মাউন্ট যোগিন পর্বতাভিযানে নিউব্যারাকপুরের শুভঙ্কর
HnExpress অলোক আচার্য, নিউব্যারাকপুর : ছোটবেলা থেকেই শখ পাহাড়ে উঠব। আর্থিক সংকটের মধ্যে থেকেও হুগলির নেচার লাভার বেসিক রক ক্লাইবিং( চারদিনের ২০১৫) এবং অ্যাডভান্স মাউন্টেনিয়ারিং বেসিক অ্যাডভান্স কোর্স (এ গ্রেড) করে ২৫ দিনের মাউন্ট যোগিন ১ ও ৩ পর্বতাভিযান শুরু করল নিউব্যারাকপুরের শুভঙ্কর দেবনাথ (৩০)। বৃহস্পতিবার রাতে ৮টার দুন এক্সপ্রেসে শুভঙ্কর সহ ১০ জন সামিল হল এই মাউন্ট যোগিন ১ (উচ্চতা ৬৪৫৬ মি)এবং ৩ (উচ্চতা ৬১১৬ মি)পর্বতাভিযানে ।প্রথমে হরিদ্বার। সেখান থেকে উত্তর কাশী। সেখান থেকে কেদাররক। সেখান থেকে কেদারতাল বেসক্যাম্পে উঠবে বলে জানাল শুভঙ্কর।নিউব্যারাকপুর পৌরসভার ১৫ নং ওয়ার্ডের হরেন্দ্র মুখার্জি রোডের বাসিন্দা শুভঙ্কর আমাদের সংবাদ মাধ্যম HnExpress এর প্রতিনিধিকে একান্ত সাক্ষ্যাৎকারে জানালো, শিয়ালদহের সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে ২০১৫ সালে বি.কম এ স্নাতক হয়ে উল্টোডাঙ্গায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি সূত্রে ট্রেনে যাতায়াত শুরু করি। সেই সময়ে ট্রেনে যাতায়াতের সুবাদে মোহনলাল চক্রবর্তী নামক এক ভদ্রলোকের সাথে আলাপ হয়। তাকে পাহাড়ে ট্রেকিং করার কথা বললে, তিনি আলাপচারিতায় হুগলির ব্যান্ডেল নেচার লাভার ক্লাবের পুরুলিয়ার গাজাবুরু থেকে রক ক্লাইবিং বেসিক কোর্স ও পুরুলিয়ার বেরা থেকে রক ক্লাইবিং কোর্স করার সুযোগ করে দেন। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় রহড়া প্যারাগন ক্লাবের হয়ে জেলা স্তরে ফুটবল খেলি। খেলার বুট কেনার পয়সা ছিল না। স্থানীয় ষষ্ঠী দুলে এবং দীপঙ্কর দাস খেলার বুট দিয়েছিল। কলকাতা মাঠে বি এন রায় ফুটবল টুর্নামেন্টে তৃতীয় ডিভিশনে খেলি। ছিল আর্থিক সংকট। পড়াশোনা এবং খেলাধুলা একসাথে করতে পারিনি। গতবছর ২৪০০ মিটার দৌড়ে ইয়ুথ সার্ভিস প: ব: থেকে স্কলারশিপ করি। ২০১৭ সালে হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট (দার্জিলিং) থেকে ২৮ দিনের অ্যাডভান্স মাউন্টেনিয়ারিং এর কোর্স করি। (এ গ্রেড) নিজেকে প্রস্তুত করি। ১০ জন বন্ধু মিলে এই মাউন্ট যোগিন পর্বতাভিযানে যাবো ঠিক করি। (মধ্যমগ্রাম) সুমিত দে, (দমদম) দীপন দাস, (কেষ্টপুর) প্রণব সরকার, (ব্যান্ডেল) বিনোদ রাউত, প্রজ্জ্বল ব্যানার্জি(কসবা), সজল বর্মন (বারুইপুর), গণেশ সরকার এবং সিদ্ধার্থশঙ্কর দাস। শুভঙ্করের এই প্রয়াসকে সফল করতে পাশে এসে দাঁড়াল নিউব্যারাকপুরের সমাজ সেবক সুখেন মজুমদার।সুখেনবাবু তার ট্রেকিং এর সাফল্য কামনা করে তার হাতে ২০,০০০ টাকা তুলে দেন। শুভঙ্করের মা পূর্ণিমা দেবনাথ বলেন, ছোটবেলা থেকেই ছেলের আমার প্রবল শখ পাহাড়ে চড়ার। পাহাড়ে ওঠার পথে বরফ জমলে কী করণীয়, তার প্রশিক্ষণ নিয়েছে। ভয় তো হয়, তবু বলি, সাহস নিয়ে এগিয়ে চলুক। মন তো কাঁদে বাবা মাকে ছেড়ে ২৮ দিন বাড়ির বাইরে থাকতে। আশীর্বাদ ও শুভেচ্ছা রইল চলার পথে।