মহিলাদের প্রথা বহির্ভূত কাজের যোগদানে মত বিনিময় সভা
HnExpress নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা : নারী উন্নয়ন ও নারী সুরক্ষামূলক প্রকল্প এবং কর্মসূচি সমূহের মধ্যে সমন্বয় ও একটি সমন্বিত গাইড লাইন প্রণয়নের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার একাডেমী অফ ফাইন আর্টস সভাগৃহে নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ও গার্লস কাউন্ট এবং কর্মদক্ষতার সহযোগিতায় এক মত বিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে সমাজকর্মী দোলন গাঙ্গুলী বললেন, নারী মুক্তির প্রধান বাধা যদি হয় পুরুষ, তাহলে নারী মুক্তির পথ প্রদর্শকও পুরুষ। এদিনের সভায় অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সমাজকর্মী অমিতা সেন, এ.কে. ঘোষ, বৈতালী গাঙ্গুলী, শিখা সান্যাল প্রমুখ।
নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের সম্পাদিকা রহিমা খাতুন এদিন স্বাগত ভাষণে বললেন, প্রথাগত শিক্ষার বাইরে গিয়ে মেয়েরা কিভাবে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি নিচ্ছে সেটাই হচ্ছে আজকের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু। নারী ও শিশু কল্যান কেন্দ্র এক বছর ধরে মহিলাদের ইলেকট্রিশিয়ান, মোবাইল রিপায়ারিং প্রভৃতি দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ নেন, তার খতিয়ান তুলে ধরেন সাদিয়া আফরিন। মূলতঃ শাঁকরাইল, উলুবেড়িয়া, পাঁচলা, হাওড়া আরবান অঞ্চলের জন্য অপ্রথাগত জীবিকা দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিনের সভায় সেই সমস্ত অঞ্চলের ছাত্রীরা অংশ নেয়।তাদের উদ্দেশ্যে উপস্থিত অতিথি দোলন গাঙ্গুলী বললেন মহিলাদের প্রথা বহির্ভুত জীবিকার মধ্যে নিয়ে আসার সময় হয়ে এসেছে। ‘পিঙ্ক ক্যাব’ ড্রাইভার শাঙ্করীর উদাহরণ দিয়ে বললেন, শুধুমাত্র মহিলা মানে বড়ি, আচার, পাঁপড় তৈরিতেই সীমাবদ্ধ না থেকে, পেশাদার ড্রাইভার হতে হবে। মহিলা মানেই বিউটিশিয়ান কোর্স শেখা নয়, এতে সুযোগ সীমিত, রোজগার কম।অন্যান্য কাজে যেমন— রাজমিস্ত্রি, ই-রিকশা চালক হওয়ার সুযোগ দিতে হবে মেয়েদেরকেও। যাতে করে মহিলারা ট্যাক্স প্রদান করে দেশের অর্থনীতিকে মজবুত করতে পারে।
প্রথা বহির্ভুত কাজটা প্রথাগত করে ইতিহাস রচনা করতে হবে এবং ছেলেদেরও প্রথা বহির্ভুত কাজে এগিয়ে আসতে হবে স্বদলবলে। তিনি আরও বললেন, নারীরা পরিবারের মধ্যে কর্মস্থলে পরিবহন, যাতায়াত ব্যবস্থায় বিভিন্ন ভাবে নানা রকম হয়রানি ও যৌন হয়রানির শিকারও হচ্ছে। নারী দিবস উদযাপন করে এসব অবস্থার উন্নতি করা না গেলেও প্রতিষ্ঠানিক পর্যায়ে নারী নির্যাতন অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। শিখা সান্যাল বলেন, ভারতে আজ সর্বত্র নারীর জয় জয়কার শুরু হয়েছে। শিক্ষা দীক্ষায়, সাহসিকতায়, খেলা ধুলায়, সবরকম সৃষ্টিশীল কাজেই ভারতের নারীরা আজ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, শিক্ষা, সশস্ত্র বাহিনী, আইন শৃঙ্খলা, বাহিনীতে উচ্চপদে আসীন।
নারীর ক্ষমতায়নে সর্বাগ্রে পুরুষ সমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে উল্লেখ করে তিনি বললেন, আমরা সকলেই যে যার অবস্থান থেকে নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কাজ করি। নারীদের অর্থনেতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক মুক্তির পথ সুগম হলেই তারা তাদের স্বার্থকতা খুঁজে পাবে এবং মেয়েরা প্রথা বহির্ভুত কাজে এগিয়ে যেতে পারবে। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম তসমিনা আহমেদ।