৪৫ বার ঘণ্টাধ্বনি দিয়ে ৪৫তম কলকাতা বইমেলার উদ্বোধন, বাংলাদেশের থিমে সজ্জিত ২২ এর মেলা
HnExpress প্রিয়দর্শী সাধুখাঁ, কলকাতা ঃ
পায়ে পায়ে ৪৪ বছর পেড়িয়ে ৪৫তম জন্মদিনে পা রাখলো কলকাতা বইমেলা, ২০২২। বহু প্রতিক্ষিত এই বইমেলা কোভিডের কারণে জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ার কারণে বই প্রেমী বাঙালি ও অবাঙালীর মন ছিল বিষন্ন। কিন্তু সংক্রমন অনেকটাই কমে যাওয়ার ফলে মেলা ছাড়পত্র পেয়ে যায়। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৪৫ বার ঘণ্টাধ্বনি দিয়ে বইমেলার উদ্বোধন করেন এবং এই দিনই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের থিমে বানানো জাগো বাংলার স্টলের উদ্বোধন করেন তিনি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাম জমানার সময় থেকেই এই বইমেলার জন্য প্রত্যেক মুখ্যমন্ত্রীই বিশেষ উদ্যোগ নিতেন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এর আমলে ময়দানে বইমেলা হলেও পরিবেশ দূষন বিষয়ক মামলার জন্য সেন্ট্রাল পার্কে স্থানান্তরিত করা হয় এই মেলা। এ বছরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঘোষণা করেন সেন্ট্রাল পার্কের নাম পরিবর্তন করে এবার থেকে ‘বইমেলা প্রাঙ্গণ’ হিসাবেই পরিচিত হবে পার্কটি। ভাষন দেওয়ার সময় বাংলা ও বাংলাদেশ নিয়ে আবেগে ভাসলেন তিনি।
এদিন মেলা প্রাঙ্গণ থেকে তিনি বলেন, “দুই দেশে কোনও বিভেদ নেই। তাঁরা একে অপরের তরে চিরসাথী। সীমানা দিয়ে দুই বাংলাকে আলাদা করা যায় না।” বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর পরিবারের সকল সদস্যের শুভকামনাও করেন তিনি। সকলকে কমপক্ষে একবার বইমেলায় আসার আহ্বান জানান। এদিন দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ বইমেলায় পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী।
তাঁর সঙ্গে ছিলেন কলকাতার মেয়র তথা মন্ত্রী জনাব ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী সুজিত বসু, দোলা সেন এবং তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ প্রমুখ। ২০২২ এর বইমেলায় মোট ৬০০টি স্টল করা হয়েছে, যার মধ্যে লিটল ম্যাগাজিনের স্টল রয়েছে ২০০টি। বাহির ও প্রস্থানের জন্য মোট ৯টি তোরন করা হয়েছে। এই তোরন গুলির বিশেষ আকর্ষণ হলো তিনটি বঙ্গবন্ধুর লেখা বইয়ের আদলে। বঙ্গবন্ধুর নামে একটি গেটও রয়েছে। ২টি সত্যজিৎ রায়ের ও অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে।
একটি বিশ্ববাংলা গেটও রয়েছে। এছাড়াও মেলার ২টি হলের নামকরন করা হয়েছে দেশনায়ক নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ও ঋষি অরবিন্দ’র নামে। আর লিটল ম্যাগাজিনের প্যাভিলিয়ান হবে কবি-সম্পাদক শম্ভু রক্ষিত ও প্রভাত চৌধুরী নামে। অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের নামে রয়েছে মুক্তমঞ্চ। এবারই প্রথম বইমেলায় অংশ নিচ্ছে ইরাক। সিইএসসির সাহায্যে থাকছে বইমেলার অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ।
মেলা পরিবেশবান্ধব হল কিনা, সে বিষয়ে খেয়াল রাখবে বনদপ্তর। রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি এখন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে। আর এই পরিস্থিতিতে বহু মানুষই এবার বইমেলামুখী হবেন বলেই আশা গিল্ড সদস্যদের। আর সেকথা মাথায় রেখেই নিরাপত্তায় বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে এবারে। মেলা চত্বরে অতিরিক্ত পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে বলে সুত্রের খবর।