দূষণ প্রতিরো করতে রাস্তার ধারে উনুন জ্বালানো রুখতে সতর্কবার্তা, জেনে নিন কেন এই সতর্কতা
HnExpress অশোক সেনগুপ্ত, কলকাতা ঃ দূষণ রোধে রাস্তার ধারে তন্দুর এবং ধোপাদের উনুনে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চায় রাজ্য। এব্যাপারে কলকাতার পুরসভাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শনিবার কলকাতায় এক আলোচনাচক্রে এ কথা জানান পশ্চিমবঙ্গের পুর ও নগরোন্নয়ন সচিব সুব্রত গুপ্ত।
সুব্রতবাবু এদিন বললেন, দূষণের প্রায়এক তৃতীয়াংশের উৎস রাস্তার ধারের এই সব চুল্লী। এক তৃতীয়াংশের উৎস গাড়ি। সেই মুহূর্তে মুঠিফোনে দূষণের মাপকাঠির পরিমাপ জানিয়ে তিনি বললেন, কলকাতার দূষণ বিপদসীমার নিচেই আছে। তবে, এটাও ঠিক, বৃষ্টি হওয়ার জন্য পরিস্থিতি বেশি ইতিবাচক। দূষণের ওপর নজর রাখতে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল-সহ মহানগরীর ৬ জায়গায় দূষণ মাপার যন্ত্র বসানো হয়েছে।
প্রতি ১৫ মিনিট অন্তর মাপা হচ্ছে দূষণ। পর্যায়ক্রমে রাজ্যের ১২৫টি পুরসভায় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ একরকম যন্ত্র বসাবে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে হচ্ছে ৫৮টি পুরসভার কাজ। ইন্সটিট্যুট অফ টাউন প্ল্যানার (আইটিপিআই) -এর পশ্চিমবঙ্গ শাখা আয়োজিত এ দিনের আলোচনাচক্রের বিষয় ছিল ‘দূষণরোধে নগর পরিকল্পনার প্রয়োজনীয়তা‘। প্রধান অতিথির ভাষণে সুব্রতবাবু বললেন, রাস্তার বাতি ব্যবস্থাকে দূষণমুক্ত করতে সেন্ট্রালাইজড কম্যান্ড অ্যান্ড মনিটরিং সিস্টেম (সিসিএমএস) নামের একটি প্রকল্প রূপায়িত হচ্ছে।
যেকোনো রকমের খবর ও বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন।
চলতি কথায় একে বলে ‘ইনটেলিজেন্ট লাইটিং’। দূষণে লাগাম দিতে ব্যক্তিগত ছোট গাড়ির সংখ্যা কমানো উচিত। এই মন্তব্য করে তিনি বলেন, “জোর দিতে হবে গণপরিবহণ, বিশেষত মাস রাপিড ট্রান্সপোর্টের ওপর। জলের অপচয় বন্ধ, প্লাস্টিক ও আতসবাজি বর্জন প্রভৃতির ওপর জোর দিতে হবে।“
এদিনের এই আলোচনায় সভাপতির ভাষণে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রাক্তন মুখ্য পরিকল্পক তথা আইটিপিআইয়ের জাতীয় সভাপতি দীবাকর এস মেশরাম বললেন, দূষণের জন্য প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় ৮০ লক্ষ মানুষ মারা যান। এর মধ্যে বিভিন্ন রকম উনুনের ধোঁয়া ও গৃহস্থালীর অন্য দূষণে মৃত্যু হয় প্রায় ৪৩ লক্ষ মানুষেরা। আর যানদূষণ ও আনুষঙ্গিক বাইরের নানা দূষণ প্রায় ৩৭ লক্ষ লোকের মৃত্যুর কারণ।
এছাড়াও বিশেষ অতিথির ভাষণে মার্কিন কনসাল জেনারেল প্যাটি হফম্যান বলেন, রোগ ও মৃত্যুর নেপথ্যে একটা বড় কারণ এই দূষণ। দিল্লি, কলকাতা, চেন্নাই, মুম্বাই ও হায়দরাবাদে দূতাবাসের তরফে আধুনিক যন্ত্রে দূষণ মাপার কাজ হচ্ছে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে মার্কিন দূতাবাস দূষণ নিয়ন্ত্রণের কাজ কীভাবে করছে, তার উল্লেখ করলেন হফম্যান।
স্বাগত ভাষণে কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন ডিজি তথা আইটিপিআই-এর রাজ্য সভাপতি দীপঙ্কর সিংহ বললেন, প্রায় ১৬ লক্ষ গাড়ির দূষণ নিরন্তর গ্রাস করছে এই মহানগরীকে। এ বছর রাষ্ট্রসঙ্ঘ ধ্বণি দিয়েছে বায়ুদূষণকে রোখো। সেটাকে মাথায় রেখেই তৈরি হয়েছে এই আলোচনার রূপরেখা।