ছেলেকে খুন করে থানায় আত্মসমর্পণ মায়ের, চাঞ্চল্য নরেন্দ্রপুরে

HnExpress ইন্দ্রাণী সেনগুপ্ত, বারুইপুর ঃ ৮ বছরের ছেলেকে খুন করে আত্মসমর্পণ মায়ের! বারুইপুর এর নরেন্দ্রপুরের ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য এলাকা জুড়ে। ১৮ই জানুয়ারি ছেলেকে খুন (Murder) করে থানায় আত্মসমর্পণ করে মা। শনিবার এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বারুইপুরের নরেন্দ্রপুর থানার খেয়াদহের মৌলিহাটিতে। অভিযুক্তকে সঙ্গে করে পুলিশ বডি শনাক্তকরণের জন্য এলাকায় গেলে রীতিমতো উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এলাকার ক্ষিপ্ত মানুষ অভিযুক্তের উপর চড়াও হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ করার আদেশ দিতে হয়। তারপর ভীড় কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।
স্থানীয় সূত্র থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, মৌলিহাটির (Moulihati) বহু পুরনো বাসিন্দা এই মাছ ব্যবসায়ী প্রসেনজিৎ মণ্ডল ও তার স্ত্রী তনুজা মণ্ডল। তাদের দু’টি পুত্র সন্তান ছিল৷ স্থানীয়দের অভিযোগ, ছোট ছেলের বয়স যখন দেড় বছর তখন তার হটাৎই মৃত্যু হয়, সেই সময়েও মায়ের বিরুদ্ধেই খুনের অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু অকাট্য প্রমাণের অভাবে তা আর পুলিশ বা আদালত অব্দি পৌঁছায়নি। এবার মৃত্যু ঘটলো বড় ছেলে দেবজিৎ মণ্ডল (৮) এর। কাছের প্রাথমিক স্কুলেই তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ত সে। শনিবার সকালে প্রসেনজিৎ মাছ ব্যবসার কাজে বেরিয়ে যান। বাড়িতে ছেলেকে নিয়ে একাই ছিল তনুজা। দেবজিতের ঠাকুমা সকাল আনুমানিক ১০টা নাগাদ আসেন নাতির খোঁজ খবর নিতে। সেইসময় বাড়িতে ছিল না দেবজিতের মা।
প্রতিবেশীদের কাছেও জিজ্ঞাসা করেন দেবজিতের ঠাকুমা ও তার জ্যেঠু। আর খুঁজতে খুঁজতে বিছানার মধ্যে কম্বল চাপা অবস্থায় দেবজিতের নিথর দেহ দেখতে পান তাঁরা৷ গলায় ফাঁসের চিহ্ন পরিস্কার। ততক্ষণে মা তনুজা মণ্ডল নরেন্দ্রপুর থানায় নিজে থেকেই আত্মসমর্পণ (Surrender) করে নিয়েছে খুনের কথা স্বীকার করে৷ থানার অফিসাররা তাকে জিজ্ঞাসা করে, সে কেন নিজের ছেলেকে খুন করেছে, আর দেহটাই বা কোথায়? কিন্তু কেন এমন একটি ঘৃণা অপরাধ করলেন নিজের সন্তানের সাথে সে ব্যাপারে শত প্রশ্নতেও মুখ খোলেনি অভিযুক্ত। বাধ্য হয়ে তাকে সঙ্গে করে পুলিশ মৌলিহাটির বাড়িতে যায় দেহ উদ্ধার করতে৷ যেখানে যেতেই প্রতিবেশী মহিলারা অভিযুক্তকে দেখে আক্রমণ করেন৷
লাঠিচার্জ করে পুলিশ সেই ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। খুনের আসল কারণ জানতে নাবালকের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের (Postmortem) জন্য পাঠানো হয়েছে ইতিমধ্যেই। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বারুইপুর থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন বারুইপুর জেলার পুলিশ সুপার পলাশ চন্দ্র ঢালি (Palash Chandra Dhali)। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে না এলে সেভাবে কিছুই বলা সম্ভব নয় এখনই। রবিবার অভিযুক্ত মহিলাকে বারুইপুর মহকুমার স্পেশাল আদালতে হাজির করানো হবে৷