করোনার আবহে মহালয়ার দিন পিতৃতর্পণেও সেভাবে ভীড় জমেনি মানুষের, জানালেন নদীয়ার পুরোহিতগণ
HnExpress ১৭ই সেপ্টেম্বর, সুদীপ ঘোষ, নদীয়া ঃ গতকাল ছিল বিশ্বকর্মা পুজোর দিন, আর এবছর সেদিনই ছিল মহালয়া। অর্থাৎ পৌরাণিক মতে, এই সময়টা হল পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে দেবীপক্ষের সূচনাকাল। আর মহালয়া মানেই ভোর চারটের সময় উঠে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের সুমধুর জলদগম্ভীর কন্ঠে সেই মহিষাসুরমর্দিনীর চন্ডীপাঠ দিয়ে দিনের শুরু। বিভিন্ন শহরে নানা ভাবেই মানুষ এই দিনটি আনন্দ-উল্লাসের সাথে পালন করে থাকে। একদিকে মাঠে মাঠে ছেয়ে রয়েছে শরতের কাশ ফুলের ঢেউ।
আরেকদিকে ভেজা মাটির সোঁদা সোঁদা গন্ধ, সব মিলিয়ে মা দশভুজার আগমনের যেন এক অনির্বচনীয় সংকেত। যদিও এবছর মলমাস পরে যাওয়ায় শরতে দেবীর আগমন নয়। বহু বছর পরে এবছর আবার হেমন্তের শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব “শুভ শারদীয়া”। তবে এই প্রথমবার দেখা গেল যে, বিশ্বকর্মা পুজোর দিন মহালয়ার সুত্রপাত। তবে এদিকে এই মহালয়ার দিনেই নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরের আকাশে-বাতাসে সুপ্রভাতের আমেজকে প্রস্ফুটিত করার জন্য সক্কাল সক্কাল বিভিন্ন জায়গায় একাধিক মানুষের ঢল নেমে আসে রাস্তায় রাস্তায়।
আসলে ভোরবেলায় চন্ডিপাঠ শুনতে শুনতে মহালয়ার শুরুটাকে তাঁরা এইভাবেই অনুভব করতে চায়। প্রতি বছরের মত এবছরেও এই দিন কৃষ্ণনগর জলঙ্গী নদীতে দ্বিজেন্দ্র সেতুর ওপর হাজারো মানুষের ভিড় উপচে পরে। কিন্তু বর্তমানে করোনা মহামারীর সংক্রমণ রুখতে ভিড় এড়াতে পুলিশ প্রশাসন ছিল যথেষ্ট তৎপর। কিছুক্ষণ পরেই মানুষকে ব্রিজ থেকে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা। শুধুমাত্র ব্রিজের ওপর থেকে মানুষ জনের এই ভিড় এড়াতেই এদিন রাস্তায় নামানো হয় সিভিক ভলেন্টিয়ার সহ পুলিশ বাহিনীকে। আবার অন্যদিকে নদীয়ার নবদ্বীপে এদিনেই বহু দূর দূরান্ত থেকে মানুষ পূন্যস্নানের জন্য গঙ্গায় আসে।
এছাড়াও আসে পিতৃ তর্পণ এর উদ্দেশ্যে। কিন্তু এবছর করোনা মহামারীর প্রকোপে সেভাবে দেখা মিলছে না পর্যটকদের। নবদ্বীপের বিভিন্ন ঘাটে ঘাটে মহালায়ের দিনে দেখা গেল বহু পুরোহিতের আনাগোনা। কিন্তু পুরোহিত থাকলেও আসছে না ভক্ত বা সাধারণ মানুষজন। তাদের বক্তব্য, মহালায়ার দিনে অন্যান্য বছর গুলোতে শুধু নদীয়া জেলাতেই নয়, বর্ধমান এবং কাটোয়ার সহ একাধিক জায়গা থেকে প্রায় শ’দেরেক মানুষ আসে গঙ্গাবক্ষে, পিতৃতর্পণের উদ্দেশ্যে। কিন্তু এবারের সেই চিত্রটাই সম্পূর্ণ আলাদা। বেশকিছু ভক্তগণ এসে গঙ্গা স্নান করলেও মহালয়ার দিন পিতৃতর্পণের সময় কিন্তু সেই ভাবে মানুষজনের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না এবছর, এমনটাই জানালেন ঘাটের পুরোহিতরা।