বিমল গুরুংয়ের পাহাড়ে প্রত্যাবর্তনের বিরোধিতার আবহে শৈল শহরে রাজ্যপাল ধনকর
HnExpress ১লা অক্টোবর, অরুণ কুমার, দার্জিলিং ঃ রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র সাথে বিস্তারিত কথা বলেছেন এবং তারপরই কলকাতায় ফিরে শনিবার এক মাসের জন্য সস্ত্রীক পাহাড় সফরে এলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। পাহাড় রাজনীতির নতুন সমীকরণের মাঝে রাজ্যপালের এই সফর তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এদিন সন্ধ্যায় বিশেষ ট্রেনে করে তিনি এনজেপি স্টেশনে এসে পৌঁছান। শিলিগুড়িতে স্টেট গেস্ট হাউসে রাত কাটিয়ে রবিবার সকালেই তিনি দার্জিলিঙের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
এদিন এনজেপি’তে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যপাল নির্বাচন পরিচালনা ও আইন মেনে চলার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের উঁচুতলার কর্মীদের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘একজন সরকারি কর্মচারী কখনই রাজনৈতিক ভাবে প্রভাবিত হয়ে কাজ করতে পারেন না। কিন্তু রাজ্য সরকারে কিছু আইএএস এবং আইপিএস অফিসাররা বার বার সেই ভুলটাই করছেন। এতে দেশের গণতন্ত্রের উপর কুঠারাঘাত করা হচ্ছে। আইনের থেকে কেউ বেশি শক্তিশালী নয়।
রাজ্যে অবাধে ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনের জন্য একজন রাজ্যপাল হিসেবে আমি এসব নোংরা রাজনীতি কোনওাবেই বরদাস্ত করবো না। গতকাল শনিবার মালদহ ও এনজেপিফ রেল স্টেশনে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নোত্তরের জবাবে রাজ্যপাল বলেন, ভারতবর্ষে পরিবর্তন আসছে।কিছু দিন আগেই কাশ্মীরে ৩৭০ ধারার জটিলতা দূর হয়েছে। ১৯৭০ সালে কেউ কি এটা ভাবতে পেরে ছিলেন? তারপর আজ রামমন্দির তৈরিও হয়েছে। কাজেই আইনের মাধ্যমেই সমস্ত কঠিন সমস্যারই সমাধান হবে।
এদিকে, বিমল গুরুঙ্গ প্রকাশ্যে এসে বিজেপি-র সঙ্গ ছেড়ে মমতা বন্দ্যোপাধায়কে ফের মু্খ্যমন্ত্রী নির্বাচিত করার আহ্বান জানিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করার কথা ঘোষণা তো করেছেনই। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নাম করে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগও করেছেন বিমল গুরুঙ্গ। এরপর থেকেই পাহাড়ে বিনয় তামাং পন্থী মোর্চা বিমল গুরুঙ্গের পাহাড় আসার বিরোধিতায় প্রতিদিনই মিটিং মিছিল করে বিমল গুরুঙ্গ গো ব্যাক স্লোগান দিচ্ছে।
এদিনও কার্শিয়াং ও মিরিকে বিনয় পন্থীরা একই ধরনের মিছিল করে শক্তি প্রদর্শন করেছে। সুত্রের খবর, এই আবহে বিনয় তামাং ও অনিত থাপাকে কলকাতায় তলব করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়। আর পাহাড়ে রাজ্যপাল থাকাকালিন বিনয় তামাং ও অনিত থাপার সঙ্গে ৩রা নভেম্বর কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রীর এই বৈঠক বেশ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি পাহাড়ের রাজনীতিতে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন চোখে পড়ছে।
একসময় বিজেপি তথা এনডিএ’র বন্ধু প্রাক্তন গোর্খা জনমুক্তি নেতা বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে পৃথক গোর্খাল্যান্ড রাজ্য ইস্যুতে সম্পর্ক ছিন্ন করে ছিলেন এবং তিনি ঘোষণা করে ছিলেন যে, আগামী নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে থাকবেন। রাজ্যপাল যখন দার্জিলিং আসলেন ঠিক তখন অন্যদিকে বিমল গুরুংয়ের বিরোধিতায় উত্তাল হয়ে উঠেছে সমগ্র পাহাড়। এমন অবস্থায় পাহাড়ের পরিস্থিতি কোন দিকে এগোয় তার উপর নজর রাখছে বিশেষ ওয়াকিবহাল মহল।