মমতা – মায়াবতী – অখিলেশরা শেষ পর্য্যন্ত রাহুলের সাথে ঘর বাধার স্বপ্ন কি পুরন হবে?
HnExpress ওয়েবডেক্স নিউজ : বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের এগজিট পোলের পূর্বাভাস পেয়ে বিজেপি তথা এনডিএ শরিক দলগুলিকে নিয়ে বিজয়োৎসবে মাতল নেতৃত্বরা। এগজিট পোলের সংবাদ চাউর হতেই অশোক হোটেলে বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি এনডিএ’র শরিক দলগুলিকে নিয়ে সম্প্রতি অমিত শাহ নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার, অকালি নেতা প্রকাশ সিং বাদল ও সুখবীর বাদল, শিবসেনা নেতা উদ্ধব ঠাকরে, দলিত নেতা রামদাস আঠাবলে, বিহারের নেতা রামবিলাস সহ পুত্র চিরাগ পাসোয়ান এবং উত্তরপ্রদেশের শরিক অনুপ্রিয়া প্যাটেল৷ প্রাক-বিজয়োৎসবের চেহারা নিয়েছিল এই নৈশভোজকে ঘিরে।
একই ফুলের মালার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সহ শরিক দলের নেতাদের দেখা গিয়েছে। বিশাল ফুলের মালার মধ্যে শরিক দলের নেতাদেরও ডেকে নেওয়ার মধ্য দিয়ে জোটের বার্তা দিলেন মোদি৷ নরেন্দ্র মোদীই দ্বিতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন এমন বার্তাই ফুটে উঠেল এদিন। এনডিএ এর বিস্বস্ত সূত্রের খবর, রবিবার দ্বিতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিতে পারেন মোদী৷ এবারের মন্ত্রীসভায় অমিত শাহ ঠাঁই পাবে বলে জানা গিয়েছে। এবার অমিত শাহকে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকও দেওয়া হতে পারে। অমিত মন্ত্রী হলে সেক্ষেত্রে নতুন বিজেপি সভাপতি কে হবেন তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু। অবশ্য পুরোটাই নির্ভর করছে ২৩শে কী ফলাফল কি বের হয় তার ওপরে।
এদিন সকালে নরেন্দ্র মোদী দলের সদর দপ্তরে মন্ত্রিপরিষদের সব সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন৷ অমিত শাহও সেখানে উপস্থিত ছিলেন৷ মোদি জানিয়ে দেন, ২০১৯ শের নির্বাচনে এনডিএ তিনশোর বেশি আসন পাচ্ছে। বৈঠকের শেষে নরেন্দ্র মোদী একটি টুইট করে বললেন, ‘আমাদের জোট হচ্ছে দেশের বৈচিত্র। আর অ্যাজেন্ডা হল উন্নয়ন। আঞ্চলিক উচ্চাশাকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় উন্নয়ন এনডিএ’ ই তা করতে পারে।
অপরদিকে বিজেপি বিরোধীদের রয়েছে ইভিএম নিয়ে আশঙ্কা, বিজেপি নেতারা ইভিএম নিয়ে বিরোধীদের আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে সমালোচনা শুরু করে দিয়েছেন৷ বিরোধীরা ভোট দাতাদের অপমান করছে এমন মন্তব্য নিয়ে মুখ খুলেছেন শিবরাজ চৌহান। বিজেপি সদরদপ্তরে মন্ত্রী পরিষদের সদস্যদের নিয়ে যে বৈঠক হয়েছে, সেখানেও শরিক মন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রী মোদীর তুমুল প্রশংসা করেন। তাঁরা বলেন প্রধানমন্ত্রীর নীতির জন্যই এনডিএ আবার ক্ষমতায় ফিরছে৷ মোদির নেতৃত্বে সরকার গরিব ও কৃষক, শ্রমিকদের জন্য একের পর এক প্রকল্প নিয়ে এসেছেন, তাঁদের ভরসা দিয়েছেন, তার জন্য আবার ঐতিহাসিক জয়ের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে এনডিএ৷ রাতে অশোক হোটেলের অনুষ্ঠানে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেন।
উল্লেখ্য এগজিট পোলের ফলের পর এনডিএ নেতাদের আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে তাই এভাবে নিজেদের আত্মবিশ্বাসী চেহারাটা দেখাচ্ছেন৷
অপরদিকে ভোটের ফলাফলের আগেই বাড়ল বিরোধী জোটের অস্বস্তি৷ নির্বাচনী ফল ঘোষনা না হওয়া পর্যন্ত জোট নিয়ে কোনও মন্তব্য বলতে নারাজ জেডিএস৷ এদিন চন্দ্রবাবুর সঙ্গে বৈঠক শেষে জানিয়ে দিলেন জেডিএস প্রধান এইচ ডি দেবগৌড়া৷ মঙ্গলবার কনস্টিটিউশন হলে বিরোধী জোটের বৈঠকে জাহির হয়নি কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী৷ জেডিএস নেতার অনুপস্থিতি কপালে ভাঁজ বাড়িয়েছে বিরোধী ২২ দলের নেতাদের৷ বুথফেরৎ সমীক্ষা দেখেই এই পদক্ষেপ কুমারস্বামীর তানিয়ে বিরোধীরা মুখে কুলুপ এটেছেন। কুমারস্বামী নাকি ক্রমশ বিজেপির দিকে ঝুঁকছেন বলেও সুত্রের খবর।
কুমার স্বামীরমান ভাঙাতে তড়িঘড়ি এদিন রাতেই বেঙ্গালুরু যান টিডিপি নেতা চন্দ্রবাবু৷ কিন্তু তিনি বিরোধী শিবিরের ছন্নছাড়া রূপটাই তুলে ধরায় আশঙ্কা বাড়ছে, জেডিএসের গেরুয়া শিবিরে নাম লেখানোর৷ মঙ্গলবার দিল্লিতে ২১টি বিরোধী দলের প্রতিনিধিরা বৈঠক করছেন, তাতে হাজির ছিলনা কুমারস্বামী। কর্ণাটকে বিজেপির জয়জয়কারের সম্ভাবনার কথা প্রকাশ্যে আসার পরই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কুমারস্বামী। কর্ণাটকে সরকার গড়ার সময় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কুমারস্বামীর শপথ নেওয়ার দিনেই মহাজোটের প্রাথমিক একটা ছবি দেখেছিল দেশবাসী। মঞ্চে সেদিন সনিয়া, মমতা, রাহুল, অখিলেশ, ইয়েচুরি, মায়াবতী- কে নেই! নির্বাচনের বুথ ফেরত সমীক্ষা সমানে আসতেই বেঁকে বসছেন সেই কুমারস্বামী৷ এছাড়া, রাজ্যের সরকার চালাতে প্রতি পদে কংগ্রেসের বাধার সম্মুখীন হওয়ায় তিনি নাকি কংগ্রেসের উপরে ক্ষুব্ধ।
এদিকে বুথ ফেরৎ সমীক্ষাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেছেন মমতা থেকে চন্দ্রবাবু, শরদ পাওয়ার থেকে মায়াবতী-অখিলেশ সহ বিরোধী নেতৃত্বরা৷ এই অবস্থায় জোটবদ্ধভাবে থাকার কথাও জানায় বিজেপি বিরোধী দলগুলো৷ যদিও জাতীয় স্তরে বিরোধী জোটে মোহভঙ্গের ইঙ্গিত দিয়ে রাখল জেডিএস৷ “রাজনীতি সম্ভাবনার শিল্প” বলেই দেবগৌড়া-কুমারস্বামীদের ভবিষ্যত পদক্ষেপ হবে ফলাফল দেখে৷ মধ্যবর্তী সময় জল মাপার কৌশল দক্ষিনের এই দলের।