ঈদুজাহা উপলক্ষে পথভিক্ষুকদের নতুন বস্ত্র প্রদান পুলিশ প্রসাশনের


HnExpress নিজস্ব প্রতিনিধি, পূর্ব বর্ধমান : ওরা ভিক্ষা করে মানুষের দুয়ারে, বা দোকানে-দোকানে। কেউ বা দু’টাকা, পাঁচটাকা দেয়, কেউ তাও দেয় না। কারও কাছে দুপুরে খাওয়ার অনুরোধ জানালে তারা খাইয়ে আন্তরিক তৃপ্তি পায়। কেউবা অপমান করে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়। হ্যাঁ, এরা পথভিক্ষুক। বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছে। হয়তো নিজের বাড়ি থেকেই বিতারিত, সন্তান ভাত দেয় না, নতুন বস্ত্র তো দূর অস্ত। অন্যরা যখন উৎসবে নতুন নতুন জামাকাপড় পরে ঘুরে বেড়ায় মহা-আনন্দে, এরা তখন কঠিন বাস্তবতাকে নীরবেই মেনে চোখের জল লুকায়। ঠিক এহেন পেক্ষাপটে পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের মানবিক উদ্যোগের মঙ্গলকোট থানার এই কর্মকান্ড যথেষ্ঠ প্রশংসণীয়।

রবিবার দুপুরে মঙ্গলকোট থানা চত্বরে দুশোর বেশি সংখ্যালঘু পথভিক্ষুকদের বস্ত্র তুলে দিল মঙ্গলকোট থানার পুলিশ। এদিন মঙ্গলকোট ব্লকের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকার সিভিক – ভিলিজ পুলিশদের তদারকিতে তাঁদের কে বাড়ি থেকে টোটোয় চাপিয়ে আনা হয় থানায়। মহিলাদের শাড়ি,পুরুষদের লুঙ্গি সহ অন্যান্য বস্ত্রসামগ্রী তুলে দেন মঙ্গলকোট থানার আইসি মধুসূদন ঘোষ মহাশয়। আইসি সাহেব জানান -” পুলিশের সামাজিক কাজকর্মের মধ্যে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ানোটা অন্যতম বলে মনে করি”। পুলিশের এহেন মানবিকতায় আপ্লূত পথভিক্ষুকরা।

তাদের মধ্যেই আনিকা বিবি, ঈদু সেখ প্রমুখ জানিয়েছেন— পবিত্র রমজান শেষে ঈদের নুতন পোষাক পেয়ে আমরা খুশি। নতুন বড়বাবু আমাদের কথা ভেবেছেন, তাতে আমরা কৃতজ্ঞ”। এদিন বিকেলে মঙ্গলকোট গ্রামের কারিগর পাড়ায় মাজার শরিফে বিশাল ইফতার মজলিসের আয়োজন করা হয়। ছয়শো’র বেশি ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি এই ইফতারে যোগ দেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মঙ্গলকোট থানার আইসি মধুসূদন ঘোষ। তিনি তাঁর বার্তায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মেলবন্ধন অটুট রাখতে সংহতির আবেদন জানান প্রত্যেক এলাকাবাসীর কাছে। ইফতার মজলিসে উপস্থিত সকলে জানান, আমরা ভেদাভেদকারী সমাজ চাইনা। আমরা চাই ‘মোরা একই বৃন্তের দুটি কুসুম হিন্দু-মুসলমান/ মুসলিম তার নয়ন-মণি হিন্দু তাহার প্রাণ’ হয়েই বরাবরের মত একসাথে থাকতে”।