জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন তিস্তা নদী পাড়ের বে-আইনি অবৈধ নির্মাণ ভাঙলো প্রশাসন
HnExpress অরুণ কুমার, শিলিগুড়ি ঃ উত্তরবঙ্গের বিভাগীয় শহর জলপাইগুড়ি সংলগ্ন তিস্তা নদী পাড়ের অবৈধ নির্মাণ ভাঙলো জেলা প্রশাসন। কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের নির্দেশে শহর সংলগ্ন পঞ্চায়েত এলাকায় তিস্তা নদীচর থেকে অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ সম্পন্ন করলো প্রশাসনিক বিভাগ। বুধবার সকাল থেকেই জুবিলী পার্ক সংলগ্ন নদীচর জবরদখল মুক্ত করতে অভিযানে নামে প্রশাসন ও পুলিশ।
ভাঙা পড়ে অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠা কয়েকটি রেঁস্তোরা ও বেশ কিছু বসতবাড়িও। এদিনের অভিযানে নেতৃত্ব দেন সদর মহকুমা শাসক সুদীপ মিত্র। সাথে ছিলেন ডিএসপি সমীর পাল, কোতয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার, সেচ দপ্তরের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার শান্তনু ধর প্রমুখ। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে হাজির ছিল বিশাল পুলিশবাহিনী ও র্যাফ।
এদিন অবৈধ নির্মাণ ভাঙা শুরু হতেই স্থানীয়রা তাদের গবাদী পশু ও নিত্য ব্যবহৃত সামগ্রী সরিয়ে নিয়ে যান। অনেক মহিলাকেই কাঁদতে দেখা যায়। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, জুবিলী পার্কে বিচারপতিদের বাংলো হওয়ার সময় কয়েকটি কাঁচা বাড়ি ভাঙা পড়েছিল। তাঁরাই এখানে এসে ঘর বানিয়ে ছিলেন। ফের তাদের উচ্ছেদ করা হল। প্রশাসন আরও বেশি সময় দিলে তাঁদের সকলের সুবিধা হত।
উল্লেখ করা যেতে পারে যে, মঙ্গলবার সার্কিট বেঞ্চের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ এ বিষয়ে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে। এরপর এদিন প্রায় সাত সকালেই অভিযান চালায় প্রশাসন।করোনাকালে গভীর রাত পর্যন্ত তিস্তাচরে থাকা অবৈধ রেস্তোরাগুলোতে ব্যাপক জনসমাগম হত বলে অভিযোগ। এর ফলে সংক্রমণের আশঙ্কাও ছিল জনমানসে। এছাড়া তিস্তাচরের ওই অবৈধ রেস্তোরাঁগুলো নিয়ে শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ ছিল দীর্ঘদিনেরই।
তিস্তা নদীর বাঁধের ওপর দিয়ে বেপরোয়া বাইক চালনার অভিযোগও রয়েছে। অত্যধিক জনসমাগম ও কোলাহলে পরিযায়ী পাখিদের সমস্যা হচ্ছিল বলেও অভিযোগ। এ বিষয়ে স্যুয়ো-মুটো মামলাও করে আদালত। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ রায় দান করেন। জানা গিয়েছে, ২৪ ঘন্টার মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করে বুধবারই প্রশাসনকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। তিস্তা নদী ও চরের প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে ও করোনা সংক্রমণ রুখতেই আদালত এই নির্দেশ দিয়েছেন।
এই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল এলাকায় ব্যাপক প্রচার চালানো হয়। এরপরই এদিন সকালে অভিযানে নামে প্রশাসন। যদিও এই বিষয়ে এদিন সকালে কোন মন্তব্য করতে চাননি সদর মহকুমাশাসক। তবে প্রশাসন সূত্রের খবর, আদালতের নির্দেশ মেনেই এই কাজ পালন করছেন তাঁরা।