স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড থাকতেও মিলল না চিকিৎসা, অভিযোগ রোগীর পরিবারের

HnExpress প্রিয়দর্শী সাধুখাঁ, কলকাতা ঃ স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড থাকতেও মিলল না চিকিৎসা, অভিযোগ রোগীর পরিবারের। হাতে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড, তবুও ফিরিয়ে দিলো কলকাতার একটি নামী হাসপাতাল। সম্প্রতি এমনই অভিযোগ উঠলো হাসপাতালের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে। এদিন ভাঙড়ের শাকিলা বিবির ছেলে রবিউল ইসলাম কলকাতার একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মা’কে নিয়ে যান চিকিৎসা করাতে। রোগীর অবস্থা ভাল নেই, এদিকে সেই মুহূর্তে হাসপাতালে বড় হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞও নেই।
তাই চিকিৎসকদের পরামর্শে শাকিলা বিবিকে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান রবিউল ইসলাম। কিন্তু সেখানে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে জরুরি বিভাগে চিকিৎসা হবে না বলে শুনতে হয় তাঁকে। এবং তাঁকে জানানো হয় যে এখানে রুগীকে রাখলে চিকিৎসার খরচ বাবদ দৈনিক প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকার কমবেশি হবে। তাছাড়াও বহির্বিভাগেই দেখাতে হবে রোগীকে। পরীক্ষা, চিকিৎসকের ফি, পরীক্ষার খরচ কোনও কিছুতেই মিলবে না স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুযোগ সুবিধা।

কিন্তু রবিউল সেই মুহূর্তে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের হেল্পলাইন নম্বরে অধিকবার ফোন করলেও, সাড়া মেলেনি তার অভিযোগের। রবিউল ইসলাম বলেন ‘‘আমরা অসহায়, গরিব মানুষ, কী ভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে রোগীর চিকিৎসা করাবো? অথচ কার্ড থাকা সত্ত্বেও মায়ের চিকিৎসা করাতে পারছি না। বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি”। শাকিলা বিবি গত ১৯শে ডিসেম্বর ২০২০তে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন। এরপরেই তাঁর স্বাস্থ্যসাথী পরিবার কার্ড থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসা না পেয়ে বিডিও কার্তিক চন্দ্র রায়কে লিখিত ভাবে অভিযোগ করেন।
কার্তিক চন্দ্র রায় বলেন ‘‘এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সেইমতো ব্যবস্থাও নেওয়া হবে”। দুটি নামীদামী হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে রবিউল তাঁর মা’কে নিয়ে কলকাতার আরও একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। কিন্তু সেখানেও শয্যা না থাকায় মুমূর্ষু রুগীকে শুধুমাত্র প্রাথমিক চিকিৎসা ও কিছু ওষুধপত্র দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। কোনো প্রকার সুরাহা না পেয়ে রবিউল দ্বারস্থ হন কলকাতা পুলিশের।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষনা করেছিলেন যে রাজ্যের প্রায় ১০ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আসবেন। এবং সরকারি নিয়মানুযায়ী স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থাকলেই, যে কোনও সরকার অনুমোদিত সরকারি, কিছু কিছু উল্লেখিত নার্সিংহোম এবং বেসরকারি হাসপাতালে সর্বোচ্চ পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার পরিষেবা পাওয়া যাবে। জানা গেছে, কিন্তু কার্ডে বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার জন্য যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে, সেই মর্মে হাসপাতালগুলির বক্তব্য এত কম দামে নির্দিষ্ট মান বজায় রেখে পরিষেবা দেওয়া কখনই সম্ভব নয়।

ফলে ফিনান্সিয়াল দর নিয়ে হাসপাতালগুলি সরকারের সাথে আলোচনায় ব্যাস্ত। সুত্রের খবর, ফলতঃ এই কারণেই হয়রান হতে হয় রবিউল ও তাঁর পরিবারকে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি হাসপাতালের এগজিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট চৌধুরী মিলন মহাপাত্র বললেন, ‘‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে কী ধরনের পরিষেবা পাওয়া যাবে, তা নিয়ে আমাদের মিটিং চলছে ঠিকই। তবে এমন তো হওয়ার কথা নয়। যদিও এই বিষয়ে আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। তবুও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে”।