৭ বছরের নাবালিকাকে যৌন হেনস্থা, অপরাধীর ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট
HnExpress ২২শে ডিসেম্বর, ওয়েবডেক্স নিউজ, কলকাতা ঃ ১৫ই অক্টোবরের ঘটনা, ২০১৯। উল্টোডাঙা মহিলা থানায় এসে একজন জানান, তাঁর ৭ বছরের নাবালিকা মেয়েকে যৌন হেনস্থা করেছে তাঁরই এক প্রতিবেশী, যাকে কলকাতা উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী ৫ বছরের স্বশ্রম কারাদন্ডের সাজা হয়েছে। নাম মহঃ মুস্তাকিন ওরফে মস্তান। স্ত্রী ও ৩ সন্তানকে নিয়ে ক্যানাল ওয়েস্ট রোডের পাশে একটি ঝুপড়িতেই থাকতেন সেই অভিযোগকারী। ঘটনার রাত্রে ছোট মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে ঘরের ভিতরে ঘুমোচ্ছিলেন তিনি।
স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। গরম থাকায় ঘরের বাইরে ফুটপাতের ওপরেই শুয়ে ছিল তাঁর বড় ছেলে। গভীর রাতে ছোট মেয়েটিও বাইরে বেরিয়ে এসে ফুটপাতে তার দাদার পাশেই শুয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
সেই ফুটপাতেই শুয়ে ছিল মহঃ মুস্তাকিন ওরফে মস্তান। ছোট মেয়েটি যে বেরিয়ে এসে ফুটপাতে শুয়েছে, সেটা লক্ষ্য করেছিল সে। রাত প্রায় ৩ টে নাগাদ হঠাৎই নাবালিকা মেয়েটির মুখ চেপে ধরে তাকে খালের পাশে একটি গাছের তলায় নিয়ে আসে মস্তান। মেয়েটির ১২ বছরের দাদা তখন গভীর ঘুমে অচেতন, টের পায়নি কিছুই।
মেয়েটির মুখ চেপে ধরেই যৌন হেনস্থা করতে শুরু করেছিল মস্তান। কিন্তু যেকোনও ভাবেই হোক চিৎকার করে কেঁদে ওঠে ছোট্ট মেয়েটি। আর সেই চিৎকার শুনতে পেয়ে ছুটে আসেন শেখ কুরবান ওরফে সূরজ। কাছেই ফুটপাতের ওপরে ঘুমোচ্ছিলেন তিনিও। সূরজকে আসতে দেখেই মেয়েটিকে ফেলে পালিয়ে যায় মস্তান। সূরজই মেয়েটিকে উদ্ধার করে পৌঁছে দেন তার বাড়িতে।
এদিকে অভিযোগ পাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই মস্তানকে গ্রেপ্তার করে উল্টোডাঙা মহিলা থানার বিশেষ টিম। তার বিরুদ্ধে পকসো আইনে (Protection of Children from Sexual Offences Act) মামলা রুজু হয়। উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ আর মেয়েটির মেডিকেল রিপোর্ট-সহ চার্জশিটও জমা দেওয়া হয় দ্রুতই।
সম্প্রতি সেই কেসেরই রায় বেরিয়েছে। আর রায়ে মস্তানের ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা উচ্চ আদালতের মাননীয় বিচারক। সঙ্গে ক্ষতিপূরণ সহ ৫০,০০০ টাকার জরিমানা। তবে জরিমানা অনাদায়ে কারাদণ্ডের মেয়াদ বাড়বে আরও ৬ মাস।
প্রসঙ্গত ২ মাসেরও কম সময়ের ভিতরেই অভিযুক্ত অপরাধীর শাস্তি সুনিশ্চিত করেছেন এই কেসের তদন্তকারী অফিসার উল্টোডাঙা মহিলা থানার সাব ইনস্পেকটর রত্না সরকার। যদিও এক্ষেত্রে পলিটিক্যাল কোনো ইস্যু নেই।
তথ্যসুত্র ও ছবি ঃ কলকাতা পুলিশ ফাইল।