প্রাণমন লয়ে চিরতরে বিদায় নিলেন প্রথিতযশা রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী নীলাঞ্জনা সেন
HnExpress দেব চক্রবর্তী, কলকাতা : ” মৃত্যু আমার শিয়রে দাঁড়ায়ে মিটিমিটি চোখে চায়, তোমার অসীমে প্রাণমন লয়ে পরপারে শুধু ধায় ॥ ”
একজন শিল্পী যে কত পরিশীলিত হতে পারেন তাঁকে না চিনলে বোঝা যেতো না। অসম্ভব সুরজ্ঞানের অধিকারিণী হয়েও আত্মপ্রচারবিমুখ ও অন্তর্মুখী হয়ে অতি সাধারণ জীবনযাপনে অভ্যস্ত ছিলেন। ছিলেন প্রাণময়। হয়তো এটাই তাঁর শিক্ষা-সংস্কৃতি। প্রখ্যাত বাচিকশিল্পী প্রয়াত অমিতাভ বাগচী ও অধ্যাপক ড. অপূর্ব বিশ্বাসের সাথে তাঁর ছিলো কৈশোরের বন্ধুত্ব। তাই অমিতাভবাবুর প্রয়াণের পর তাঁর উদভ্রান্ততা ছিলো লক্ষ্যনীয়।
রবিবার আকস্মিকভাবে সুরলোকে পাড়ি দিলেন শান্তিনিকেতনের সকলের আদরের ‘চুয়া দি’ প্রখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী নীলাঞ্জনা সেন। শিক্ষাবিদ অমিয় সেন ও কিংবদন্তী রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী নীলিমা সেনের সুযোগ্যা কন্যা নীলাঞ্জনার জন্ম কলকাতায় হলেও জীবনের বেশিরভাগ সময়ই তিনি কাটাতেন শান্তিনিকেতনে। কর্মসূত্রে ইতিহাস এর এই মেধাবী ছাত্রী ছিলেন একজন শান্তিনিকেতন পাঠভবন এর ইতিহাসের অধ্যাপিকা। আশ্রমকন্যা হিসেবে নৃত্যে ও সঙ্গীতে তিনি ছিলেন সব্যসাচী। তাঁর বিস্ময়কর কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন তাঁকে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে দেয়। এর জন্য তিনি পেয়েছেন বহুবিধ সম্মানও। বেতার ও দূরদর্শনের ছিলেন নিয়মিত শিল্পী। বাংলাদেশ ও রোমে ইংরেজী রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে পেয়ে যান আন্তর্জাতিকতা।
হঠাৎ মস্তিস্কে রক্তক্ষরণে গত শনিবার তাঁকে ভর্তি করা হয় পিয়ারসন মেমোরিয়াল হাসপাতালে। এই ঘটনায় কার্যত স্তব্ধ শান্তিনিকেতনের আশ্রমিকরা এবং দেশের সর্বাংশের শিল্পীজগৎ।
রবিবার তাঁর অকালপ্রয়াণের খবর শোনামাত্র বহু বহু আশ্রমিক ছাত্র ছাত্রী ও গুণমুগ্ধ শিল্পীমহলদলে দলে এসে জড়ো হন তাঁর শান্তিনিকেতনের পূর্বপল্লীর বাড়িতে। এভাবেই সুরলোকে যাত্রা করলেন বিদগ্ধ সুরেলা এই শিল্পী। আর শোনা যাবে না তাঁর সোনাঝরা কণ্ঠের হৃদয়স্পর্শী সেই গান ‘চোখের জলে লাগলো জোয়ার, ও চাঁদ…..দুখের পারাবারে…..’ ॥
বড় হৃদয়বিদারক সংবাদ…..মেনে নেওয়া যাচ্ছে না ।