নন্দীগ্রামে দেওয়াল লিখনে ব্যাস্ত তৃণমূল কর্মীরা, মুখ্যমন্ত্রী যে নিজেই প্রার্থী—
HnExpress প্রিয়দর্শী সাধুখাঁ, কলকাতা ঃ ২০২১ এর জানুয়ারী মাসের শেষ সপ্তাহ প্রায় আগত। আর কয়েকটা মাস পেরোলেই সামনে বিধানসভা নির্বাচন। ২১শে পুনরায় বাম কংগ্রেস জোট। মোদি সরকারের চতুর খলামিতে দল বদলের খেলাতে মত্ত তৃণমূলের কিছু হেবিওয়েট নেতা। সব দলই ভোট প্রক্রিয়াতে নিজেদের সমর্থনে মিটিংয়ে ব্যাস্ত, সোশ্যাল ডিসটেন্স এর কোনো বালাই নেই। আর অন্যদিকে নন্দীগ্রামে দেওয়াল লিখনে ব্যাস্ত তৃণমূল কর্মীরা, মুখ্যমন্ত্রী যে নিজেই প্রার্থী—
সূত্রের খবর অনুযায়ী পরিসংখ্যান বলছে যে, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ভবানীপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট কমে গিয়েছিল। যা অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর গড় নামেই খ্যাত। কিন্তু এবারে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে নন্দীগ্রাম থেকে বিধানসভা নির্বাচনে নিজে প্রার্থী হবেন তা অনেকেরই কল্পনার অতীত ছিল। যদিও তিনি এ বিষয় সোমবারই স্পষ্টত ঘোষণা করেছেন, নন্দীগ্রাম থেকে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তিনি নিজেই প্রার্থী হবেন। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপে গেরুয়া শিবিরের সাজানো ঘুটি আপতত যে বানচাল হল বলে, তা মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।
সোমবার তেখালির সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন যে, নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়ালেও তিনি ভবানীপুর থেকেও দাঁড়াতে পারেন। এই পদক্ষেপের কড়া নিন্দা করেন সদ্য তৃণমূল ত্যাগী শুভেন্দু অধিকারি। যিনি বর্তমানে তৃণমূলে গদ্দার নামেই পরিচিত। তিনি বলেন ‘এক জায়গা থেকে দাঁড়াতে হবে৷ দু’জায়গায় দাঁড়ালে চলবে না৷ লড়তে হলে শুধু নন্দীগ্রাম থেকেই লড়তে হবে, নইলে শুধু ভবানীপুর থেকে৷ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কালকে মঞ্চ থেকে ঘোষণা করেছেন, তিনি নন্দীগ্রাম থেকে লড়বেন৷
এ বিষয় নিয়ে তিনি আরও বললেন, বিজেপি-র প্রার্থী কিন্তু মঞ্চ থেকে হয় না৷ তবে তৃণমূলে ওসব হয়, কারণ তৃণমূল কোম্পানিতে দিদিমণি আর তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র যা বলবেন সেটাই দেশের আইন। নন্দীগ্রামে কীসের ভরসায় আসছেন তিনি, ৬২ হাজারের ভরসায় কি? তবে পদ্ম তো জিতবে ২ লক্ষ ১৩-র ভরসায়৷ ২ লাখ ১৩ কারা, জয় শ্রীরাম বলে যাঁরা৷ তবে ওই ৬২ হাজারেও সিঁধ কাটব আমি৷ আমরা আপনাকে দুটো জায়গা থেকে দাঁড়াতে দেব না৷ আর এখন থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রাক্তন এমএলএ-র লেটারহেড ছাপিয়ে রাখতে হবে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হারবে, হারবে, হারবে৷’
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষনার পরেই নন্দীগ্রামের কেন্দ্যামারীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে দেওয়াল লিখন শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল কর্মীরা। দেওয়াল লিখন প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বললেন ‘তৃণমূল কর্মীরা উৎসাহিত হয়ে দেওয়াল লিখনের কাজ শুরু করে দিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের মানুষ খুশি এবং গর্বিত। ইতিমধ্যেই বুথ শক্তিশালী করার কাজও আমরা শুরু করে দিয়েছি’।
অপরদিকে তৃণমূলনেত্রী নন্দীগ্রামে দাঁড়ানোর প্রসঙ্গে বললেন ‘ভবানীপুর আমার বড় বোন এবং নন্দীগ্রাম আমার ছোট বোন। নন্দীগ্রামে আমি দাঁড়াবই।’ মুখ্যমন্ত্রীর নন্দীগ্রামে দাঁড়ানোর প্রসঙ্গ নিয়ে বিজেপি আইটি সেলের প্রধান তথা বাংলায় বিজেপির সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য কটাক্ষ করে একটি ট্যুইটের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করেছেন “রাজনৈতিক ভাবে মমতা যে নার্ভাস এতে কিন্তু তারই প্রমাণ মিলল”।