জন্ম থেকেই অটিজমে আক্রান্ত সন্তান, অবসাদ থেকেই কি আত্মঘাতী বেহালার বাবা ও মেয়ে?

HnExpress নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা : জন্ম থেকেই অটিজমে (autism) আক্রান্ত সন্তান, অবসাদেই কি আত্মঘাতী বাবা ও মেয়ে? রহস্য ঘনাচ্ছে বেহালার শকুন্তলা পার্কে (Behala Shakuntala Park), বাবা-মেয়ের এমন করুণ পরিণতি কেন হলো! বাড়ির অদূরে অফিস থেকে বাবা ও মেয়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সুত্রের খবর, ফ্যানে একই দড়ির দু’প্রান্তে দুজনের দেহ ঝুলছে। জন্ম থেকেই অটিজমে আক্রান্ত সন্তান। সে কারণেই কি মানসিক অবসাদে (Depression) ভুগতেন বাবা? আর তাই মেয়েকে খুন করে সম্ভবত নিজেও আত্মঘাতী হয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে প্রাথমিক তদন্তে। পর্ণশ্রী থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। নিহতের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
বাবা স্বজন দাস (৫৫), মেয়ে সৃজা দাস (২২) ও তার মা মহেশতলা থানার নুঙ্গির দীর্ঘদিনের বাসিন্দা। জানা গেছে বেহালার শকুন্তলা পার্ক (Behala Shakuntala Park) লাগোয়া হো-চি-মিন সরণিতে একটি অফিস রয়েছে স্বজনবাবুর। স্বজন দাস পেশায় ব্যবসায়ী। মেয়ে সৃজা জন্ম থেকেই অটিজমে আক্রান্ত। শুক্রবার মেয়েকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয় বাবা ও মেয়ে। কিন্তু দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও বাবা ও মেয়ের কোনও খোঁজখবর পায়েনি তার পরিবার। সন্ধে সাতটা নাগাদ স্বজনের বন্ধুবান্ধবদের ফোন করতে শুরু করেন তাঁর স্ত্রী। তাঁরাও কোনো খোঁজ দিতে পারে না বাবা-মেয়ের।
তারপরই বেশ কয়েকজন শকুন্তলা পার্কের অফিসে যান। আর গিয়ে দেখেন অফিসের ভিতরে আলো জ্বলছে, চলছে এসি। কিন্তু অনেক ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। ফলে তারা বাধ্য দরজা ভেঙে অফিসের ভিতরে ঢোকেন। আর তাঁরা দেখেন ফ্যানে একটি দড়ির দু’প্রান্তে ঝুলছেন বাবা ও মেয়ের মরদেহ (Suicide)। তড়িঘড়ি পর্ণশ্রী থানায় (Parnasree Police Station) খবর দেওয়া হয়। পুলিশ রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ঘটনাস্থলে এসে জোড়া মরদেহ উদ্ধার করে। দেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এদিকে এক সাথে স্বামী ও সন্তানকে হারিয়ে চোখের জলে ভাসছেন স্বজনের স্ত্রী। শুরু হয়েছে তদন্ত।
অন্যদিকে মধ্যমগ্রামেও দেখা গেলো বেহালার ছায়া। ঘরের ভিতর মিলল মা-মেয়ের নিথর দেহ! মধ্যমগ্রামের দোহারিয়ায় (Madhyamgram, Dahariya) মা ও শিশুকন্যার রহস্যমৃত্যুতে স্তম্ভিত গোটা এলাকা! বিছানা থেকে উদ্ধার হয় ৫ বছরের শিশু প্রশংসা রায়ের প্রাণহীন দেহ। ওদিকে রান্না ঘরের মেঝেতে পাওয়া যায় মা প্রিয়াঙ্কা রায়ের মৃতদেহ (২৫)। পুলিশ সুত্রের খবর, শনিবার গভীর রাতে দরজা ভেঙে দুজনের দেহ উদ্ধার করে স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ। উদ্ধারের পর মা-মেয়েকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসকরা তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।

মা-মেয়ের এই রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় প্রিয়াঙ্কার স্বামী সুমন রায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিস। যদিও উদ্ধার হয়েছে একটি সুইসাইড নোট (Suicide note)। সেই নোটে লেখা রয়েছে, “আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।” এলাকার প্রতিবেশিদের বক্তব্য, স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবন ভালোই ছিল। কেন এরকম হলো বুঝতে পারছেন না, তারাও বিস্মিত। তবে প্রাথমিক তদন্তে গৃহবধূর দেহ থেকে কেরোসিন তেলের উপস্থিতিও মিলেছে বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যেই ময়নাতদন্তের (postmortem) জন্য মৃতদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এখন রিপোর্ট আসার পরই মৃত্যুর আসল কারণ সম্পর্কে জানা যাবে বলে জানিয়েছে মধ্যমগ্রাম থানার তদন্তকারী দল।