মর্গে দেহ রাখার আর জায়গা নেই, সৎকারের জন্য আর্জি জানিয়ে চিঠি দিলেন এম আর বাঙ্গুরের সুপার

HnExpress ৩০শে এপ্রিল, জয় গুহ, কলকাতা ঃ ১৫ জনের মৃত্যুর যে তালিকা রয়েছে, তার মধ্যে ৬ জনের নামের পাশে লেখা আছে কোভিড-১৯ পজেটিভ অর্থাৎ তারা নোভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। মর্গে মৃতদেহ এর স্তূপাকৃতি, ফলে আর দেহ রাখার জায়গা নেই। তাই সৎকারের আর্জি জানিয়ে যাদবপুর থানাকে চিঠি দিলেন এম আর বাঙ্গুর হাসপাতাল সুপার। সেই চিঠিরই প্রতিলিপি ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যদিও প্রশাসন নিশ্চুপ!
এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালের মর্গে উপচে গিয়েছে লাশের স্তূপ। অবিলম্বে সেগুলির শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করা হোক। না হলে অন্য দেহ রাখা এবং অন্যান্য কাজের সমস্যা বাড়ছে বলে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালের তরফ থেকে এমনই চিঠি গিয়েছে যাদবপুর থানার কাছে। চিঠিটি সঠিক কি না, সেই নিয়ে অবশ্য এখনো প্রশাসনের তরফ থেকে কোনও মন্তব্য জানা যায়নি। তবে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতালের সুপার শিশির নস্করের স্বাক্ষর করা এমনই একটি চিঠি ঘুরে বেড়াচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা কল্পনা। ঘটনার সূত্রপাত ২০শে এপ্রিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়ানো ওই চিঠির প্রতিলিপিতেই দেখা যাচ্ছে, মৃত্যুর তালিকা রয়েছে ১৫ জনের নাম, ঠিকানা। রয়েছে মৃত্যুর বিবরণ, তারিখ, এমনকি সময়েও। আর এই ১৫ জনের মৃত্যুর যে তালিকা রয়েছে, তারমধ্যে ৬ জনের নামের পাশেই লেখা আছে কোভিড-১৯ পজেটিভ অর্থাৎ তারা মৃত্যুর পূর্বে নোভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন।
ওই তালিকায় উল্লেখ রয়েছে, একটি দেহেরও নাকি দাবিদার নেই। যদিও তিনজনের ঠিকানা থাকলেও তাঁদের পরিজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। আরও লেখা রয়েছে, এই ৫ জনকে মৃত্যুর পরেই হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। চিকিৎসার পরিভাষায় যার নাম, ‘ব্রট ডেড’। চিঠিতে এম আর বাঙ্গুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে একটি আবেদনও করা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে কর্তৃপক্ষ বলছেন যে, দ্রুত এই পরিবারগুলোর সঙ্গে পুলিস প্রশাসন এসে যোগাযোগ করে এই দেহগুলিদ শেষকৃত্যের ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।
না হলে মরদেহ রাখতে চরম অসুবিধা হচ্ছে। এম আর বাঙ্গুর হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই চিঠিতে যে ৬ জনের নামের পাশে কোভিড-১৯ পজেটিভ লেখা রয়েছে, সেই ব্যক্তিরা অন্যান্য বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। মৃত্যুর পরে জানা যায় যে তাঁরা নোভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। এম আর বাঙ্গুর হাসপাতাল সূত্রে খবর, ২০ এপ্রিল এই চিঠি পাঠানোর পর বেশ কয়েকটি দেহের সৎকার ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে।
অজ্ঞাত পরিচয় বা বেওয়ারিশ বা পরিবার খোঁজ না নিলে, আইন অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট সময় পর পুলিস প্রশাসনই সেই দেহের সৎকার করে ফেলে। এক্ষেত্রেও তা অনুসরণ করা হচ্ছে। এখনকার নিয়ম অনুযায়ী নোভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে সংক্রমিত ব্যক্তির মৃত্যু ঘটলে তাঁর দেহ সৎকারের দায়িত্ব নিচ্ছে প্রশাসন। এখানেও তাই পালন করা হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে পুলিস, প্রশাসন বা এম আর বাঙ্গুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। এই চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, হাসপাতালের সহকারী সুপার, হাসপাতালের পুলিস ফাঁড়ির আধিকারিক সহ আরও বেশ কয়েকজনকে। তবে সমগ্র বিষয়টি নিয়েই প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য ভবন নিশ্চুপ। তাদের কোনও মন্তব্য মেলেনি এযাবৎ।
তথ্যসূত্র ও চিত্র ঃ সোস্যাল মিডিয়া।