নোভেল করোনা ভাইরাস নিয়ে (কোভিড-১৯) অযথা আতংকিত না হয়ে নিজেই পরিক্ষা করুন, আর জেনে নিন তার প্রতিকারের তথ্যসমুহ
HnExpress ৫ই মার্চ, ওয়েবডেক্স নিউজ, স্বাস্থ্য সচেতনতা ঃ নোভেল করোনা ভাইরাস নিয়ে (কোভিড-১৯) অযথা আতংকিত না হয়ে নিজেই পরিক্ষা করুন, আর জেনে নিন তার প্রতিকারের তথ্যসমুহ—, কারণ এই মুহূর্তে নোভেল করোনা ভাইরাস পুরো বিশ্ব, বিশেষ করে চীন ও আশেপাশের দেশগুলোতে প্রচণ্ড আতংকের সৃষ্টি করেছে। বিশ্বের বহু দেশে, এমনকি ভারতেও এখন নোভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সন্ধান মিলছে।
এ যাবৎ প্রায় ৩ হাজার মানুষ মারা গিয়েছেন বলে জানা গেছে, যার প্রায় ২ হাজার ৮ শত জনই চীনের বাসিন্দা। এবং সারা বিশ্ব জুড়ে বহু হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন এই মারণসম ভাইরাসে। এবার ভারতেও এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে সুত্র মারফত এবং ইতিমধ্যেই বিদেশে অবস্থানরত কয়েকজন ভারতীয়ের মধ্যে এই ভাইরাস সংক্রমণের তথ্যও পাওয়া গিয়েছে।
সমস্যা হচ্ছে, কেউ আক্রান্ত হলে তার দেহে এই ভাইরাসের চিহ্ন বা লক্ষণ খুঁজে পেতে অনেকদিন সময় লেগে যায়। সাধারণত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জ্বর বা কাশি নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার আগেই তার ফুসফুসের ৫০% ফাইব্রোসিস (সূক্ষ্ম অংশুসমূহের বৃদ্ধি) তৈরি হয়ে যায়, যার মানে হলো অনেক দেরি হয়ে গেছে, সব চিকিৎসা বেকার।
সুত্রের খবর, বর্তমানে তাইওয়ানের বিশেষজ্ঞরা কেউ আক্রান্ত হয়েছেন কি না, সেটা নিজে নিজেই পরিক্ষা করার একটি পদ্ধতি ইতিমধ্যেই আবিষ্কার করে ফেলেছেন। যেটা যে কেউ প্রতিদিন সকালে উঠেই কয়েক সেকেন্ডে একবার পরীক্ষা করে নিশ্চিন্ত হতে পারবেন।
আর সেই পরীক্ষাটাটি হলো ; পরিচ্ছন্ন পরিবেশে লম্বা একটা শ্বাস নিয়ে সেটাকে দশ সেকেন্ডের কিছুটা বেশি সময় ধরে আটকে রাখুন। যদি এই দম ধরে রাখার সময়ে আপনার কোনো রকম কাশি না আসে, বা বুকে ব্যাথা অথবা কোনো রকম চাপ অনুভূত না হয়, অর্থাৎ কোনো প্রকার অস্বস্তি অনুভব না হয়, তার মানে হল আপনার ফুসফুসে কোনো ফাইব্রোসিস তৈরি হয়েনি। অর্থাৎ বর্তমানে আপনি সম্পূর্ণ ঝুঁকি মুক্ত আছেন।
অন্যদিকে, জাপানের ডাক্তাররা আরেকটি অত্যন্ত ভালো উপদেশ দিয়েছেন যে, সবাই চেষ্টা করবেন যেন আপনার গলা ও মুখের ভেতরটা কখনো শুকনো না হয়ে যায়, ভেজা ভেজা থাকে। তাই প্রতি পনেরো মিনিট অন্তর এক চুমুক হলেও বিশুদ্ধ পানীয়জল পান করুন।
কারণ, কোনোভাবে যদি ভাইরাসটি আপনার মুখ দিয়ে শরীরে প্রবেশ করেও, তবে সেটি জলের সাথে পাকস্থলীতে চলে যাবে, আর পাকস্থলীর এসিড মুহূর্তেই সেই ভাইরাসকে মেরে ফেলতে সক্ষম হয়। অন্যদিকে করোনা ভাইরাস থেকে সর্তকতা সম্পর্কে ইউনিসেফ এর রিপোর্ট বলছে—
@ করোনা ভাইরাস মোটামুটি বড়সড় একটি ভাইরাস। তবুও খালি চোখে এদের দেখা যাবে না, ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপ লাগবে এটাকে দেখতে হলে!
@ এদের আকারের কারনে বাজারে পাওয়া যায় এমন মেডিক্যাল মাস্ক এটাকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম।
@ লক্ষণীয় বিষয়, সর্দি, কাশি, গলা ব্যাথা, অধিক জ্বর।
@ যেহেতু এই ভাইরাসটি বাতাসে নয়, মাটিতে অবস্থান করে, তাই এটা বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় না।
@ কোন ধাতব তলে বা বস্তুতে করোনা ভাইরাস পড়লে প্রায় ১২ ঘন্টা জীবিত থাকতে পারে। তাই সাবান দিয়ে বস্তুটি ধুলেই তা যথেষ্ট সুরক্ষিত।
@ কাপড়ে এই ভাইরাসটি প্রায় ৯ ঘন্টা জীবিত থাকতে পারে। তাই, কাপড় ধুয়ে নিলে বা রোদে ২ ঘন্টা থাকলেই এটি মারা যাবে।
@ হাতে বা ত্বকে এই ভাইরাসটি ১০ মিনিটের মতো জীবিত থাকতে পারে। তাই, এলকোহল মিশ্রিত জীবানু নাশক হাতে মেখে নিলেই জীবানুটি মারা যাবে।
@ করোনা ভাইরাস গরম আবহাওয়ায় বাঁচে না। ৭০ সেলসিয়াস তাপমাত্রা এটিকে মারতে পারে। কাজেই, ভাল না লাগলেও এখন বেশি বেশি করে গরম জল পান করবেন, আর আইসক্রিম থেকে দূরত্ব বজায় রাখবেন।
@ লবন মিশ্রিত গরম জল দিয়ে গার্গল করলে গলার মিউকাস পরিষ্কার হবার সাথে সাথেই টনসিলের জীবানুসহ করোনাও দূর হবে, ফলে ফুসফুস সংক্রমিত হবে না সহজে।
@ আর, নাকে-মুখে আঙ্গুল বা হাত দেবার অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। কারন মনে রাখবেন, মানব শরীরে জীবানু প্রবেশের সদর দরজাই হলো নাক-মুখ-চোখ!
এই করোনা ভাইরাস পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো যদি একবার আমাদের দেশে ছড়িয়ে যায় তাহলে ব্যাপকহারে মানবসম্পদ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তাই আমাদের সকলকেই আগে ভাগেই এই সকল সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। তাই অযথা আতংকিত না হয়ে অবিলম্বে সাবধানতা অবলম্বন করুন আর সুস্থ থাকুন।
বিশেষ করে যারা আমরা ছোট ছোট শিশুদেরকে সঙ্গে নিয়ে চলাফেরা করি, তাদের সঙ্গে যেহেতু অনেকক্ষণ সময় কাটাই, তাই তাদের সবার আগে সচেতন করা বিশেষ প্রয়োজন এবং আমরা নিজেরাও যথা সম্ভব সচেতন হয়ে চলব সুস্থ সমাজ গড়তে আগামীর লক্ষ্যে।
তথ্যসূত্র ও চিত্র ঃ ইন্টারনেট।