সাইক্লোন শাহিনের পর এবার ‘জাওয়াদ’ এর ভ্রুকুটি
HnExpress নিজস্ব প্রতিনিধি, ওয়েদার রিপোর্ট ঃ সাইক্লোন শাহিনের পর এবার “জাওয়াদ” এর ভ্রুকুটিতে ভীত বাংলা। থাইল্যান্ডের ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপ হয়ে এই ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, এই সপ্তাহান্তেই উপকূলীয় অঞ্চলে আছড়ে পড়বে সাইক্লোন জাওয়াদ। যার জেরে শনি ও রবিবার কলকাতা সহ উপকূল সংলগ্ন জেলায় ঝোড়ো হাওয়ার সাথে সাথে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে।
সাইক্লোন জাওয়াদের নামকরণ করেছে সৌদি আরব, যার অর্থ হলো ‘উদার বা মহান।’ থাইল্যান্ডের এই ঘূর্ণাবর্ত নিম্নচাপের আকারে ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নেবে। আবহাওয়া দফতর সুত্রে জানা গেছে, কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বইবে। পাশাপাশি মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বাংলার উপকূলে সমুদ্র থাকবে উত্তাল। শনিবার সকালে সমুদ্র উপকূলে বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ৬৫ থেকে ৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায়। ফলে মৎস্যজীবীদের সতর্ক করতে জানানো হয়েছে যে, শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া নিষেধ।
যারা এখন সমুদ্রে রয়েছেন, তাদের বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যেই ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারণ এই সাইক্লোনের প্রভাবে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বৃষ্টি এবং উপকূল সংলগ্ন জেলাগুলিতে প্রবল ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকচ্ছে। স্বভাবতই শীতের আবহেও এই সাইক্লোন জাওয়াদের ভ্রুকুটি চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে কপালে। বিভিন্ন রাজ্য প্রশাসনের তরফে এই ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে, সে বিষয় ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবার নেতৃত্বে এদিন দিল্লিতে গুরুত্বপূ্র্ণ বৈঠক একটি সারল কেন্দ্রীয় সংকট মোকাবিলা কমিটি (NCMC)।
এই কমিটির বৈঠকে হাজির হয়েছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ ও আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের মুখ্যসচিব ও উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। সেখানে তাঁরা ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি আটকাতে কী কী প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সুত্রের খবর, যে রাজ্যগুলিতে বিপুল ক্ষয় ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে সেখানে আপাতত ৩২টি সাহায্যকারী দলকে পাঠিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। তাছাড়া প্রয়োজনে আরও অতিরিক্ত দল পাঠাতে হতে পারে বলেও জানা গেছে। অন্যদিকে, নৌবাহিনীকেও বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে প্রস্তুত রাখা হচ্ছে।
কমিটির অলোচনায় কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের ডিরেক্টর জেনারেল জানান, বঙ্গোপসাগরে একটি নতুন নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। ৩রা ডিসেম্বর সেটি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। তারপর ৪ঠা ডিসেম্বর সেটা অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূল অতিক্রম করবে। সে সময় তার গতি থাকবে ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায়। পাশাপাশি বিপুল বৃষ্টি এবং সমুদ্রে প্রবল ঢেউয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি প্রাকৃতির দুর্যোগ দেখা দেবে ওড়িশা ও অন্ধ্র উপকূলে। যা মূলত প্রভাব ফেলবে শ্রীকাকুলাম, বিশাখাপত্তনম ও বিজয়নগরমে।
এছাড়া এর কিছু শতাংশ প্রভাব পড়বে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গেও। যার ফলে কলকাতা সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গে প্রবল বৃষ্টি হতে পারে। আলোচনায় ক্যাবিনেট সচিবের পক্ষ থেকে ক্ষয় ক্ষতি এড়াতে যথেষ্ট ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। যে অঞ্চলে এই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেই সব অঞ্চলে যতটা সম্ভব ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানী এড়ানো যায়, তার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। সাইক্লোন সম্ভাব্য গতিপথের এলাকা থেকে সাধারণ মানুষকে অতি শীঘ্রই সরিয়ে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে।