আনলক ওয়ানের চতুর্থ দিনেও চাকা ঘুরলো না বেসরকারি বাসের
HnExpress ৪ঠা জুন, নিজস্ব প্রতিনিধি, উওর ২৪ পরগনা ঃ আনলক ওয়ানের চতুর্থ দিনেও চাকা ঘুরলো না বেসরকারি বাসের ক্ষেত্রে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আনলক ওয়ানে বলে ছিলেন কনটেইনমেন্ট জোন ছাড়া ৭০% কর্মীদের নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি অফিস খোলা হবে, আর কর্মীদের সপ্তাহে ৩ দিন উপস্থিত থাকতেই হবে। এবং তার জন্য সরকারি বাসের যত আসন তত জন যাত্রী নিয়েই বাস চলবে।
মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশবানী অনুযায়ী কর্মীরা এদিন অফিস যাওয়ার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়েন এবং কম সংখ্যক বাস চলাচল করার জন্য বাস যাত্রীদের পড়তে হয়েছে চরম ভোগান্তিতে। বাস কম থাকার জন্য প্রথমত লম্বা লাইনে বাসের জন্য প্রতীক্ষা করতে হয়েছে যাত্রীদের। অনেকে আবার সঠিক সময় পৌঁছতেই পারছেন না অফিসে। আনলক ওয়ানের তৃতীয় দিনেও এই চিত্রের ব্যতিক্রম ছিল না। এই ভোগান্তির জন্য অনেকেই বেসরকারি বাসের প্রয়োজন আছে বলে মনে করে ছিলেন।
আর এই প্রয়োজন থেকেই বেসরকারি বাসের ভাড়া ঠিক করার জন্য রেগুলেটরি কমিটির সাথে এদিন পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর ইতিবাচক আলোচনা হয়। এই আলোচনায় ঠিক হয়েছিল যে আনলক-ওয়ানের চতুর্থ দিন থেকে পুরোনো ভাড়ার নিরিখে বেসরকারি বাস রাস্তায় নামবে। বৈদ্যুতিন যন্ত্রের মাধ্যমে এই খবর সম্প্রচারিত হতেই ভোগান্তি প্রাপ্ত বাসযাত্রীরা তো যারপরনাই খুশি। কিন্তু পরের দিন সকালে রাস্তায় বেসরকারি বাস না চলাচলের জন্য সেই আনন্দিত বাসযাত্রীদের মুখে ফুটে ওঠে হতাশার ছাপ।
লেকটাউনে অপেক্ষারত এক বাসযাত্রী জানান, তিনি গত কয়েকদিনের মতো সকাল ৮ টা থেকে অপেক্ষা করছেন বাসের জন্য। কিন্তু ঘড়ির কাঁটা সকাল ৯টা বাজলেও বেসরকারি বাসের তো দেখাই নেই, এবং সরকারি বাসেরও আসন সংখ্যা বাসযাত্রী দ্বারা পূর্ণ থাকায় উঠতে পারছে না বলে জানান তিনি। ডানলপ বাস স্ট্যান্ডেও গত কয়েক দিনে এই একই চিত্র উঠে এসেছে। সামাজিক দূরত্বকে শিকেয় তুলে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন প্রায় ১০০ জন বাসযাত্রী।
লম্বা লাইনে প্রতীক্ষারত এক বাসযাত্রী জানান, তিনি ঘন্টা-দুয়েক ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন। সরকারি বাসের সংখ্যা খুবই কম, আর কোনো বেসরকারি বাস চলছে না বলেই জানান তিনি।
শুধু শহরতলি নয় জেলায় জেলায় ধরা পড়েছে এই একই চিত্র। মুর্শিদাবাদে অপেক্ষারত এক বাসযাত্রী জানান, তিনি ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করার পরেও বেসরকারি বাসের দেখা পাননি এবং কম সংখ্যক সরকারি বাসের আসন যাত্রী দ্বারা পূর্ণ থাকায় উঠতে পারছেন না সরকারি বাসেও।
মুখ্যমন্ত্রীর আনলক ওয়ানের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে তুঙ্গে। মানুষের এই চরম ভোগান্তির কথা ভেবে, এদিন সমালোচনার সুর সপ্তমে রেখে বামফ্রন্ট নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বাংলার মানুষকে গিনিপিগের মতো ব্যবহার করছেন। তিনি আরও বলেন যে, আগে অফিস-কাছারী নয়, আগে বিধানসভা খোলা হোক।
বেসরকারি বাস চলাচলের সিদ্ধান্ত ঠিক হওয়ার পরেও তবে কেন রাস্তায় বেসরকারি বাসের দেখা মিলল না? একদিকে ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতিতে, অন্যদিকে সামাজিক দূরত্বকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে লম্বা লাইনে বাসের জন্য প্রতীক্ষারত মানুষজন, তাহলে এই বিভ্রান্তিমূলক পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাবেন কবে? এই রকম সংশয়মূলক প্রশ্নে মুখর হয়েছে বিরোধী মহলের একাংশ।