শুভ্রাংশুতেই ভরসা হকার, ব্যবসায়ী ও মহিলারা
HnExpress দেবাশিস রায় : বাবা মুকুল রায় বিজেপি-তে যোগ দেওয়ায় বীজপুরে তৃণমূল কংগ্রেসে প্রায় একঘরে হয়ে পড়েছিলেন বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়। যারা একসময় ঘুম ভাঙলেই ছুটে আসতেন তাঁর ঘটক রোডের বাড়িতে তাঁরাও ভুলে গেছিলেন এই ঠিকানাটা। আর খোদ কাঁচরাপাড়ার পুরপ্রধান তো খোলা মঞ্চেই বলেন যে বিধায়কের ফোন নম্বরও হারিয়ে গেছে। এমনকি জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পর্যন্ত বলেছিলেন শুভ্রাংশু মুকুলের বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে না এলে কোনও কর্মী-সমর্থক যেন তাঁর সঙ্গ না করেন। এমতাবস্থায় শুভ্রাংশু প্রায় স্বেচ্ছা নির্বাসনের মতো দিন কাটিয়েছেন। এরই মাঝে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন শুভ্রাংশু। তাঁকে ভর্তি করা হয় কলকাতার নার্সিংহোমে। সেখানে ছুটে যান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের সুপ্রিমো মমতা ব্যান্যার্জি স্বয়ং।
সুস্থ হওয়ার পর থেকেই শুভ্রাংশু একটু একটু করে বীজপুরের রাজনীতির আঙিনায় ফের পা রাখতে শুরু করে। পুজোর মুখোমুখি হালিশহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন করে তিনি জানান দেন তাঁর প্রাসঙ্গিকতা। তারপর মহাপঞ্চমী থেকে শুরু হয় বীজপুরের বিভিন্ন পুজোমণ্ডপ উদ্বোধন। যদিও তাঁর বাড়ির পুজোয় এবার সেভাবে শুভ্রাংশুকে সামিল হতে দেখা যায়নি। পুজো সামলেছেন বাবা তথা বিজেপি নেতা মুকুল রায়। তবে কি বাবা-ছেলের সম্পর্কে চিড় ধরেছে! প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে।
পুজো শেষেই শুভ্রাংশু মিলিত হন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি অভিষেক ব্যান্যার্জির সঙ্গে। সঙ্গী ছিলেন নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক ও হালিশহরের পুরপ্রধান অংশুমান রায়। ইতিমধ্যে বীজপুর জুড়ে শুরু হয়ে গেছিল দলের গোষ্ঠী কলহ। এমনকি কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি দুই পুরসভার বেশ কয়েকজন কাউন্সিলরও আক্রান্ত হন অপর গোষ্ঠীর হাতে। আর পুজো মিটতে না মিটতেই যে দুর্বিষহ অবস্থার সৃষ্টি হল তা আজ আর কারো অজানা নয়। দলেরই দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে প্রাণ সংশয় হয়ে পড়ে এক কিশোরীর। যদিও শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী জানা গেছে ক্রমশ সুস্থ হয়ে উঠছে সে।
বীজপুরের এই অশান্ত পরিবেশ থেকে মুক্তি পেতে তাই হকার্স ইউনিয়ন, কাঁচরাপাড়ার ব্যবসায়ীবৃন্দ ও মহিলারা শুভ্রাংশুর প্রতি আস্থা জানিয়ে ফিরে আসতে শুরু করেছেন সেই ঘটক রোডের ঠিকানায়। রবিবার দফায় দফায় তাঁরা দলবদ্ধ হয়ে শুভ্রাংশুকে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানিয়ে যান। এখন প্রশ্ন হল, তবে কি শুভ্রাংশু ফের বীজপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠতে চলেছন! সময়ই বলবে সে কথা।