকারের রেশন দানের এই সাহায্যকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply