তৃণমূল ভবনে “বঙ্গধ্বনি যাত্রা”র রিপোর্ট কার্ড উদ্বোধন, সাথেই উত্তর চব্বিশ পরগণার জেলায় রিপাের্ট কার্ড প্রকাশ নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন
HnExpress ১১ই ডিসেম্বর, প্রিয়দর্শী সাধুখাঁ, কলকাতা ঃ ভোটের আগে উন্নয়নের ফলাফল স্বরূপ ১০ বছরের তৃণমূল কংগ্রেস শাসিত রাজ্য সরকারের কাজের খতিয়ান তুলে ধরতে গতকাল বৃহস্পতিবার দলের তরফ থেকে তৃণমূল ভবনে একটি “রিপোর্ট কার্ড” বা “শ্বেতপত্র” প্রকাশের উদ্বোধন করা হয়। এদিন কলকাতার তৃণমূল ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠকে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য মিলিত ভাবে সেই রিপোর্ট কার্ডটি প্রকাশ করেন।
এদিন থেকেই তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা রাজ্যের সবকটি বিধানসভা কেন্দ্র হতে রিপোর্ট কার্ড হাতে পথে নামবেন বলে জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কার্ডের উদ্দেশ্য মূলত, বিজেপি সহ সমস্ত বিরোধী দলের নেতিবাচক প্রচারের জবরদস্ত মোকাবিলা করা। রিপোর্ট কার্ডটি ইংলিশ এবং বাংলাতে মুদ্রিত। রাজ্য থেকে ব্লকে মোট ৯৫০টি টিম তৈরি করা হয়েছে। এই টিমের মাধ্যমেই ২৭৫০০০ গ্রাম, শহর, ওয়ার্ডে পৌঁছে যাবে রিপোর্ট কার্ডটি।
এরই পাশাপাশি বিশ্বমঞ্চে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান উল্লেখ করে রিপোর্টে তাও প্রকাশ করা হয়েছে। যেগুলি হলো— উৎকর্ষ বাংলার জন্য জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড সামিট ইনফরমেশন সােসাইটি (ডাব্লুএসআইএস) পুরস্কার (২০১৯ ), সবুজ সাথীর জন্য জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড সামিট ইনফরমেশন সােসাইটি (ডাব্লুএসআইএস) পুরস্কার (২০১৯), কন্যাশ্রীর জন্য প্রকল্প দ্য হেগ- এ জাতিসংঘের পাবলিক সার্ভিস পুরষ্কার (২০১৭), পথদিশা স্কচ ফাউন্ডেশন কর্তৃক স্কচ স্মার্ট গভর্নেন্স অর্ডার অফ মেরিট পুরষ্কার (২০১৮)।
এছাড়াও রয়েছে, ই-সমাধানের জন্য স্কচ ফাউন্ডেশন কর্তৃক ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্ল্যাটিনাম পুরষ্কার (২০২০), কৃষি দপ্তরের জন্য পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে দেওয়া ভারত সরকারের কৃষি মন্ত্রকের কৃষি ও সমবায় বিভাগ কর্তৃক কৃষি কর্মন পুরষ্কার (২০১৭), অর্থ দপ্তরের জন্য পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে দেওয়া ভারত সরকারের জাতীয় কর্মী মন্ত্রকের অভিযােগ ও পেনশন বিভাগ কর্তৃক ই-গভর্নেন্স পুরস্কার (২০১৮), যা মুদ্রিত আছে।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার উত্তর চব্বিশ পরগণার অন্তর্গত বারাসাতের জেলা পরিষদের তিতুমীর সভাগৃহে তৃণমূল কংগ্রেসের রিপাের্ট কার্ড প্রকাশ নিয়ে অনুষ্ঠিত হলো এক সাংবাদিক সম্মেলন। এদিন এই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মধ্যমগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা পৌরসভার পৌরপ্রশাসক রথীন ঘোষ, রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, নির্মল ঘোষ, সুনীল মুখার্জী, নারায়ন গোস্বামী ও তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যান্য নেতৃত্ব।
এদিন বিধায়ক তথা মুখপাত্র রথীন ঘোষ বলেন, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে প্রতিবন্ধীদের জন্য পেনশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। “সমর্থন” বলে একটি প্রকল্পেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেখানে নোটবন্দির ফলে যেসব মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ছিলেন তাদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও মহামারী চলাকালীন রাজ্য সরকারের “স্নেহের পরশ” প্রকল্প এর মাধ্যমে আদিবাসী ভাইদের ১০০০ টাকা করে সাহায্য করা হয়েছে।
এরপর খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন যে, ১১ই ডিসেম্বর থেকে ২১ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ই-কার্ড বিতরণ করা হবে এবং তা ৯ লক্ষ পরিবারকেই দেওয়া হবে। যাতে মানুষ এই ১০ বছরে তৃণমূল সরকার কি কি কাজ করেছে তা খতিয়ে দেখতে পারে। আজ থেকে শুরু হচ্ছে সেই কার্ড বন্টনের কাজ, আগামী ১০দিন যাবৎ এই বন্টন প্রক্রিয়া চলবে, যার নাম দেওয়া হয়েছে “বঙ্গধ্বনি যাত্রা।”
ভোটের আগে বিভিন্ন দলকে দেখা যায় যে, তাঁরা মানুষের কাছে নিজেদের কাজ সম্পর্কে অবগত করানোর জন্য নানা কৌশলে, বিভিন্ন ভাবে প্রচার করে থাকেন। এই “রিপোর্ট কার্ড”টিও তারই একটি নমুনা মাত্র। কিন্তু বই আকারে প্রকাশ করার ফলে সব মানুষই নিজের নিজের এলাকাতে কি কি কাজ হয়েছে তা খুব সহজেই বুঝতে পারবেন বলে মনে করছেন রাজ্য সরকার। তবে এই মুহূর্তে বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার ও বিরোধী দলগুলির অপপ্রচারের বিরুদ্ধে ঠিক কতটা লড়তে পারবে এই কার্ড, এটাই এখন দেখার বিষয়!