কালি-কলমে ভারতীয় ঐতিহ্যের অনুপম সম্ভার
HnExpress অশোক সেনগুপ্ত, কলকাতা : নালন্দা মহাবিহারের ছবিটি সুপরিচিত। কিন্তু আমরা তো এর আলোকচিত্র দেখতে অভ্যস্ত, কালি-কলমে ভারতীয় ঐতিহ্যের অনুপম সম্ভারের সুন্দর রূপ ক’জন দেখেছি? কেবলই কি নালন্দা, বিষয় হিসেবে বেছে নিয়েছেন প্রাচীন ভারতে ঐতিহ্যবাহী নানা স্থাপত্যকলা।
মহাবলীপুরমের মন্দির, কোনারকের সূর্য মন্দির থেকে শুরু করে রাজস্থানের মেহরানগড় কেল্লা, চিতোরের জয়স্তম্ভ। আশ্চর্যের বিষয়, তিনি কোনও প্রশিক্ষিত শিল্পী নন। প্রায় সাত দশক শিল্পজগতের সঙ্গে তেমন সম্পর্কও ছিল না। সন্দীপ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকতে পছন্দ করেন। প্রথাগত শিল্পশিক্ষার সুযোগ পাননি।
সিটি কলেজের বিএসসি গোড়ায় কাজ করেন একটি নামী সংস্থায়। ১৯৬৪ সাল থেকে ১৯৭২ পর্যন্ত জার্মানিতে কাজ ও পড়াশোনা করেন। পেপার টেকনোলজিতে স্নাতক দিল্লিতে ফেরা। ’৮৪-র পর কলকাতায়। মানুষটির কর্মজীবনের অধিকাংশই কেটেছে কাগজ শিল্পে। অবসরের পর বছর পাঁচ হল ফিরে এসেছেন ছোটবেলার ভালোবাসায়। এখন সাতাত্তরের এই তরুণের অধিকাংশ সময় কাটে ছবি এঁকে।
কালি-কলমের শিল্পধারায় তাঁর চোখ টেনেছিল রথীন মিত্রের ছবিতে। আস্তে আস্তে আলো ও ছায়ার উপযুক্ত ব্যবহার করে দ্বিমাত্রিক ছবিতে এনেছেন তৃতীয় মাত্রা। প্রদর্শনীতে রাখা রথীনবাবুর আঁকার সঙ্গে নিজের ছবির তুলনা করে দেখালেন ত্রিমাত্রিক বা চারমাত্রার ছবি কত জীবন্ত হতে পারে।
বললেন, এত নিখুঁতভাবে কালির সূক্ষ আঁচর দিতে হয়, একটু ভুল হলে আঁকাটা বাতিল করা ছাড়া উপায় থাকে না। দিনে ২-৩ ঘন্টার বেশি আঁকা যায় না। এক একটা ছবিতে সময় লাগে অন্তত ৩০ ঘন্টা। পেন্সিলে আঁকার ক্ষেত্রে এই সমস্যা থাকে না।
সন্দীপবাবু গত বছর তাঁর কালি কলম প্রাণবম্ত প্রথম প্রদর্শনীটি করেন গত বছর লন্ডনে। বললেন, “কলকাতায় প্রদর্শনী এই প্রথম। বিদেশে এর এক একটা বিক্রি করে ৭০০ ডলার পাওয়া গেলেও এখানে দাম মেলে না। ‘এথ্রি’ মাপের এক একটা ভাল মানের শিটে বিক্রি হচ্ছে কমবেশি ৫০০ টাকায়। একসঙ্গে তিনটি ১,০০০/টাকায়। নিজের ঘর সাজানো থেকে উপহারের একটা আদর্শ শিল্পদ্রব্য।
গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অফ কালচারের তিন তলায় শুক্র ও শনি চলছে এই সব ৪০টি ছবির প্রদর্শনী। ‘হেরিটেজ অফ ইন্ডিয়া ইন পেন এন্ড ইঙ্ক’ শীর্ষক প্রদর্শনীর উদ্বোধন করলেন গোলপার্ক মিশনের সেক্রেটারি মহারাজ স্বামী সুপর্ণানন্দ।