ভারতে অর্থনৈতিক মন্দা সত্বেও পশ্চিমবঙ্গে ইতিবাচক আবহ, দাবি অমিত মিত্রর
HnExpress ২৩শে ডিসেম্বর, অশোক সেনগুপ্ত, কলকাতা ঃ দেশের দরজায় যখন ‘স্ট্যাগফ্লেশন’-এর মত অর্থনৈতিক মন্দা কড়া নাড়ছে তা সত্বেও, পশ্চিমবঙ্গে সে সময় ইতিবাচক আবহ তৈরি হয়েছে। শনিবার বিকেলে ওয়েস্ট বেঙ্গল গারমেন্ট ম্যানুকচারার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের অনুষ্ঠানে এই দাবি করেন রাজ্যের অর্থ তথা শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র। তাঁর দাবি, রাজ্যে বেকারত্বের হার কমার পাশাপাশি দরিদ্র মানুষের সংখ্যাও কমছে।
অমিতবাবু বললেন, মন্দা এবং মুদ্রাস্ফিতীর সম্মেলনে দেশের অর্থনীতি যেখানে নিম্নগামী, বাংলার অর্থনৈতিক সম্ভাবনা সেই অবস্থায় নতুন চূড়ায় গিয়ে পৌঁছিয়েছে। তথ্যের প্রমাণ দিতে গিয়ে বললেন, ২০১৮-১৯ অর্থ বর্ষে যেখানে ভারতের জিডিপি-র প্রবৃদ্ধির হার ছিল সাড়ে ছয় শতাংশ, এ রাজ্যের ক্ষেত্রে সেই হার ছিল প্রায় ১৩ শতাংশ। সারা দেশে আমরা এদিক থেকে প্রথম। দ্বিতীয় স্থানে ছিল অন্ধ্রপ্রদেশ— ১১ শতাংশ।
এছাড়াও অমিতবাবু বললেন,গতকাল স্টেট লেভেল ব্যাঙ্কার্স কমিটির বৈঠক ছিল। ২০১০ -১১ অর্থ বর্ষে আমরা এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসার প্রাক্কালে এ রাজ্যের ক্ষুদ্রশিল্পের (এমএসএমই) জন্য ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৮ হাজার কোটি টাকা, সেখানে ঋণ দেওয়া হয় ৭ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থ বর্ষে এই দুই পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৩৮ হাজার কোটি টাকা ও ৪৪ হাজার কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থ বর্ষে এই দুই পরিমাণ ছিল ৫০ হাজার কোটি টাকা ও ৫৬ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা। ২০১৯-২০তে এই লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে ৭০ হাজার কোটি টাকা। এই অর্থ বর্ষের প্রথম ছ’মাসে এ রাজ্যের এমএসএমই ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক ঋণ দিয়েছে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা। এটা বছর শেষে হবে প্রায় ৭৫ হাজার কোটি টাকা।
এদিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার নুঙ্গিতে পোশাক তৈরির পার্ক (গারমেন্ট পার্ক) গড়ে তোলার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য। বড় পোশাক সংস্থা গুলির পাশাপাশি ওই পার্কে মেটিয়াবুরুজের প্রায় ১০০০টি ছোট ইউনিটকেও জায়গা দেওয়া হবে বলে শনিবার ৫০তম পোশাক মেলার অনুষ্ঠানে জানান অমিত মিত্র। তাঁর দাবি, পার্কটি গড়তে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা খরচ করবে রাজ্য। প্রত্যক্ষ ভাবে কাজ পাবেন কমপক্ষে ৮০০০ জন।
পরিকল্পনা অনুসারে, নুঙ্গিতে ১১ লক্ষ বর্গফুট এলাকা জুড়ে শিল্প পার্কটি গড়ে উঠবে। যার প্রাথমিক নকশাও তৈরি। সেখানে পোশাক তৈরির সংস্থার পাশাপাশি ৩০০টি বড়-মাঝারি সংস্থা যাতে পণ্যের বিপণন করতে পারে, তার ব্যবস্থা থাকবে। মেটিয়াবুরুজের সংস্থাগুলিকে নিয়ে আলাদা করে একটি বাজার গড়া হবে পার্কের মধ্যেই।
সেই সঙ্গে মন্ত্রীর দাবি, আগামী দিনে রাজ্যে ৭টি বস্ত্র পার্কের উন্নতি ও সম্প্রসারণের দিকেও নজর দেবে সরকার। ২০২৩ সালের মধ্যে রাজ্যের ব্যবসার অঙ্ক ১ লক্ষ কোটি টাকায় নিয়ে যেতে বস্ত্র শিল্পকে আর্জি জানান তিনি। পশ্চিমবঙ্গ পোশাক তৈরি ও ডিলার্স সমিতির উদ্যোগে এই মেলায় ৬০০টি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড হাজির হয়েছে। কমপক্ষে ৫০০ কোটি টাকা ব্যবসা হবে বলে সমিতির আশা।
মেটিয়াবুরুজের পোশাক সংস্থাগুলির সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লা জানিয়েছেন, সরকারের প্রস্তাব আকর্ষণীয়। সাধ্যের মধ্যে পার্কে জায়গা পেলে তাঁরা নুঙ্গিতেই যাবেন।