বিশেষ ধারাবাহিক : “বিপদ পদে পদে” ১১ তম পর্ব
HnExpress সম্রাট গুপ্ত, কলকাতা : এ শহরের গর্ব আর ঐতিহ্য নিউ মার্কেটে পায়ে পায়ে কী রকম বিপদ, অনেকেই তা জানেন। ৮০–র দশকে ওই মার্কেটে আগুনে কয়েকশো দোকান সমেত ছাই হয়ে যায়। সে সময় টানা ৩ দিন লেগেছিল আগুন নেভাতে। জ্যোতি বসু সরকার ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদের জন্য অস্থায়ী ছাউনি করে দেয় জাদুঘর ও গুরু নানক সরণির (তখন মেয়ো রোড) অন্তর্বর্তী তেকোনা ময়দান–খণ্ডে যা মনোহর দাস তড়াগ সংলগ্ন। প্রায় বছর খানেক বাদে আগুনে পোড়া ওল্ড নিউ মার্কেট আবার নিউ মার্কেট হতে ওই দোকানিরা ফিরে যান তাঁদের অস্থায়ী ছাউনি ছেড়ে স্থায়ী আবাসে।
২০১৫-র ১৮ মে নিউ মার্কেটের মাছ বাজারে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। দুপুর দেড়টার দিকে মধ্য কলকাতার দেড়শ বছরের পুরনো এই বাজারে আগুনের সূত্রপাত হয়। ঘটনাস্থলে যায় দমকলের ১৭টি ইঞ্জিন। আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় বেশ কয়েকটি দোকান।
এর পর ২০১৫-র ২৮ জুলাই রাতে দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পর নিউ মার্কেটের চত্বরে একটি পোশাকের দোকানে আগুন লাগে। সেখান থেকে বাজারের অন্যত্র দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ছুটে আসেন বাজারের লোকজন। পৌছে যায় দমকল বাহিনীও। বন্ধ দোকানের মধ্যে আগুন লাগায় সমস্যায় পড়তে হয় দমকল কর্মীদের। একের পর এক দোকানোর শাটার ভেঙে চলে আগুন নেভানোর কাজ। বেশ কিছু দোকানদার বিকল্প পথে দোকানে ঢুকতে সাহায্য করেন দমকলকর্মীদের। ২০১৭-র ৯ ই নভেম্বর কলকাতার নিউ মার্কেটের একটি রেস্তোরাঁয় আগুন লাগে।
আবার আগুন লাগলে নিমেষে ভস্মীভূত হয়ে যাবে বাজারট। অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থার বালাই নেই। যা আছে খাতায় কলমে। অগ্নিমহড়া হয় না। অগ্নিবিধিকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে নিয়োগ হয়নি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অগ্নি-অফিসার। ভিতরে যাতায়তের অপরিসর পথগুলির কোথাও মেঝেতে হকার বসে। কোথাও লাগোয়া দোকানের ডালা বেড়িয়ে। তাতে ঝুলছে হরেক রকম জামাকাপড়। আগুন লাগলে পালানোর পথ আটকে যাবে এ সবে। ভূগর্ভের সিমপার্ক মার্কেটে ঝকঝকে টাইলস বসানো মেঝে। কিন্তু যাতায়তের সরু পথের দু‘ধারে সারি সারি ম্যানিকুইন। দোকানগুলি তৈরি দাহ্য নানা পদার্থ দিয়ে। আগুন লাগলে দপ করে জ্বলে উঠবে দোকানের সামগ্রিগুলি। আগুন লাগছে না বলে রক্ষা। লাগলে কী হবে, ভগবান জানেন।
(চলবে)