মেয়েদের নিজের কথা
বইমেলা ৮ পর্ব
HnExpress সম্রাট গুপ্ত, ৫ ফেব্রুয়ারি : তার বাবাই আছে, মায়ের গান আছে, টেলিফোন ভবনে অফিস আছে; ছোট্ট মেয়েটা উঁকিঝুঁকি দিয়ে বেড়ায়, নিজের মনে সাজায় রুশদেশের নানা উপাখ্যান, তার আছে হরেক দাদু-দিদা, হরেক নামের পিসি-মাসি, তার কোলের অভাব হয় না যেমন, তেমন গল্পও জমা হয় অগুন্তি। এক সময় এসে পড়ে ভাই আর অমনি বড় হয়ে যায় সে। সুতরাং স্কুল, কলেজ আর যা যা আমাদের করতেই হয় সেসব সে করে ফেলে এক নিমিষে। শুধু প্রেম করতে গিয়েই যা ভেবলে যায় সে। আমাদের রিনু কেবল বড় হয়। এইভাবে হঠাৎ সে একা হয় একবার, আর ভালবাসা খুঁজে বেড়ায় বিষণ্ণতার পৃথিবীতে।
কান্না পেলে আশ্রয় ছোটবেলায় শোনা তার মায়ের গলায় রবিঠাকুরের গান আর বাবাইয়ের বইয়ের পাহাড়। এবার বড় হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনো আর একটু রাজনীতি।
পড়াশুনোর বাইরের পড়া-গান শোনা-ছবি আঁকা-কবিতা-বেড়ানো সঙ্গে নিয়েই পা রাখে রিনু পেশার জগতে। ‘খাসখবর’-এ সংবাদ পাঠকে শুরু ধরলে তাঁর পেশাগত জীবন এখন সাবলম্বী অষ্টাদশী। দিন ফুরোচ্ছে টের পাওয়ার পর থেকে মনের অন্দরে আবোলতাবোল হাজারো ইচ্ছের অনর্গল ঘোরাফেরা। এক একদিন হঠাৎ মনে হয় কত কী তো বলার ছিল। সব যে বাকিই থেকে গেল। কত গল্প। কত ছেলেমানুষী। কত অকারণ ভুল বোঝাবুঝি। এদিকে দিন যে শুধুই ছুটছে! ক্লান্তিহীন, বিরামহীন। তাল মেলানোর অক্লান্ত চেষ্টার ফাঁকেই গোটা কয়েক কুটুমকাটুম জুড়ে তৈরি ‘রিনুর বই’। আমাদের রিনুর সেই ছোটবেলা থেকে বড়বেলার ছুট। সেই দিনবদলের ছোটাছুটি ধরা পড়ছে শিল্পী ভাস্কর হাজারিকার কোলাজে। আমাদের মনের ঘরের একেক জানালায় এক এক রিনু, এই যেন গভীর মনোযোগে সে চোখে কাজল পরেছে, ‘পারফেক্ট মা’ হয়ে ওঠার চেষ্টায়।
বারবার সে থাকে কাজ ছাড়া, তার পর ফের কাজের কাছেই ফিরে আসে সে, জমতে থাকে বিব্রত থাকার বিবৃতি। অলঙ্ঘ্য নিয়তির মতো তার শ্রোতারা জড়িয়ে যান তার জীবনের সঙ্গে। ভালবাসার টবগুলিতে জল দিতে দিতে একদিন সেই মেয়ের মনে হয় কতজনকে তো এখনও বলা হল না ‘ভালবাসি’। কতজনের দিকে হেলায় অবজ্ঞা ছুঁড়ে দেওয়া হল না আজও! মায়ের কোলে মাথা রাখা হয়নি কতদিন; বাবাইকে পিছন থেকে এসে সে চমকে দেয়নি, তাও তো বহু বহুদিন। ছেলেটাকে সেই সেদিনের মতো বুকের মধ্যে আগলে রাখার তেষ্টাও তাঁর এ জীবনে আর হয়তো মিটবে না। এবার এক মলাটে এল সুরম্য গদ্যে লেখা এক নিউজ পার্সেনের অন্দরমহল। টেলিভিশন – মঞ্চ – টুকটাক লেখালেখি আর একমাত্র সন্তানকে মানুষ করে তোলার চেষ্টাই যাঁর এখন তাঁর একমাত্র বেঁচে থাকার রসদ। ভাস্কর হাজারিকা চিত্রিত, রিনি বিশ্বাসের লেখা ‘রিনুর বই’ প্রকাশ করেছে লিরিকাল বুকস্।
বস্তার ও দান্তেওয়াড়া জেলা পূর্বে বস্তার নাম্নী রাজকীয় রাজ্যের অংশ ছিল। ব্রিটিশ শাসন আমলে বস্তার ভারতের একটি স্বাধীন করদ রাজ্য ছিল। এই রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল চতুর্দশ শতাব্দীতে। স্বাধীনতার সময় ভারতের সাথে যুক্ত হয় এবং বস্তার ও কঙ্কার রাজ্য মিলিয়ে তৈরি হয় মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের বস্তার জেলা। একসময়ে ৩৯,১১৪ বর্গকিমি আয়তন বিশিষ্ট এই জেলা ছিল ভারতের অন্যতম বৃহত্তম জেলা। ১৯৯৯ সালে জেলা বিভক্ত হয়ে বস্তার, দান্তেওয়াড়া এবং কঙ্কার জেলা তৈরি হয়। ২০১২ সালে পুনরায় বিভক্ত হয়ে কোন্দাগাও জেলা তৈরি হয়। এই সব জেলা মিলে বস্তার ডিভিশন গঠিত হয়। ২০০০ সালে মধ্যপ্রদেশের আরো ১৫টি জেলার সাথে ছত্তিশগড় রাজ্যের অংশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। মীরা মুখোপাধ্যায়ের কথা পাওয়া যাবে বস্তারের দিনলিপি-তে।