পরিযায়ী শ্রমিকদের বিষয়টি এখন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আওতায়
HnExpress ১৭ই মে, অরুণ কুমার ঃ পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশার বিষয়টি নিয়ে এবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে অভিযোগ জমা পড়লো। এই অভিযোগ জানিয়েছেন, অল ইন্ডিয়া লিগাল এইডস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। ফলতঃ পরিযায়ী শ্রমিকদের বিষয়টি তাই এখন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আওতায়। উল্লেখ্য যে গত ২৪শে মার্চ লকডাউনের ঘোষণা আচমকা হওয়ার ফলে বিভিন্ন জায়গায় দেশের একটা বড় সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিক আটকে পড়ে ছিলেন।
এবং কাজ না পেয়ে বা কর্মচ্যুত হয়ে যে যে এলাকার বাসিন্দা তাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে হাঁটা পথে রওনা দিয়েছেন। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে এই সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকরা বিভিন্ন জায়গায় খাদ্য, পানীয়, চিকিৎসার অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। অপরদিকে সরকারি অবহেলার শিকার হয়েছেন অনেকেই, কিছু পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ির ফেরা পথে রাস্তায় দুর্ঘটনার শিকারও হয়েছেন, কিংবা রেললাইনে প্রাণ হারিয়েছেন।
আবার কোথাও কোথাও পুলিশের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এই ধরনের ঘটনা পরিযায়ী শ্রমিকদের সাথে যেমন ঘটেছে, ঠিক তেমনিই আবার কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকরা যে এলাকায় দিয়ে যাচ্ছেন সেখানকার পুলিশ তাদের বাধা দিচ্ছে। সাথে আবার তারা পুলিশকে উৎকোচ দিতেও বাধ্য হচ্ছেন, এমনও অনেক ছবি ফুটে উঠেছে।
ঠিম এরকমই এক চরম পরিস্থিতিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান জাস্টিস বি ডি দাততু’র কাছে জয়দীপ মুখোপাধ্যায় বলেছেন যে, এই
চূড়ান্ত অমানবিকতার ও নানাভাবে সরকারি অবহেলার শিকার হয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা, এবং পাশাপাশি তারা খাদ্য, পানীয় জল ও বিনা চিকিৎসা সহ রাত্রিযাপনের জন্য আবাসের সমস্যারল মুখোমুখি হচ্ছেন।
এই বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হয়ে অল ইন্ডিয়া লিগাল এইডস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক তথা সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে অভিযোগপত্র দায়ের করেছেন যা জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ইতিমধ্যে গ্রহন করেছে। এই আবেদনে আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায় আরও বললেন যে, এই বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে দিয়ে যে জাতীয় সড়ক গুলি গিয়েছে তার পাশেই ৩ থেকে ৪ কিলোমিটার অন্তর অন্তর লঙ্গরখানা করে এই সমস্ত শ্রমিকদের দুপুরের আহার পানীয়জল, শিশুদের খাদ্য ও মহিলাদের জন্য বায়ো টয়লেটের ব্যবস্থা করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
যে সমস্ত রাজ্যগুলির উপর দিয়ে জাতীয় সড়ক এর পথ গেছে সেই সমস্ত রাজ্যগুলির যারা মুখ্যসচিব রয়েছেন তাদেরকে এই বিষয়ে নির্দেশ দেওয়ার জন্য তিনি কমিশনের কাছে অনুরোধ করেছেন। এভাবে তাদেরকে সাহায্য করা হোক, এতে বেশি খরচ হবে না কিন্তু আর যাই হোক শ্রমশক্তি বা শ্রমিকদের প্রাণ বাঁচানো যাবে। আগামী দিনে যে শ্রম সংকটের মুখোমুখি হতে চলেছে এর ফলে আমাদের শ্রমিক শক্তির তার অনেকটাই সংরক্ষণ করা সম্ভব হবে বলে একথা তিনি প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ওয়েবসাইট সূত্রে জানা গিয়েছে যে আবেদনপত্রটি গ্রহণ করা হয়েছে এবং এখন দেখার বিষয় যে এক বিষয়টি নিয়ে মানবাধিকার কমিশন কী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চলেছে! পরিযায়ী শ্রমিকদের রিলিফের বিষয়টি এখন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আওতাধীন।