ঘূর্ণিঝড় ইয়াস শক্তিশালী হলেও তৈরি হয়েনি তার মূল চোখ—
HnExpress নিজস্ব প্রতিনিধি, ওয়েদার রিপোর্ট ঃ অতি শক্তিশালী ঘূ্র্ণিঝড় হলেও তৈরিই হয়েনি ‘ইয়াস’-এর চোখ। যে কারণেই আম্ফানের তুলনায় এই ঝড়ের চরিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। আর এটাই ‘ইয়াস’-এর নিজস্বতা, এমনটাই জানালেন আবহওয়াবিদগণ। বুধবার ওড়িশায় আছড়ে পরে ইয়াস। ওড়িশা হয়ে তা ঝাড়খণ্ড যাওয়ার রাস্তায় চলে ঝড়বৃষ্টির মহা তাণ্ডব। কিন্তু শক্তির নিরিখে অতি শক্তিশালী হয়েও ইয়াস একটা চোখ হীন ঘূর্ণিঝড় বলেই জানিয়েছেন ভুবনেশ্বর আবহাওয়া দফতর।
অন্যদিকে, আলিপুর আবহাওয়া দফতর সুত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস দক্ষিণ-পশ্চিম দিক করে অল্প হেলে ছিল। ফলে আম্ফানের থেকে ইয়াসের চারিত্রিক নিজস্বতা ধরা পড়েছে ভূ-বিজ্ঞানীদের চোখে। তাদের মতানুযায়ী, এই সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড়ের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বেশ কয়েকদিন ধরে একাধিক পর্যায়ে চলে ভাঙাগড়ার কাজ। আর এর মধ্যেই গড়ে ওঠে তার বেশ কিছু চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য।
কোনো ঘূর্ণিঝড়ের চোখ হওয়ার জন্য দরকার সেইমত পর্যাপ্ত শক্তি। ঘূর্ণিঝড়ের শক্তির উপর ভিত্তি করে আবহওয়া দফতর নম্বর বিভাজন করে ঘূর্ণিঝড় গুলির। আবহাওয়া অফিস সুত্রের খবর, সেই শক্তি পরীক্ষায় ৪.৫ এর উপর নম্বর না পাওয়ার অর্থ সেই ঝড়ের চোখই তৈরি হয়নি। আর সে দিক থেকে ইয়াসের প্রাপ্ত নম্বর ছিল মাত্র ৩.০। যেখানে বিগত সুপার সাইক্লোন আম্ফানের প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৬.০। ফলে সেই ঝড় ছিল ইয়াস এর থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।
আম্ফান জাতীয় সুপার সাইক্লোনের মধ্যে বেশ কয়েক কিলোমিটার জায়গা জুড়ে তৈরি হয় তার মূল চোখ। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ক্ষেত্রে সেই চোখই তৈরি হয়েনি। আর এখানেই সে অন্যান্য ঘূর্ণিঝড়ের থেকে আলাদা। কিন্তু সেই বিভেদ আপাতদৃষ্টিতে খুব একটা ধরা পড়ে না, ফলে সব ঘূর্ণিঝড়কেই একরকম মনে হয়। বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে শক্তি এবং বৈশিষ্ট্যের নিরিখে ভু-বিজ্ঞানে নানা প্রকারের ঘূর্ণিঝড় রয়েছে। ইয়াস সেই তালিকার ‘সিয়া’ বিভাগের ঘূর্ণিঝড় বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
এক্ষেত্রে ইয়াসের নিমিত্ত মেঘের অবস্থান থেকে অল্প দূরে ছিল ঘূর্ণিঝড়ের মূল কেন্দ্রবিন্দু। আর ইয়াসের সঙ্গে থাকা মেঘের অবস্থান ছিল এই ঘূর্ণিঝড়ের সামনের দিকে। কিন্তু ইয়াস গতিপথে দক্ষিণ-পশ্চিমে হেলে থাকার কারণে ওড়িশায় প্রবল পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়। আবার সেই একই কারণেই দিঘা, পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ, সুন্দরবন সহ বেশ কিছু এলাকায় ঝড়ের দাপট ছিল বেশ গাম্ভীর্যপূর্ণ।