নির্বাচন কমিশন ও সাংবাদিকদের আরও স্বাধীনতা দেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা সভা
HnExpress ২৪ শে অগাস্ট, অশোক সেনগুপ্ত, কলকাতা ঃ নির্বাচন কমিশনকে আরও স্বাধীনতা দেওয়ার প্রস্তাব উঠল এক আলোচনা সভায়। এই সঙ্গে কমিশন যাতে সরকারের কাজকেও সংবিধানের আওতাতে দায়বদ্ধ করতে পারে, নির্বাচন কমিশনের সাথে সংবাদ মাধ্যমের সম্পৃক্ততা নিয়মিত হয়, সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়— এ সব প্রস্তাব ওঠে আলোচনায়। সাংবাদিকদের আইনী সাহায্যের সুপারিশও উঠে আসে ভবিষ্যতের দিক নির্দেশ হিসেবে।
কলকাতা প্রেস ক্লাবে আজ সংসদীয় ‘গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনাসভার আয়োজন করল পশ্চিমবঙ্গ ইলেকশান ওয়াচ ও অ্যাসোসিয়েশন অফ ডেমোক্রাটিক রিফর্মস (এডিআর)। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন, মুম্বাই ও কলকাতা উচ্চ আদালতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি তথা পশ্চিমবঙ্গ ইলেকশান ওয়াচের সভাপতি চিত্ততোষ মুখোপাধ্যায়। সংস্থার পক্ষে স্বাগত ভাষণ দেন পশ্চিমবঙ্গ ইলেকশান ওয়াচের সঞ্চালিকা ডঃ উজ্জয়িনী হালিম। উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ ইলেকশান ওয়াচের পক্ষে সিকিম উচ্চ আদালতের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি মলয় সেনগুপ্ত, অধ্যাপক সত্যব্রত চৌধুরী প্রমুখ।
বক্তাদের বক্তব্য থেকে সংবাদমাধ্যমের বর্তমান সমস্যার কথা ধরা পরে। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ অন্য স্তম্ভ থেকে বিচ্ছিন্ন নয়, কাজেই, টিআরপি ও ব্যনিজ্যিক স্বার্থের বেড়াজাল থেকে সংবাদ মাধ্যম, তা সংবাদপত্র, ডিজিটাল, ইলেকট্রনিক বা সোশ্যাল মিডিয়া যাই হোক না কেন, তার বেড়িয়ে আসা, অনেকটাই ব্যক্তি নির্ভর ও সীমিত। কাজেই দরকার বিকল্প মাধ্যমের। এই সূত্রে বার বার সোশ্যাল মিডিয়ার পোর্টালের কথা উঠে আসে।
সর্বক্ষেত্রেই নৈতিকতা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার কথা ওঠে। দেশের তথা রাজ্যের নির্বাচন কমিশনের পেড নিউজ নিয়ে বা মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট নিয়ে ভূমিকার কথা আলোচনায় উঠে আসে, ওঠে পক্ষপাত দুষ্টতার অভিযোগ। একই সাথে এই প্রতিষ্ঠানকে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে দিতে গেলে যে আইনের পরিবর্তন দরকার তা নিয়েও আলোচনা হয় এদিন।
যেকোনো রকমের বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ঃ ৮২৪০৯০২৪৪৫।
জনসচেতনতা বৃদ্ধি, জেলাস্তরের সাংবাদিকদের সচেতনতা বৃদ্ধি, গণতন্ত্রকে রক্ষায় সংবাদ মাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকার উপর জোর দেওয়া, সমাজে নিয়মিত মতামত আদান প্রদানের স্বাধীন পরিসরকে সংরক্ষণ করা, আরো গবেষণাধর্মী কাজ নিয়মিত ভাবে করা, এই সুপারিশও উঠে আসে আলোচনার থেকে। দেশে সংবাদ মাধ্যমের মানের অবনতি, সৎ সাংবাদিকতার বদলে চাটুকারিতার সাংবাদিকতার রমরমাকে সবাই বিশেষ আশংকার কারন বলে মনে করেন। গণতন্ত্রের অন্যতম স্বাস্থ্যসূচক হল সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা, সেটি প্রায় সব বক্তাই স্মরণ করিয়ে দেন।
সভাপতি তাঁর ভাষণে কঠিন সময়ের মধ্যেও যারা নৈতিকতা বর্জন না করে সাংবাদিকতা করছেন তাদের প্রশংসা করেন, তিনি বলেন বিচার ব্যবস্থাও ত্রুটিমুক্ত নয় তবে এই গণতান্ত্রিক আধারের উপর আমাদের বিশ্বাস রাখা উচিৎ ও তাকে আরো মজবুত করা উচিৎ।ডঃ উজ্জয়িনী হালিম জানান পশ্চিমবঙ্গ ইলেকশান ওয়াচ ও এডিআর ফেক ও পেইড নিউজের নিন্দা করে ও ভবিষ্যতে দেশে আরও দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা আশা করে।
এক দেশ এক নির্বাচন, ইলেকটোরাল বন্ড বা তথ্যের অধিকার সংশোধন বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধ অবস্থানের কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
সব বক্তাই একমত হন পেশী বা অর্থ শক্তির প্রভাব মুক্ত নির্বাচন একান্ত দরকার আর সেক্ষেত্রে নতুন সংবাদমাদ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে, এর জন্য নানা সংস্কারের প্রয়োজনের কথাও বিস্তারিত আলোচিত হয়। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে আরও এই ধরনের আলোচনা সভা গঠন ও প্রশিক্ষণের উপর জোর দেওয়া হয়৷
আর আগামীতে আরও দায়িত্বশীল সংবাদ মাধ্যম গড়ে তোলার অঙ্গীকারের মাধ্যমে সভার কাজ শেষ হয়। বহু বিশিষ্ট নাগরিক এই মনোজ্ঞ আলোচনাসভায় যোগ দেন। কলকাতা প্রেস ক্লাবের প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস সুর মূল আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন। উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন নাগরিক সংগঠনের পক্ষে শীস, ইমসে, আই আই এম সি, দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি, বিবেক পথে, খিদিরপুর স্বরাজ, এফ ও ভি ও ডব্লিও বি প্রভৃতি সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।