ভোট পরবর্তী সময়ে সংক্রমণ রুখতে তৎপর রাজ্য প্রশাসন

HnExpress অরুণ কুমার, কলকাতা ঃ এদিকে শেষ হয়েছে বঙ্গের নিবার্চন। এরই মধ্যে কার্যত লকডাউনের পথে হাঁটলেন রাজ্য প্রশাসন। করোনা ভাইরাস রুখতে শুক্রবার একাধিক বিধিনিষেধ জারি করেছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, রাজ্যের সমস্ত স্পোর্টস কমপ্লেক্স, সুইমিং পুল, জিম, স্পা, রেস্তোঁরা, বিউটি পার্লার, সিনেমা হল বন্ধ করার নির্দেশ রয়েছে। ভোট শেষ হতেই করোনা সংক্রমণ রুখতে তৎপর হল রাজ্য প্রশাসন।
পুরোদস্তুর লকডাউন জারি না হলেও, শুক্রবার সন্ধ্যায় মুখ্যসচিবের জারি করা এই নির্দেশিকায় সংস্কৃতি, বিনোদন ও বানিজ্য ক্ষেত্রে একাধিক বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। সেখানে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য সমস্ত সিনেমা হল, শমিং মল, বিউটি পার্লার, রেস্তরাঁ, বার, ক্রীড়াঙ্গন, জিম, স্পা এবং সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ওষুধ বা মুদির দোকান খোলা থাকলেও অন্যান্য দোকানপাট এবং বাজার-হাট সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এবং বিকেলে ৩টে থেকে ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। যদিও ওষুধের দোকান ও মুদি দোকানের মতো জরুরি পরিষেবাগুলো এই নির্দেশিকার আওতার বাইরে থাকছে। হোম ডেলিভারি ও অনলাইন পরিষেবায় অনুমোদন রয়েছে। সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা এবং বিনোদনমূলক সমস্ত অনুষ্ঠান বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নবান্ন সুত্রের খবর, করোনা নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নির্দেশিকা মেনে এই সব বিধি নিষেধ জারি করা হয়েছে। যার অন্যথা হলে বিপর্যয় মোকাবিলা আইন ও ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুসারে প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নেবে বলেও জানানো হয়েছে নির্দেশিকায়। একই সঙ্গে এদিনের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে ভোট গণনার দিন নির্বাচন কমিশন যে সব গাইডলাইন দিয়েছে ভোট গণনার দিন পর্যন্ত তা অবশ্যই মেনে চলতে হবে সকলকেই।
সেই ক্ষেত্রে কোনও জমায়েত চলবে না, বিজয় মিছিল চলবে না, বিজয় উৎসব চলবে না। তবে এটিএম, ব্যাঙ্ক, আদালত, সরকারি, বেসরকারি অফিস খোলা থাকবে। তবে সরকারি অফিসে এখন যেমন ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে কাজ হচ্ছে তেমনি বেসরকারি ক্ষেত্রেও যতটা সম্ভব কম কর্মী নিয়েই কাজ করার আবেদন জানানো হয়েছে।
এই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে এই গুলিকে। অর্থাৎ পরবর্তী ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত এগুলি খোলা যাবে না, যা কার্যত লকডাউন জারিরই সমান। অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও জরুরি পরিষেবাগুলিকে আংশিক লকডাউনের আওতার বাইরে রাখা হচ্ছে। খোলা থাকবে মুদিখানা ও ওষুধের দোকান। এছাড়া বিয়ে বাড়ির উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এদিকে বাজার-দোকান সকাল ৭টা থেকে ১০টা এবং ৩টে থেকে ৫টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
তবে এই বিধিনিষেধ থেকে ছাড় দেওয়া হয়েছে জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী দোকান বা ওষুধের দোকান। জমায়েতের উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। এরই পাশাপাশি, এক সঙ্গে এক জায়গায় যাতে বেশি মানুষের ভিড় না হয়, তা নিশ্চিত করতে সব রকমের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও আপাতত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে হোম ডেলিভারির উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি।
এদিকে, আগামী ২রা মে বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগণনা করা হবে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে, ভোট গণনার পরবর্তী পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনেই চলতে হবে রাজনৈতিক দলগুলি। এখন দেখার বিষয় রাজ্য প্রশাসনের এই পদক্ষেপ ভোট পরবর্তী সময়ে এর কি প্রভাব পড়ে রাজ্যের মানুষের মধ্যে।