বিশেষ ধারাবাহিক প্রতিবেদন ঃ “বিপদ পায়ে পায়ে” -৬ষ্ঠ পর্ব
HnExpress সম্রাট গুপ্ব, কলকাতা ঃ মহম্মদ আলম, সুজয়প্রসাদ প্রিয়দর্শী, লক্ষ্ণণ সিং— এঁদের চোখেমুখের আতঙ্ক এখনও কাটেনি। অগ্নিকান্ডের পর পুরো একটা দিন পার হল। এখনও পরিস্থিতি প্রতিকূল।
অগ্নিকান্ডের জন্য কার দোষ, কেন সতর্কতা নেওয়া হলনা— এ সব নিয়ে হরেক চর্চা শুরু হয়েছে। গত তিন দশকে এ শহরের প্রতিটি বড় দুর্ঘটনা খুব কাছ থেকে দেখার, বোঝার সুযোগ হয়েছে এই প্রতিবেদকের। তার ভিত্তিতেই বলছি সমস্যা থেকে যাবে প্রায় একই মাত্রায়। দমকল, পুলিশ, প্রশাসন, স্থানীয় ব্যবসায়ী— যে যাঁর মত যুক্তি সাজাবেন, একে অপরের ওপর দোষারোপ করবেন। নিট ফল— বিপদ পায়ে পায়েই থেকে যাবে।
লক্ষনবাবুর ছিল ব্যাগের দোকান। পুজোর সময় বাহারি সাজগোজের সঙ্গে মানানসই ব্যাগের চাহিদা তো ক্রমবর্ধমান। এই দোকান থেকেই দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বর্ধমান, মুর্শিদাবাদের বহু মানুষ ব্যাগ কিনে নিয়ে যান। জেলার মফঃস্বল শহরগুলির বহু ক্রেতা পাইকারি কেনাকাটা এখানেই করেন। ঘটনার অভিঘাতে দৃশ্যতই ভেঙে পড়া লক্ষ্ণণ বলেন, মহাজনকে এক টাকাও দেওয়া হয়নি। কাল-পরশু ১০-১২টি ‘পার্টি’ আসার কথা ছিল। তাদের জন্যই অনেক সামগ্রী তুলতে হয়েছিল। ওই ‘পার্টি’ টাকা দিলে বকেয়া মেটাতাম। এখন কী করব, ভেবে পাচ্ছি না। সাফ জানালেন, তাঁর দোকানের কোনও বিমা নেই। আর তা থাকলেও পাওয়া-না পাওয়া চূড়ান্ত হতে।
একটু দূরে চিন্তিত মুখে বসে এম ভি জাভেদ। বাড়ি হাঁটাপথে, কলুটোলায়। অগ্নিদগ্ধ বাড়ির সামনে বেলুন বা উপহার সামগ্রি বিক্রি করেন। জানালেন, আগুন লাগার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে খবর পেয়ে দৌড়ে এসেছেন। পাশেই ছিলেন মহম্মদ মিরাজ। তাঁর দোকান ঠিক পাশের বাড়িটায়। প্লাস্টিকের বালতি-গামলার ডিলার। বললেন, “ক’টা দিন বুঝি ব্যবসা লাটে উঠল!“
সঙ্গের ছবিতে দুই শঙ্কিত ব্যবসায়ী এম ভি জাভেদ আর মহম্মদ মিরাজ। বিপদের মাঝেও একজনের মনে ক্ষণিকের আনন্দ।
(চলবে)