দিল্লিতে সাংবাদিক নিগ্রহের বিরুদ্ধে কলকাতা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে প্রতিবাদ ধিক্কার মিছিল

0

HnExpress নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা : “সাংবাদিকরা নাকি জঙ্গি, তাঁরা নাকি দেশদ্রোহীও”, হ্যাঁ সম্প্রতি ঠিক এমনই একটি অভিযোগ উঠে এসেছে নয়া দিল্লির পুলিশের তরফ থেকে। গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টায় ৪৭ জন বর্ষিয়ান ও বিশিষ্ট সাংবাদিকদের বাড়িতে অভিযান চালায় দিল্লি পুলিশ। ঠিক তারপরেই রাত সাড়ে আটটা নাগাদ একটি ডিজিটাল মিডিয়ার এডিটর প্রবীর পুরকায়স্থ ও এইচআর হেড অমিত চক্রবর্তীকে UAPA -তে গ্রেফতার করা হয়।

সাংবাদিকদের ওপর দিল্লি পুলিসের এই আগ্রাসী ও নির্যাতনমূলক আচরণের প্রতিবাদে ৫ই অক্টোবর, বৃহস্পতিবার কলকাতা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে কলকাতার সাংবাদিকরা এক ধিক্কার মিছিল বের করে। কলকাতা প্রেসক্লাবের সামনে পথসভার পরে পথযাত্রা শুরু হয়। তারপর ধর্মতলার গান্ধী মূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত গিয়ে সেই প্রতিবাদ পদযাত্রাটি শেষ হয়। এই সমাবেশে সংগঠনগত ভাবে উপস্থিত ছিল প্রেস ক্লাব কলকাতা, ক্যালকাটা জার্নালিস্ট ক্লাব, সাউথ এশিয়ান ওম্যান ফর মিডিয়া ও ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিয়ন অফ জার্নালিস্টস।

এছাড়াও এদিনের মিছিলে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা প্রেসক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস সুর, সম্পাদক কিংশুক প্রামাণিক, সহ-সম্পাদক নিতাই মন্ডল সহ সংগঠনের আরো অন্যান্য সদস্য, কর্মীবৃন্দ এবং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকরা। জানা যায় যে, নিউজ পোর্টালের প্রধান সম্পাদক প্রবীর পুরকায়স্থকে ওইদিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিল্লি পুলিশের এক কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আর সেখানে দিল্লি পুলিশের একটি ফরেন্সিক দলও উপস্থিত ছিল।

এদিন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল সাংবাদিকদের বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইস, যেমন— মোবাইল, ল্যাপটপ, পেনড্রাইভ ইত্যাদি। বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, কোনও সার্চ ওয়ারেন্ট ছিল না পুলিশের কাছে। কিন্তু পুলিশের যুক্তি যে, গত আগস্ট মাসে এই নিউজ পোর্টালটির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল UAPA-র বিভিন্ন ধারায়। তাই তাদের কোনও আর সার্চ ওয়ারেন্টের প্রয়োজন নেই। প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস সুর বলেন, “এই পদক্ষেপ দেশের সাংবাদিক ও নাগরিক সমাজের কাছে উৎকন্ঠা এবং উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কেউ যদি দেশের আইন ভাঙে তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় কারুর কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু বর্ষিয়ান ও প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দিল্লি পুলিস যে আচরণ করেছে তা অনভিপ্রেত।” সারা দেশে এই অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হচ্ছে। আর তাতে কলকাতার সাংবাদিকরাও আজ সামিল হয়। অভিযোগ, ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তাঁদের আটকে রাখা হয়।

এ বিষয় প্রেসক্লাবের সম্পাদক কিংশুক প্রামাণিক বলেন, সাংবাদিকদের প্রধান অবলম্বন হল তাঁর মোবাইল, ল্যাপটপ, ক্যামেরা ইত্যাদি। এগুলো কেড়ে নেওয়ার অর্থ হল সার্বিকভাবে সংবাদমাধ্যমের কন্ঠরোধ করা। যদি কেউ বেআইনি আর্থিক লেনদেন করে থাকে, তাহলে পুলিশ আদালতে তার প্রমাণ দাখিল করুক। তা না করে, তাঁর কাজের জিনিস কেড়ে নেবে কেন? এই ঘটনাকে গণতন্ত্রের চতুর্থস্তম্ভ অর্থাৎ সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে বলেই মনে করছে দেশের সমস্ত সংবাদমাধ্যম।

FacebookTwitterShare

Leave a Reply Cancel reply