বিশ্বের সবচেয়ে ধীর গতির প্রানী টি হল স্লথ, আসুন তার সম্পর্কে জেনে নিই কিছু তথ্য
HnExpress ১লা মার্চ, ওয়েবডেক্স নিউজ, প্রাণী জগৎ ঃ কোনো এক গল্পে কথিত আছে, স্লথ কখনও সময়মতো স্কুলে পৌঁছাতে পারতো না। পৌঁছাবেই বা কি করে! যার নামটিই হয়ে গেছে ধীরগতির সমার্থক, সে কীভাবে সময় মেনে কাজ করবে! বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির প্রাণীর খেতাবও তো তাই স্লথ এরই ঝুলিতে! আসুন আজ জেনে নিই সেই প্রাণীটির সম্পর্কে কিছু তথ্য।
স্লথ মূলত গেছো প্রাণী। অতি ধীরগতিতে গাছে চলাফেরা করাটাই তাদের পছন্দ। তবে সবচেয়ে পছন্দের কাজ হলো কিন্তু ঘুমানো। দিনের প্রায় ২০ ঘণ্টাই ঘুমিয়ে কাটায় এরা! এ বিবেচনায় তাকে বিশ্বের সবচেয়ে অলস প্রাণীর খেতাবও বোধহয় দেওয়া যেতেই পারে! ২০ ঘণ্টা ঘুমের পর জাগলেও নড়তে চায় না সেই জায়গা ছেড়ে। এরা এতোটাই কুঁড়ে যে, এক জায়গায় বসে থাকতে থাকতে তাদের পশমে স্যাঁওলাও জমে যায়।
স্লথ মূলত কেন্দ্রীয় ও দক্ষিণ আমেরিকার ক্রান্তীয় বনাঞ্চলের প্রাণী বিশেষ। লম্বা বাহু ও লোমের কারণে তাদের দেখতে অনেকটা বানরের মতোই লাগে। তবে এরা আরমাডিলো ও অ্যান্টইটার প্রজাতির প্রাণী। এরা দুই থেকে আড়াই ফুট লম্বা হতে পারে। এদের ওজন হয় সাধারণত সাড়ে তিন থেকে প্রায় আট কেজি।
স্লথের দুটি প্রধান প্রজাতি আছে।
দু’টির মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে- একটির মাথা অন্যটির চেয়ে বেশি গোলাকার, দুঃখ ভারাক্রান্ত ছোট চোখ ও লেজ। দুই প্রজাতির মধ্যে একটির তিনটি বাঁকা হাত-পাও আছে, অন্যটির দু’টি। তবে কিছু বিজ্ঞানীরা মনে করেন, স্লথ তাদের চলাফেরায় এ ধীরগতি এনেছে শিকারি পাখি ঈগল কিংবা বিড়ালের চোখ এড়ানোর জন্যই। কারণ, এরা চলমান প্রাণীর দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রেখে শিকার ধরতে পছন্দ করে।
এদের গায়ের লোমে জন্মানো স্যাঁতলা গাছের পাতার সঙ্গে মিশে থাকতে সাহায্য করে। শিকারির হাত থেকেও এটা তাদের বাঁচার একটা প্রধান কারণও বটে। এরা সচরাচর গাছ থেকে নিচে নামে না। হয়তো সপ্তাহে একবার গোসল অথবা কোনো প্রাকৃতিক কর্ম সারতে এদের নিচে নামতে দেখা যায়। স্লথের নখগুলো কিন্তু বেশ বড় বড় হয়। আর এরা গাছে উপরেই বাচ্চার জন্ম দেয়।
একবারে মাত্র একটি বাচ্চার জন্মই দিতে পারে এরা। মায়ের পেটের সঙ্গে ঝুলে ঝুলে বাচ্চা গুলো প্রায় বছরখানেক মায়ের কাছেই থাকে। স্লথ মূলত পাতা খেয়েই জীবন নির্ধারণ করে। মুখের উপরে ১০টি এবং নিচের পাটিতে ৮টি দাঁত থাকে এদের। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, চলার ধীরগতির মতো এদের চারস্তর বিশিষ্ট পাকস্থলী খাবার হজমেও দেরি করে। এমনই এক অদ্ভুত প্রাণী হলো এই স্লথ।
তথ্যসূত্র ও চিত্র ঃ সংগৃহীত।