“রানার রানার এ বোঝা টানার …..”
HnExpress অশোক সেনগুপ্ত : একজন ডাক বহনকারীকে নিয়ে লেখা খ্যাতিমান সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি গল্প।
‘ডাক হরকরা’ – এক নীতিবান ডাক বাহক ও তার দুশ্চরিত্র সন্তানকে নিয়ে লেখা একটি অসাধারণ গল্প। এটা হয়ত অনেকের অজানা। কিন্তু এমন কোনও বাঙালি আছেন যাঁর মন উদাস হয়ে ওঠেনা কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ’রানার’ শুনে? বা, আরও স্পষ্ট করে বললে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সেই “রানার ছুটেছে তাই ঝুম্ঝুম্ ঘন্টা বাজছে রাতে“ শুনে?
চিঠির কথায় অনেকেরই বুকে হয়তো শুরু হয়েছে প্রজাপতির নাচন। কারওবা বুকের বাম পাশে মোচড় দিয়ে উঠেছে পুরোনো কোনও ব্যথা। কারও পুরোনো কোন ক্ষতে শুরু হয়েছে নতুন রক্তক্ষরণ।
যুগ যুগ ধরে সারা পৃথিবীর মানুষ, প্রতিটি ভাষায় কত কত চিঠি যে লিখেছে, তার কোনো হিসাব নেই। নিজেকে প্রকাশ করার জন্য, না বলা কথা বলার জন্য, অনুরাগ বা বিরাগ, সুখ বা দুঃখ, প্রয়োজন বা অপ্রয়োজনে মানুষ সেই আদিকাল থেকে কত চিঠিই না লিখেছে।
দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গে চিঠির আকার, আয়তন বা চেহারা গেছে পাল্টে। পাল্টে গেছে চিঠি পাঠানোর ধরন। পায়রার পায়ে সুতোয় বাঁধা চিঠি বা লণ্ঠন হাতে টুনটুন ঘণ্টা বাজিয়ে ছুটে চলা ডাক হরকরার বয়ে নেওয়া একটি চিঠির অপেক্ষায় মানুষ দিনের পর দিন কাটিয়ে দিয়েছে। পাঠানো সেই চিঠিটি হয়তো সময়মতো কাঙ্ক্ষিত প্রিয় মানুষটির হাতে পৌঁছোয়নি। হয়তো সুসংবাদটি আর জানা হয়নি। তার আগেই কেউ হারিয়ে গেছে। হয়তো ফুরিয়ে গেছে প্রয়োজন। চিঠির জন্য কত ব্যাকুল অপেক্ষা, আকুল প্রতীক্ষায় কেটে যেত মানুষের অমূল্য সময় আর জীবন। একটা সময়ে, চিঠি মানেই ছিল অপেক্ষা।
এবার পুজোয় স্মৃতিমেদুরতার সেই ডালা উপুর করে দিল লেক ভিউ পার্ক সমিতি। জিপিও-র দেড়শ বছর উপলক্ষে সিমিতির ৩৮-তম বছরে মন্ডপ তৈরি হয়েছে পুরনো দিনের ডাকবাক্সের আদলে। হারিয়ে যাওয়া পোস্টকার্ড, ইনল্যান্ড লেটার, ডাকটিকিটে সেজেছে মন্ডপ। আছে রানার থেকে ডাকহরকরাদের মূর্তি।
ছবি : বন্ধুবর দেবাশিস সুর।