আশ্রয় পাব কোথায়? এমনই প্রশ্ন তুলছেন বর্ষার উত্তাল গঙ্গাবক্ষে ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়া পরিবার
HnExpress ২০শে আগস্ট, ঝুম্পা দেবনাথ, মূর্শিদাবাদ ঃ বর্ষার জলে উত্তাল গঙ্গানদী। করোনাকালে এই উত্তাল গঙ্গানদীর নদীপাড় ভাঙ্গনের জেরে তলিয়ে গেল বিঘার পর বিঘা চাষযোগ্য জমি এবং বহু মানুষের বসবাসীকারী ঘরবাড়ি। কারোর আবার নদীচরে ধসে গিয়েছে বাড়ির একাংশ। আতঙ্কিত পরিবারের অনেকেই ঘর ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন বৃক্ষতলে, কেউ বা রাস্তায়। তাহলে আশ্রয় পাব কোথায়? এমনই প্রশ্ন তুলছেন বর্ষার উত্তাল গঙ্গাবক্ষে ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়া পরিবারগুলি।
আর এই ভয়াবহ কোডিভ পরিস্থিতিতে একই আতঙ্কের চিত্র ধরে পড়ছে সাংবাদিকদের ক্যামেরার লেন্সে। মূর্শিদাবাদ জেলার তিন কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে গঙ্গার নদীপাড় ভাঙ্গনের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। বিঘার পর বিঘা জমি চলে গিয়েছে নদীগর্ভে, বহু স্বহায় সম্বলহীন পরিবারের আশ্রয়স্থল তলিয়ে গেছে নদীর জলে। ফলত আতঙ্কিত গ্ৰামবাসী বাড়ি ছেড়ে পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন বৃক্ষাতলে কেউবা রাস্তার এক কোনায়। ক্ষতিগ্ৰস্ত হয়েছেন একাধিক পরিবার।
মূর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জের ধানঘরার এক স্থানীয় বাসিন্দা মহল্লা সাবিব জানান, তার বাড়ি নদীর তীরবর্তী অঞ্চলেই। ফলত নদীচরের জেরে বসে গিয়েছে তার বাড়ির একাংশ। তিনি আরও জানান, তার স্বামী যেহেতু একজন সারমেয় চিকিৎসক, তাই ঘর ছেড়ে তার স্বামী চার ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন স্বামীর সেই ভাড়া নেওয়া স্থানীয় ছোট চেম্বারেই। কিন্তু সেটা এতটাই ছোট চেম্বার যে তিনি বুঝতে পারছেন না, কি করে এখানে সবাই মিলে থাকবেন তাঁরাপ।
ফলে এই অসহায় পরিস্থিতিতে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর কাছে বাড়ির তৈরি করে দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।
মূর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জের ধানঘরার আর এক স্থানীয় বাসিন্দা ফারুণ শেখ জানান, নদী তীরবর্তী বহু জায়গা জলের তলায় চলে যাওয়ায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন তাঁরাও।
মূর্শিদাবাদ জেলার সামসেরগঞ্জের অন্তর্ভুক্ত বহু গ্ৰামেই নদীর পাড় ভাঙনের ভয়াল চিত্র উঠে এসেছে।
ধুসুনিপাড়া গ্ৰামের এক স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ সানাউল্লা জানান, তার বাড়ি গঙ্গার নদীর তীরে থাকার জন্য অন্য জায়গায় সরে গিয়েছেন, কিন্তু সেখানেও হানা দিয়েছে নদীর পাড় ভাঙ্গনের সেই ভয়াল রূপ। এখানেও বাড়ি নদী গর্ভে চলে গেলে কোথায় আশ্রয় নেবেন তাঁরা? এমনই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। মূর্শিদাবাদ জেলার নিমতিতা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মইনুল ইসলাম জানান, তিনি বিডিও সহ ক্ষমতায় থাকা অন্যান্য মহলে এই নদীর পাড় ভাঙ্গনের মতো আতঙ্কের কথা জানিয়েছেন তিনি।
কিন্তু যত তাড়াতাড়ি এই আতঙ্কিত অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, তারই আবেদন জানাছেন, এমনটাই জানালেন উপপ্রধান। মূর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জ এর বিধায়ক আমিরুর ইসলাম জানান, যেকোনো সমস্যায় মানুষের পাশে আছি আমি। তাছাড়াও তিনি বললেন যে, বাড়ি তৈরির জন্য রাজ্যের বরাদ্দ টাকা পাঠাচ্ছেন না কেন্দ্রীয় সরকার। তবে মুর্শিদাবাদ জেলাশাসকের পক্ষ থেকে অন্নসংস্থানের ব্যাবস্থা করা হয়েছে বলেই জানান স্থানীয়রা।