পিসি শাশুড়ির দেহ টুকরো করে ট্রলিতে ভরে লোপাট করার চেষ্টা বৌমার, আহিরীটোলা কান্ডে প্রকাশ্যে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য

HnExpress ইন্দ্রাণী সেনগুপ্ত, কলকাতা ঃ সকাল সকাল হাড়হিম করা কান্ড কলকাতার আহিরীটোলা (Aahiritola) ঘাটে। মুন্ডুহীন দেহ টুকরো করে ট্রলি ব্যাগে ভরে তা লোপাটের চেষ্টা। এই অবস্থায় দুজন মহিলাকে আটক করেছে পুলিশ। সুত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগণার মধ্যমগ্রাম (Madhyamgram) থেকে ট্রলিতে টুকরো করা দেহ ভরে ট্রেনে চেপে কলকাতায় নিয়ে আসে দুই মহিলা।
সেখান থেকে আহিরীটোলার ঘাটে গঙ্গায় ট্রলি ব্যাগটি ভাসিয়ে দিয়ে দেহ লোপাটের চেষ্টা করার সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে ধরা পরে যায়। যার জেরেই প্রায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় আহিরীটোলার কুমোরটুলি ঘাট। পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করে তদন্ত শুরু করেছে, এর পিছনে আর কারুর হাত আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী কর্মকর্তারা (investigation officers)।
মঙ্গলবার সকাল সকাল কুমোরটুলি (Kumartuli) ঘাট থেকে একটি ট্রলিতে কাটা দেহ সহ গ্রেপ্তার হয় দুই মহিলা। ধৃত আরতি ঘোষ এবং ফাল্গুনী ঘোষ সম্পর্কে মা-মেয়ে। পুলিশ সুত্রে খবর, মৃত সুস্মিতা ঘোষ (৫৫) সম্পর্কে ফাল্গুনীর পিসি শাশুড়ি। মায়ের সাথেই পরিকল্পনা করে পিসি শাশুড়িকে খুন (Murder) করা হয়েছে। এদিন আহিরীটোলা কান্ডে দেহ উদ্ধারে সামনে এলো বেশকিছু নয়া তথ্য।

জানা গেছে, পিসি শাশুড়ি আর বৌমার মধ্যে তুমুল ঝগড়ার মুহূর্তে ইট দিয়ে থেঁতলে খুন (Murder) করা হয়। কিন্তু দেহ কী ভাবে সরানো যায়? অবশেষে অনেক ভেবেচিন্তে ফাল্গুনী ঘোষ, মা আরতি ঘোষের সাহায্যে মৃত শাশুড়ির গোড়ালি কাটে বঁটি দিয়ে। এরপর সেই টুকরো করা দেহ ট্রলিতে তুলে গঙ্গার ঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয় মা ও মেয়ে। কুমোরটুলি ঘাটে দেহ উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে এমনই কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য (Information)।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে এসেছে একের পর এক শিউরে ওঠা নয়া তথ্য। জানা গিয়েছে, ফাল্গুনীর সঙ্গে দীর্ঘদিন বনিবনা ছিল না তার স্বামীর। তার শ্বশুরবাড়ি পূর্ব বর্ধমানের (East Burdwan) নাদনঘাটে। গত কয়েক বছর ধরে মধ্যমগ্রাম পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বীরেশ পল্লিতে (Viresh Pally, Madhyamgram) বাড়ি ভাড়া নিয়ে একাই থাকত ফাল্গুনী। গত ১১ই ফেব্রুয়ারি মেয়ের কাছে এসেছিল মা আরতি ঘোষ। পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার ফাল্গুনীর বাড়িতে গিয়েছিলেন তাঁর পিসি শাশুড়ি সুস্মিতা।
কিন্তু কেন তিনি হটাৎ বৌমার কাছে গিয়েছিলেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে তদন্তকারীদের অনুমান, ফাল্গুনীই হয়তো ফোন করে তাঁকে ডেকেছিল।সোমবার বিকেল ৪টে নাগাদ শাশুড়ি সুস্মিতার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়ে ফাল্গুনী। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সেই সময়েই দেওয়ালে ধাক্কা লেগে অজ্ঞান হয়ে যান সুস্মিতা। পরে তাঁর জ্ঞান ফিরলে ফের ফাল্গুনীর সঙ্গে তাঁর হাতাহাতি শুরু হয়। সেই সময়েই ইট দিয়ে শাশুড়ির ঘাড়ে এবং মুখে আঘাত করে ফাল্গুনী। যার দরুন মৃত্যু হয় তার।
কিন্তু সুস্মিতার দেহ কী ভাবে লোপাট করা হবে? তা নিয়ে বেশ ধন্দে পরে যায় মা ও মেয়ে। এরপর অনেক ভেবেচিন্তে বঁটি দিয়ে কাটা হয় পিসি শাশুড়ির পায়ের গোড়ালি। সেই অবস্থাতেই দেহ ভরা হয় ট্রলি ব্যাগে। পরে মধ্যমগ্রাম (Madhyamgram) থেকে ট্রেনে চেপে মা-মেয়ে কলকাতা হয়ে কুমোরটুলি ঘাটে আসে। উদ্দেশ্য ছিল, দেহ ভর্তি ট্রলি ব্যাগটি গঙ্গায় ভাসিয়ে খুনের প্রমাণ (evidence) লোপাট করা। কিন্তু তার আগেই প্রাতঃভ্রমণকারী এবং স্থানীয়দের তৎপরতায় ধরা পড়ে যায় মা ও মেয়ে। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।