December 11, 2024

আদিবাসী সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে এক অভিনব প্রয়াস

0
Img 20201104 Wa0002.jpg
Advertisements

HnExpress ৪ঠা নভেম্বর, আই ভি কুমার, পূর্ব বর্ধমান বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই এখন আর আদিবাসীদের নিজস্ব বাদ্যযন্ত্র মাদল বাজানো থেকে শুরু করে বাঁশিতে বিভিন্ন আদিবাসী সুর তুলতে চান না। পূর্ব বর্ধমান জেলায় আদিবাসীদের মধ্যেই আদিবাসীদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক চর্চা ক্রমশই হারিয়ে যাচ্ছে। আর তাই আদিবাসীদের সেই পুরনো ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে এবং টিকিয়ে রাখতে এক অভিনব পন্থায় নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি দেবু টুডু।

বর্ধমান শহরের ৭০ মাইল জুড়ে এলাকায় জেলা জাহের থান সংলগ্ন এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে আদিবাসী সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র। আর মঙ্গলবার থেকে সেই চর্চা কেন্দ্রেই শুরু হয়েছে বিভিন্ন আদিবাসী গান ও বাদ্যযন্ত্র শেখানোর ক্লাস। নয়া এই পদক্ষেপে প্রথম ব্যাচে এই গানের ক্লাসে ছাত্র হিসাবে যোগ দিচ্ছেন দেবু টুডু নিজেই। এছাড়াও বর্ধমান শহর ও শহর সংলগ্ন বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত আদিবাসী মানুষেরাও সানন্দে এগিয়ে এসেছেন।

এদিন দেবু টুডু জানিয়েছেন, এঁদের মধ্যে প্রায় ৬জনই বর্ধমান মেডিকেল কলেজ সহ অন্যত্র প্র্যাকটিস করা চিকিৎসক। রয়েছেন প্রায় জনা পাঁচেক শিক্ষকও। তিনি জানিয়েছেন, এখনকার ছেলেমেয়েদের মধ্যে আদিবাসী সমাজের এই পুরনো সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার তেমন আগ্রহ দেখা যায় না। তার মূল কারণ যেমন হাতে হাতে মোবাইল ফোন, তেমনি সমানভাবে দায়ী যোগ্য প্রশিক্ষকের অভাব।

এক দিকে সঠিক প্রশিক্ষণ না থাকায় এবং তা ধারাবাহিকভাবে রক্ষা করতে না পারার জন্যই এই অবক্ষয় দেখা যাচ্ছে। আর তাই আদিবাসী সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখানে মাদল বাজানো, বিভিন্ন ধরণের বাঁশি বাজানো, বেহালা বাজানো প্রভৃতি ধরণের বাদ্যযন্ত্র বাজানো শেখানো হবে। আর প্রতিদিন সন্ধ্যে ৬টা থেকে এই ক্লাস শুরু হবে। প্রয়োজনবোধে তা আর বাড়ানো হবে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দেবু টুডু অবিভক্ত বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি থাকাকালীনই প্রতিটি মহকুমায় একটি করে আদিবাসী সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য উদ্যোগী হয়ে ছিলেন। একই সঙ্গে প্রতিটি মহকুমাতেই আদিবাসী সমাজের বীর নেতৃত্ব সিধু ও কানহুর মূর্তি বসানো, মিউজিয়াম গড়ার উদ্যোগ নেন তিনিই। আদিবাসী সমাজের বিভিন্ন আঞ্চলিক অস্ত্র যেমন তীর ধনুক, মাদল সহ নানা বিষয়কে এই মিউজিয়ামে ঠাঁই দেবার উদ্যোগ নেওয়া হয় তাঁরই উদ্যোগে।

পাশাপাশি নিয়ম করে প্রতিবছর আদিবাসীদের মাদল প্রদান করারও কর্মসূচি নেওয়া হয়। তিনি আরও জানিয়েছেন যে, প্রথম দফায় প্রায় জনা পনেরোকে দিয়ে এই ক্লাস শুরু হচ্ছে। এ জন্য আদিবাসী সমাজের যাঁরা দক্ষ শিল্পী তাঁদেরকেই নিয়ে আসা হচ্ছে। তাঁরাই এই প্রশিক্ষণ দেবেন বলে জানা গেছে। আদিবাসী সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে এই প্রয়াস সত্যিই অভিনব প্রয়াস। যা আগামী দিনে বিভিন্ন জায়গায় বসবাসকারী আদিবাসী সমাজকে নতুন ভাবে অনুপ্রাণিত হওয়ার বার্তা দেবে।

Advertisements

Leave a Reply