কিনডি রোগাক্রান্ত মৃতা মহিলা ছিলেন করোনা পজিটিভ, চাঞ্চল্য ছড়ায়ে বরাহনগরে
HnExpress ১৫ই এপ্রিল, ঝুম্পা দেবনাথ, দমদম ঃ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়ে বরানগরের এক মহিলার। কারণবশত, মৃতা মহিলা ছিলেন করোনা পজিটিভ, রিপোর্ট অনুযায়ী পজিটিভের খবর প্রকাশ পেতেই চাঞ্চল্য ছড়ায়ে বরাহনগর অঞ্চলে। এদিকে হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে, বরানগরের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে রামকৃষ্ণপুরম নামে একটি হাউসিংয়ে থাকতেন আক্রান্ত মহিলাটি। সরকারি অপদার্থতা ও অবহেলার ফলে নাকি যথেষ্ট পরিমাণ টেস্ট হচ্ছে না, যার ফলেই এই সংক্রমণের ব্যাপকতা বোঝা যাচ্ছে না বলে এমনটাই মন্তব্য করেছেন বাম সাংসদ তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষকে শুধু ঘরবন্দি করেই হতাশা বাড়িয়ে তুলছে সরকার। ঘরে ঘরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস না পৌঁছে দিলে মানুষ তো রাস্তায় নামবেই। আর অসংগঠিত শিল্পের শ্রমিকদের হাতে পয়সা না দিলে তাঁরা বাঁচবে কী করে? এরই পাশাপাশি মারাত্মক অসহায়তার মধ্যে কাজ করে চলেছেন সমস্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁদের নিরাপত্তার সরঞ্জাম টুকুও ঠিকঠাক দেওয়া হচ্ছে না। কেরল সরকার যা করতে পারে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন পারছে না তা? এমনই বহু ধরনের প্রশ্ন তুলেছেন বিকাশবাবু।
এদিকে করোনা সতর্কতায় যখন গোটা দেশ লকডাউনের আওতায়, তখন রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অংশের বেশ কিছু জায়গা হটস্পট এরিয়া হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তারই মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার দমদমের বরানগর পুরসভার ২৮ ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডকেও হটস্পট এরিয়া হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। কিন্তু তার মধ্যেই ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের রামকৃষ্ণপুরম অ্যাপার্টমেন্টের একজনের মৃত্যু হওয়ায় এলাকায় ব্যাপক পরিমাণ ভীতি ও চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। সূত্রের খবর, ৬২ বছর বয়সী এই ভদ্রমহিলা দীর্ঘদিন কিডনির রোগে ভুগছিলেন। চলছিল কিনডির ডায়ালাইসিস।
তার বাড়ির লোকজন তাঁকে এদিন ভিআইপির কাছে চাণক্য হাসপাতালে ভর্তি করেন ডায়ালাইসিসের জন্য। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরেই তাঁর লালা রসের পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ পাওয়ায় তাঁকে তড়িঘড়ি মেডিক্যাল কলেজে রেফার করেন তারা, ভর্তি করা হয় মেডিক্যাল হাসপাতালে। জানা গেছে তিনি বিগত ১২ দিন ধরে খুবই অসুস্থ ছিলেন। এরপরই চাণক্য হাসপাতালটিকে সম্পুর্ন ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপরে যখন তিনি মারা যান তখন সেখানকার ডাক্তাররা তাঁর পরীক্ষার রিপোর্টে দেখেন যে তিনি করোনা পজিটিভ ছিলেন।
প্রসঙ্গত, তিনি ও তাঁর স্বামী এবং ওই একই অ্যাপার্টমেন্ট তাঁর কন্যা ও জামাইও থাকতেন এক সাথে। তাঁর মৃত্যুর পর স্বামী ও জামাইকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কোয়ারেন্টাইনে এবং কন্যা ও নাতনিকে হোম আইসোলেশনে রাখা হয়েছে বলে সুত্রের খবর। কাল মঙ্গলবার সকাল সকাল রামকৃষ্ণপুরমের পুরো অঞ্চলকেও সম্পূর্ণ ভাবে স্যানিটাইজেশন করা হয়। কিন্তু তাতেও এলাকার বাসিন্দারা চিন্তিত আগামী দিনে কি ২৯ নম্বর ওয়ার্ডকেও হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত করা হবে? সেটাই এখন তাঁদের কাছে বড় প্রশ্ন! এবিষয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিন্দ্য চৌধুরীর সঙ্গে। কিন্তু তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।