বাঘিনী একাই লড়াই করে রক্ষা করল বঙ্গ দুর্গ—
HnExpress অরুণ কুমার, রাজনীতি ঃ ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে বাংলার জনাদেশ খুবই স্পষ্ট। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এবারের বিধানসভা নির্বাচন ছিল বেশ কঠিন। আর তাঁর এই রাজনৈতিক জীবনের সব থেকে কঠিন লড়াইয়ে সব থেকে বড় বিরোধী পক্ষকে নাড়িয়ে দিয়ে অসাধারণ জয় পেলেন তিনি। ফলস্বরূপ আরও পাঁচ বছরের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতেই রাজ্যের ভার তুলে দিল পশ্চিমবঙ্গের মানুষ।
যাকে বলে হাত উপুড় করে ঢেলে দেওয়া। সমস্ত পূর্বাভাস, এক্সিটপোলকে ভুল প্রমাণ করে দিয়ে তৃণমূল নেত্রীর ঝুলিতে কার্যত সেভাবেই ভোট ঢেলে দিলেন এবারে বাংলার জনতা জনার্দন। নির্বাচন কমিশনের সার্ভার থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ২৯২ আসনের মধ্যে ২০৮ টি আসনেই এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। মাত্র ৭৮টিতে বিজেপি, আর অন্যান্যরা রয়েছে ৩টিতে।
বস্তুত উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও দার্জিলিং বাদে রাজ্যের আর কোথাও ভাল ফল করতে পারেনি বিজেপি। তবে উত্তরের জেলাগুলিতে তৃণমূলের ফল ভালো না করতে পারার অন্যতম কারণ হচ্ছে যোগ্য নেতৃত্বের অভাব এবং যাঁরা নেতৃত্বে ছিলেন তাদের অকর্মন্যতা, ক্ষমতার দম্ভ ও মানুষের সাথে দুর্ব্যবহার দলের সাথে দূরত্ব তৈরিতে সাহায্য করেছে। যার ফলে দলের ফলাফল এতটা প্রভাবিত হয়েছে।
অপরদিকে ঠিক সেরকম ভাবেই দক্ষিণবঙ্গে কার্যত ভরাডুবি হয়েছে পদ্ম শিবিরের। ফলে লোকসভায় এগিয়ে থাকা আসন গুলিতেও সুবিধা করতে পারেনি বিজেপি। এর পাশাপাশি, অপরদিকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে সংযুক্ত মোর্চা অর্থাৎ বাম-কংগ্রেস-আব্বাস জোট। স্বাধীনতার পর এই প্রথম কোনও বিধানসভা নির্বাচনে শূন্য পেল বামপন্থীরা। একই অবস্থা কংগ্রেসেরও। সংখ্যালঘু ভোটে কোনও দাগ কাটতেই ব্যর্থ আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট।
২০১৬ ‘র বিধানসভায় তৃণমূলের ভোটের হার ছিল ৪৪ শতাংশ। লোকসভায় কমে দাঁড়ায় ৪৩ শতাংশ। এবার এখনও পর্যন্ত তৃণমূল ভোট পেয়েছে ৪৮.৩৩ শতাংশ। লোকসভার থেকে পাঁচ শতাংশের বেশি ভোট বাড়িয়েছে তৃণমূল। উনিশের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ভোট ছিল ৪০ শতাংশ। এবার বিজেপির ভোটের হার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৭.৭৪ শতাংশ। দুই শতাংশের বেশি ভোট হাত থেকে বেরিয়ে গেছে তাঁদের।
বামেদের সাত থেকে কমে৷ তা হয়েছে ৫.৫৬ শতাংশ। কংগ্রেসের ভোট ২.৮৬ শতাংশ। আর বিজেপি বিরোধী সমস্ত ভোট ঝেঁপে তৃণমূলের ঘরে পড়াতেই ঘাসফুল পাঁচ শতাংশ ভোট বেশি পেয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বাম-কংগ্রেস জোটের কিছু ভোটও টেনে নিয়েছে তৃণমূল। এবারের বিধানসভা ভোটে মেরুকরণের ছাপ ফেলেছে স্পষ্ট রূপে। কিন্তু তাতে সুবিধা হয়েছে মমতারই। সংখ্যালঘু ভোটের পুরোটাই গিয়েছে তৃণমূলের ঘরে।
এর পাশাপাশি সফল তৃণমূল সুপ্রিমোর জেন্ডার পলিটক্সও। কারণ ইস্তাহারে মেয়েদের জন্য ঢেলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তৃণমূল। তাতে আকৃষ্ট হয়ে রাজ্যের মহিলাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ তৃণমূলকে
ঢেলে ভোট দিয়েছে বলেই ফলাফল দেখে মনে হয়েছে। স্বাস্থ্যসাথী, সবুজসাথী, কন্যাশ্রীর মতো জনকল্যাণ মূলক প্রকল্পের সুবিধাও ভোটবাক্সে ডিভিডেন্ড দিয়েছে তৃণমূলকে। আরো একটি কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হচ্ছে, এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই পিকের রণকৌশল মমতার লড়াইকে অনেক সহজ করেছে। “রাজনীতিতে যো জিতা ওহি সিকান্দার”।
আর এই সাফল্যের পেছনে যাঁর অনেকটাই ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল, তিনি হলেন তৃণমূলের ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোর বা পিকে। মূলত তাঁর মস্তিষ্ক প্রসূত ‘দিদিকে বলো’, ‘বাংলার গর্ব মমতা’, ‘দুয়ারে সরকার’, ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’-এর মতো প্রকল্প ও প্রচার কর্মসূচি যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সাধারণ মানুষের মনে তা ছাপ ফেলেছে। যার প্রভাব পড়েছে ভোট বাক্সে। পিকে নিজেও সাক্ষাৎকারে জানিয়ে ছিলেন যে, বিজেপির আসন তিন সংখ্যা পেরোবে না।
আর সেটাই মিলে গিয়েছে। এদিকে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিভিন্ন জনসভায় দাবি করেছিলেন, বিজেপি এবার ২০০-র বেশি আসন পেয়ে ক্ষমতায় আসবে। সেটা কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। এবারের নির্বাচনে পাখির চোখ করে সাজিয়ে ছিল বিজেপি। তৃণমূলকে উৎখাত করতে এবার রীতিমতো অলআউট অভিযানে নেমে ছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বঙ্গ বিজয়কে প্রেস্টিজ ফাইট করে তুলে ছিলেন খোদ মোদী-শাহ জুটি। ভোটের মুখেই তৃণমূলের সাজানো ঘর ভেঙে শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এর মতো হেভিওয়েট নেতাদের ছিনিয়ে এনেও বাজিমাৎ করতে ব্যর্থ হলেন মোদী-শাহ নেতৃত্ব।
নিঃসন্দেহে সাত বছরের মধ্যে এটা তাঁদের জন্য সব থেকে বড় ও চরম রাজনৈতিক পরাজয়। ঘরে বাইরে চরম চাপের মুখে পড়েও স্রেফ একার ক্যারিশ্মায় ফের খেলা জিতে মমতা আবার প্রমাণ করলেন, এই মুহুর্তে বাংলার রাজনীতিতে তাঁর ধারে কাছে আর কেউ নেই।
এবারের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল দেখে স্পষ্টতই যে কথাটা বলতে হয় তা হলো, সমস্ত হিসেব নিকেশ উলটে দিয়ে বাংলায় তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় আসীন হল তৃণমূল কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বার বার রাজ্যে এসে জনসভা করলেও বাংলার মসনদ দখলে ব্যর্থ বিজেপি।
বিজেপির আসন বাড়লেও ২০০-রও বেশি আসন পেয়ে একক সংখ্যা গরিষ্ঠ দল হিসেবে ক্ষমতায় তৃণমূল। বুথ ফেরত সমীক্ষায় এটা স্পষ্ট বোঝা গিয়েছিল যে, তৃণমূল ফের ক্ষমতায় আসতে চলেছে। তবে ফল এতটা ভালো হবে তা হয়তো খোদ তৃণমূল সুপ্রিমোও আশা করেননি।
উল্লেখ করা যেতেই পারে যে, গত ডিসেম্বরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এর জনসভায় তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেন। তার পরপরই একে একে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান একঝাঁক তৃণমূল এর হেবিওয়েট নেতা।
এতে ব্যাকফুটে চলে যায় ঘাসফুল শিবির। কিন্তু সেই ধাক্কাকে তৃণমূল যে যথেষ্ট ভালো ভাবেই সামলেছে, তা ভোটের ফলেই স্পষ্ট। ভোটের আগে ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’ স্লোগান তুলে প্রচার শুরু করেছিল তৃণমূল, যা পিকের মাস্টারস্ট্রোক। এটা যে রাজ্যের মানুষ সাদরে গ্রহণ করে ছিলেন, তার প্রমাণ মিলেছে ভোট বাক্সে। একের পর এক তৃণমূল নেতা-মন্ত্রী দল ত্যাগ করায় অনেকেই ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরকে কাঠগড়ায় তুলে ছিলেন। যদিও নিজের কর্তব্যে অবিচল ছিলেন পিকে।
তৃণমূলের এই অভাবনীয় ফলের পেছনে তাঁর ক্ষুরধার মস্তিষ্কের অবদান যে অনেকটাই, তা এক বাক্যে মানছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের বিজেপির জয়লাভের অন্যতম কুশীলব মুকুল রায়কে ঘরবন্দি করে রেখে ছিল দল। অপরদিকে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির নেতৃবৃন্দের হাব ভাব, অঙ্গভঙ্গি মনোভাব দেখে তাঁরা বার্তা দিতে চেয়ে ছিলেন যেন ক্ষমতায় এসেই গিয়েছেন তাঁরা। আর সেই কারণেই তাঁরা একেক সময়
একেক জনকে দিল্লিতে উড়িয়ে নিয়ে যেতে চার্টার্ড ফ্লাইট নেমেছিল দমদমে।
আবাত কাউকে হাতে বিজেপির পতাকা তুলে দিতে দিল্লি থেকে উড়ে এসে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দলের কাঠামোর মধ্যে থেকে মানুষের স্বার্থে কাজ করতে না পেরে কারও দমবন্ধ হয়ে আসছিল। কেউ কেউ টিকিট না পেয়ে অভিমানে কেঁদে কেটে দলবদল করে ছিলেন। এভাবে গত কয়েক মাসে যোগ দেওয়া এই তৃণমূলত্যাগীদের ওপর অনেকখানি আস্থা রেখেছিল বিজেপি। ফলস্বরূপ দলের এই দুঃসময় এর কর্মীদের স্বপ্ন চুরমার করে দল বদলুদের অধিকাংশকেই টিকিট দিয়ে ছিল দল। আদি বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠে ছিল বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয়। সেই দলবদলুরাই বিজেপিকে পথে বসালেন।
শুভেন্দু অধিকারীর কথা আলাদা। বাকি প্রায় সবাই বিজেপির এই ভরাডুবির নেপথ্য নায়ক। জনগণের রায়ে তাঁরা প্রায় সকলেই ভূপতিত।
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যয়ের জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শা চার্টার্ড ফ্লাইট পাঠিয়ে ছিলেন। সেই ফ্লাইটে উঠে পড়ে ছিলেন প্রবীর ঘোষাল, রুদ্রনীল ঘোষ, বৈশালী ডালমিযা ও রথীন চক্রবর্তীও। রাজীব ২০১১ ও ২০১৬ সালে পরপর দুবার হাওড়ার ডোমজুড় কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হয়ে মন্ত্রী হয়ে ছিলেন। হাওড়া গ্রামীণ এলাকার দলীয় কাজকর্ম দেখ ভালের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি।
এবার বিজেপির হয়ে দাঁড়িয়ে নিজের চেনা মাঠেই হেরেছেন তিনি। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাংবাদিক হিসাবে প্রবীরের দীর্ঘদিনের যোগাযোগ। পরে তৃণমূলে যোগ দিয়ে তিনি জোড়াফুল প্রতীকে উত্তরপাড়া থেকে জিতে বিধায়ক হয়েছিলেন। তিনিও বিজেপির হয়ে লড়তে নেমে নিজের কেন্দ্রেই হেরেছেন। ক্রিকেট প্রশাসক জগমোহন ডালমিয়ার মেয়ে বৈশালী তৃণমূলের টিকিটে জিতে বালির বিধায়ক হয়েছিলেন। শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তৃণমূল তাঁকে বহিষ্কার করে। তিনি বিজেপির টিকিটে নিজের কেন্দ্রেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু জয় পাননি তিনিও। একই হাল হয়েছে রুদ্রনীল ও রথীনেরও।
শুধু তৃণমূলের দলত্যাগীরা নন, বিজেপি হতাশ দলের সাংসদদের পরিণতিও তাই। সাংবাদিক তথা রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত রাজ্যসভা থেকে পদত্যাগ করে তারকেশ্বর কেন্দ্র থেকে লড়াই করতে নেমে ছিলেন। কিন্তু তিনি শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারলেন না। সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়, লকেট চট্টোপাধ্যায়, নিশীথ প্রামাণিক ও জগন্নাথ সরকারকেও বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছিল বিজেপি। টালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে বাবুল ও চুঁচুড়া থেকে লকেটের হারে রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করেছেন দলের নেতারা। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্য থেকেই ১৮ জন সাংসদকে পেয়েছিল বিজেপি।
কিন্তু এবারের নির্বাচনে সেই আসনগুলির মধ্যে যেসব বিধানসভা ক্ষেত্রে বিজেপি এগিয়ে ছিল, সেগুলির সবকটিও ধরে রাখতে পারল না তাঁরা।
অপরদিকে, ব্যারাকপুরে শেষ কথা বলতেন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। এবার তিনিও নিজেই তাঁর গড়ে প্রশ্নের মুখে পড়লেন। তাঁর লোকসভার সাতটি বিধানসভার মধ্যে ভাটপাড়া ও জগদ্দল ছাড়া বাকি পাঁচটি কেন্দ্রই তাঁর হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে। ব্যারাকপুর আজ আর অর্জুনের নিয়ন্ত্রণ নেই বলেই তৃণমূল এদিন থেকেই প্রচার শুরু করে দিয়েছে। বিগত লোকসভা নির্বাচনে ফল খারাপ হবার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে গড়া দল তৃণমূলের নেতাদের আচরণে অনেক পরিবর্তন আসে।
তৃণমূলের সঙ্গে সাধারণ মানুষের দূরত্ব ঘোচাতে প্রশান্ত কিশোরের দল নেতা ও কর্মীদের মাধ্যমে জনসংযোগ বাড়াতে থাকেন একের পর এক কর্মসূচির মাধ্যমে। উল্টোদিকে বিজেপির রাজ্য স্তর থেকে ব্লক স্তরের নেতারা ধরে নিয়েছিলেন, তাঁরা রাজ্যের ক্ষমতা দখল করবেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার আর রাজ্যে ফিরবে না তা তৃণমূলের একটি অংশের নেতা (যাঁদের একটি অংশের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ রয়েছে) দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিতে শুরু করেন। তাতে আদি বিজেপির নেতা ও কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়তে শুরু করে। যে নারদা-সারদা করা নিয়ে বিজেপি বাজার গরম করে ছিল সেই সব নেতাদের দলে ঢোকানোর পর বিজেপি নারদা সারদা নিয়ে বলার বদলে মুখে একপ্রকার কুলুপ আঁটে।
অপর দিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একের পর এক জনমূখী কর্মসূচির প্রচার ও নতুন কয়েকটি প্রকল্প চালু করায় ফের জনপ্রিয়তা অর্জন করতে থাকে তৃণমূল। তাছাড়া, আমফান থেকে লকডাউন চলাকালীন সময় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে জনকল্যাণে রাস্তায় নেমে পড়েন তাতে অনেক ধাপ এগিয়ে যায় দল। সাধারণ মানুষ আজ বিনে পয়সায় রেশন পাচ্ছেন, ব্লক অফিসকে গ্রাম পঞ্চায়েতে তুলে এনে দুয়ারে সরকারের কার্যক্রম যে ভাবে চালু করেন তাতে সাধারণ মানুষ দু হাত ভরে আশীর্বাদ করেন মমতাকে। উল্টো দিকে, এই কোভিডকালীন সময়ে যে ভাবে মোদী সরকার রান্নার গ্যাস,৷ কেরোসিন, ডিজেল, পেট্রোলের দাম বাড়িয়েছে তাতে মানুষ এমনই মুখ ঘোরায় বিজেপির থেকে।
প্রবল প্রতিরোধ নানান বাধাকে অতিক্রম করে
একুশের ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন একজনই। তিনি হলেন মা-মাটি-মানুষের মমতাময়ী মা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ধর্মের মাধ্যমে বিভাজন চায় না, সাধারণ মানুষ চায় উন্নয়ন। সেটাই ভোট বাক্সে প্রতিফলিত হল ২১ এ বিধানসভায়। সত্যিই, এ যেন “বাঘিনী একাই লড়াই করে রক্ষা করল বঙ্গ দুর্গ”—