খুন নাকি আত্মহত্যা? ধন্দে সবাই, পুলিশের হেপাজতে নতুনপুকুর রামকৃষ্ণ সেবা মিশনের মহারাজ
HnExpress প্রিয়দর্শী সাধুখাঁ, কলকাতা ঃ নিউটাউনে নতুনপুকুরে রামকৃষ্ণ সেবা মিশনের রাঁধুনির অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় মহারাজকে গ্রেফতার করল টেকনোসিটি থানার পুলিশ। ধৃত মহারাজের নাম স্বামী হরিমায়া নন্দ। শুক্রবার সকালে ওই মিশনে রাঁধুনির মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় নিউটাউনের নতুনপুকুর এলাকার রামকৃষ্ণ সেবা মিশনে। ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করে পুলিশ। বাসিন্দাদের মতে রোহিত হালদার নামে ওই রাঁধুনিকে খুন করা হয়।
আবার এটাও শোনা যায় যে আশ্রমের মহারাজের অত্যাচারের জেরেই নাকি আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে রোহিত। তাদের অভিযোগ, এই আশ্রমের মহারাজ ও তাঁর সহকর্মীরা মিলেই আত্মহত্যায় দীর্ঘদিন ধরে প্ররোচনা দিয়েছে নিহত রোহিত নামের ছেলেটিকে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা ধারণ করে নিউটাউন এলাকা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ, তার ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয় টেকনোসিটি থানা।
এদিন স্বামী হরিমায়া নন্দকে এক প্রকার ঘাড় ধাক্কা দিয়ে মিশন থেকে বার করে আনতে দেখা যায় স্থানীয়দের, যেটি এক প্রকার আইন বিরোধী বলে মনে করছেন বহু মানুষ। কারণ আইনি ভাবে দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত কাউকেই দোষী বলা যায় না। স্থানীয় এলাকার বাসিন্দারা বলেন যে, শুক্রবার সকালে রামকৃষ্ণ সেবা মিশনের ওই রাঁধুনিকে ডাকাডাকি করার পরেও কোনও সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। এরপরই তাঁর ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকা হয়।
তখন ঘরের ভিতর তাঁর দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়। বাসিন্দাদের মতামত অনুযায়ী এটা আত্মহত্যা নাকি খুন? তার সঠিক উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে ধৃত স্বামী হরিময়ানন্দ মহারাজের বক্তব্য থেকে জানা যায়, “২০ তারিখে কিছু টাকা আমাদের এখান থেকে মিসিং হয়ে ছিল। ওই টাকা মিসিং হওয়ার পরে আমরা দুটো ছেলেকে সন্দেহ করেছিলাম। তাদের সঙ্গে কথাও বলা হয়েছিল। এরপর ওদেরকে যাঁরা পাঠিয়েছিল তাদেরকেও আমরা জানিয়েছিলাম বিষয়টা।
তাঁরা এসে তদন্তও করে যায়। কিন্তু তারপরেও কোনও সমাধান সূত্র বেরোয়নি। এদিকে এই চুরির ঘটনা নিয়ে ওদের সঙ্গে কথা চলতে থাকে। কিন্ত এরপর এদিন সকালে আচমকাই এই দূর্ঘটনার খবর পাই আমরা।” অন্যদিকে বাসিন্দাদের মতে “মহারাজরা বলছেন ছেলেটি গলায় দড়ি দিয়ে মারা গিয়েছে। কিন্তু তাঁরাই পিটিয়ে মেরেছে, নাকি আত্মহত্যা করে মরেছে তা কিন্তু কেউ এখনো জানতে পারেনি। আমরা মহারাজকে গ্রামে থাকার জায়গা দিয়েছিলাম। গ্রামের উন্নতি করবেন বলে। আমরা একটি কমিটিও করেছিলাম, একাধিক উন্নয়নমূলক কাজের জন্য।
কিন্তু কোনও সমস্যা বা কোনও বিষয় নিয়েই এই কমিটির সাথে কোনও আলোচনা করা হয় না। আজ আচমকাই এই ঘটনা ঘটে গেল।” সুত্রের খবর, এর আগেও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সরিষা রামকৃষ্ণ মিশনে একদল মুসলিম দুষ্কৃতী মিশনের সামনের জমি দখল করে ঘর বানানোর চেষ্টা করে। মিশনের মহারাজ ঘর নির্মাণ করতে বাধা দিলে সেই মহারাজকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার পাশাপাশি ধাক্কাও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘সরিষা রামকৃষ্ণ মিশনের চারপাশে পাঁচিল দেওয়া রয়েছে।
সরিষা-রায়চক যাওয়ার রাস্তার ধারে পাঁচিলের পাশেই ছাত্রীদের হোস্টেলও রয়েছে। হঠাৎই একদিন দেখা যায়, পাঁচিলের ধারে নিকাশি নালা বুজিয়ে ফেলে সেখানে অবৈধ ঘর তৈরি করা হচ্ছে। স্থানীয় মুসলিম দুষ্কৃতীদের নেতৃত্বে পলিথিন পেপার দিয়ে ঘিরে ঘর তৈরির কাজ করা হচ্ছিল।’ শুক্রবার রাতেই ছেলেটির পরিবারের তরফ থেকে ওই মহারাজের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করা হয়। রাতেই মহারাজকে গ্রেফতার করে নিউটাউন থানার পুলিশ। শনিবার তাঁকে বারাসত আদালতে পেশ করা হয়।